মির্জা ফখরুল : খালেদার কিছু হলে দায় নিতে হবে সরকারকেই

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ইসির ‘এসিড টেস্ট’

পরের সংবাদ

আর কোনো ইটভাটা চান না মির্জাপুরবাসী

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর থেকে : জামালপুর সদর উপজেলার ইটাইল ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রাম। প্রকৃতির সবুজ চাদরে ঘেরা গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিনির্ভর। তিন ফসলি জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন এই গ্রামের কৃষকরা। তাদের এই স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুটি ইটভাটা। ইটভাটা ও ভাটার বর্জ্যরে কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তাদের জনজীবন। এছাড়াও মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে আরো একটি ইটভাটা স্থাপনের প্রক্রিয়া। সেই ইটভাটা স্থাপনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে পুরো গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর পক্ষে ভাটা স্থাপন না করার অনুরোধ জানিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
মির্জাপুর গ্রামের আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধা মো. শামছুল হক বলেন, ফসলি জমি বিনষ্ট করে ইটভাটা স্থাপন করার কোনো নিয়ম আছে কিনা আমাদের জানা নেই। তবে এবিসি ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ভাটা স্থাপনের কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পুরো গ্রামবাসী মির্জাপুরে আর ইটভাটা চাই না। এখানে ইটভাটা হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী টাকা ছিটিয়ে জোরপূর্বক এখানে ইটভাটা স্থাপনের পাঁয়তারা করছে। আমরা গ্রামবাসী এই ইটভাটার বিপক্ষে।
মির্জাপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত মাস্টার বলেন, এই গ্রামের দক্ষিণ দিকে বিস্তীর্ণ তিন ফসলি মাঠ। এক সময় এই জমি থেকে লাখ লাখ মণ ধান উৎপাদন হতো। কিন্তু এই গ্রামে দুটি ইটভাটা হয়ে এখন তেমন ধান পাওয়া যায় না। আবার যদি এই গ্রামে ইটভাটা হয় তাহলে আমাদের ধান চাষ বাদ দিতে জবে।
আরেক কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই দুই ইটভাটার বর্জ্য নিয়ে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। রাস্তাঘাটসহ ক্ষেতের নানা জায়গায় ইটভাটার বর্জ্য থাকে। পরিবেশটাও দূষিত হয়। এর মধ্যে আরেকটা ইটভাটা হলে আমাদের জীবন শেষ হয়ে যাব।
কৃষক সিদ্দিক মিয়া বলেন, আমাদের এই গ্রামে একটি গভীর নলকূপ আছে। যে জায়গায় ইটভাটা করছে, তার ১০০ গজ দূরেই গভীর নলকূপটি অবস্থিত। চল্লিশ বছর ধরে আমরা এই নলকূপ থেকে ক্ষেতের জন্য পানি নিই। এমনিতেই এখানে পানির স্তর অনেক নিচে। এখন এই জায়গায় যদি ইটভাটাটি স্থাপিত হয় তাহলে পানির স্তর আরো নিচে চলে যাবে। ইটভাটা হলে আমাদের মতো কৃষকের আরো সমস্যা হবে। আমরা এমনিই মরা, আরো মারার জন্য এই ইটভাটা হচ্ছে।
ইটভাটা স্থাপনকারী ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন জানান, গ্রামের কিছু লোক একজোট হয়ে শুধু শুধু আমার বিরোধিতা করছে। ওই জায়গায় আমার আগের একটি ইটভাটা ছিল। সেটি আবার নতুন করে করছি। এছাড়া আর কিছুই না। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ফাইল রেডি হচ্ছে। এখনো অনুমতি পাইনি।
এসব বিষয়ে জামালপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ রানা বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পাই। এরপর কয়েকটি দপ্তর সরেজমিনে তদন্তে যায়। সেখানে দুই ফসলি কৃষি জমি আছে। আরো কিছু আইনি বিষয় রয়েছে। এসব বিষয় আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। আর তারা যদি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা স্থাপনের চেষ্টা করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়