মির্জা ফখরুল : খালেদার কিছু হলে দায় নিতে হবে সরকারকেই

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ইসির ‘এসিড টেস্ট’

পরের সংবাদ

বিপদ ভঞ্জন সেন কর্মকারের প্রদর্শনী : শিল্পকলার গ্যালারিতে বঙ্গবন্ধু ও বিশ্বনেতারা

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারিতে ঢুকেই দেখা গেল নানা ভঙ্গিমায় বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন প্রতিকৃতি। কোনো ফ্রেমে বাবামায়ের সঙ্গে উচ্ছ¡সিত, কোনোটাতে নিজের অফিস কক্ষে হাস্যোজ্জ্বল, কোনোটাতে নিজেই ক্যামেরাম্যানের ভূমিকায়, কোনোটাতে পায়রা উড়িয়ে দেয়ার হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে, কোনোটাতে লালসবুজের পতাকা পাশে মহানায়ক, কোনোটাতে চিন্তিত ভঙ্গিমায়, জনতার উদ্দেশ্যে তেজোদীপ্ত বঙ্গবন্ধু, কোনোটাতে কন্যা শেখ হাসিনার কপালঘেঁষা সেই বিখ্যাত ভঙ্গি, শেখ রেহানা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ বঙ্গবন্ধুর অর্ধশতাধিক নানা ভঙ্গিমার প্রতিকৃতি। এসবের পাশাপাশি রয়েছে রবীন্দ্রনাথ থেকে নজরুল, মাস্টারদা থেকে মাও সেতুং, লেলিন থেকে ফিদেল ক্যাস্ত্রো, মহাত্মা গান্ধী থেকে ইন্দিরা গান্ধী, জাতীয় চার নেতা থেকে বিজ্ঞানী জে সি বোস, জীবনানন্দ থেকে শামসুর রাহমান, জয়নুল থেকে শাহাবুদ্দিন, হেমন্ত থেকে জর্জ হ্যারিসনসহ এমন গুরুত্বপূর্ণ ছবির পাশাপাশি একাত্তরের হত্যাযজ্ঞ, বিজয়োল্লাস, নিয়াজীর আত্মসমর্পণ। গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন এমন অনেকেরও প্রতিকৃতিসহ ১৬৮টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার তিন নম্বর গ্যালারিতে শিল্পী বিপদ ভঞ্জন সেন কর্মকারের ‘স্বাধীনতা’ শীর্ষক পাচদিনব্যাপী ৭ম একক চিত্র প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কবি জাফর ওয়াজেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাববুবা করিম। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পী বিপদ ভঞ্জন সেন কর্মকার বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্মেছিলেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন দেশে বাস করছি। তার জন্য স্বাধীন পতাকা পেয়েছি। তিনি জন্ম না নিলে বাংলাদেশ হতো না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালে ঢাকা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন আমি ঢাকা শুক্রাবাদে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কাছেই থাকতাম। একদিন ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার জন্য মানিকগঞ্জের এক রাজনৈতিক নেতা আমাকেসহ ৫ জনকে নিয়ে সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল ঐ নেতার। আমি ছোট, ছাত্র মানুষ। রাজনীতির কিছু বুঝি না। তাই চুপচাপ একটু পেছনের চেয়ারে বসে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণভরে দেখছিলাম আর কথা শুনছিলাম। বঙ্গবন্ধুও কথার ফাঁকে আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন। সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম। কথার শেষে বঙ্গবন্ধু আমার উদ্দেশ্যে হঠাৎ বললেন, এই তুমি কে? কি কর? আমি বললাম, আমার নাম বিপদ ভঞ্জন সেন কর্মকার। ঢাকা চরুকলার ছাত্র। বলা মাত্রই তিনি বললেন, বাহ্ নামটা তো বেশ সুন্দর, বলেই চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। আর বলতে লাগলেন, ‘বাবা তোমাদের জন্যই আমি আজ পর্যন্ত বেঁচে আছি’। তিনি এত বড় নেতা, আমার মতো ছোট একজন ছাত্রের মাথায় হাত বুলাতে পারেন। তখন আমার সারা শরীর কাঁপছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, কোনো শিল্পী দিনে দিনে জন্মায় না। শিল্পীর জন্ম হয় সাধনায়। তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে জাতির শিল্প সংস্কৃতি অর্থনীতি শেষ করে ফেলা হয়েছিল। জাফর ওয়াজেদ বলেন, একাত্তর সাল থেকে আমরা দেখেছি অসহযোগ আন্দোলনকে শিল্পীরা কিভাবে এগিয়ে নিয়েছিলেন এবং আমরা গৌরব বোধ করি এই কারণে একাত্তরে কোনো শিল্পী পাকিস্তান সরকারের কাছে মাথা নত করেনি। শিল্পী বিপদ ভঞ্জন সেন কর্মকারের প্রদর্শনী চলবে ২৭ জুন সোমবার পর্যন্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়