ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

বরিশালে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক সাইলো : সংরক্ষণ করা যাবে ৪৮ হাজার টন চাল

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : দক্ষিণাঞ্চলে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় বরিশালে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক মানের স্টিল সাইলো। নগরীর সিএসডি (ত্রিশ গোডাউন) এলাকায় ৫২০ শতাংশ জমিতে এর নির্মাণকাজ চলছে। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ পাইলিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই জিরো লেভেলের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত চালের মান অক্ষুণ্ন রেখে একসঙ্গে ৪৮ হাজার টন চাল সংরক্ষণ করা যাবে। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এই সাইলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে খাদ্য মজুত রাখার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বরিশালে সাইলো নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সাইলো নির্মাণের জন্য বরিশাল নগরীর বধ্যভূমি এলাকার ঐতিহ্যবাহী দীঘিকে নির্ধারণ করা হয়। এজন্য দীঘিটি ভরাট শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা এবং সুশীল সমাজের বাধার মুখে আটকে যায় দীঘি ভরাট। সেই সঙ্গে আটকে যায় সাইলো নির্মাণের গতি। পরে সিএসডি চত্বরে সাইলো প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য সিএসডির পুরনো ১১টি গোডাউন ভেঙে মোট ৫২০ শতাংশ জমিতে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর সাইলো নির্মাণকাজ শুরু করে কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং দি জিএসআই গ্রুপ এলএলসি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্পের চুক্তি মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ৩১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা জানান, নির্মাণাধীন সাইলোতে ১৬টি পৃথক স্টিলের সেল থাকবে। প্রতিটি সেলে তিন হাজার করে একসঙ্গে মোট ৪৮ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রাখা যাবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়াই তিন বছর পর্যন্ত খাদ্যশস্যের মান অক্ষুণ্ন রাখবে। তিনি বলেন, সাইলোর জন্য কীর্তনখোলা নদীতে আলাদা জেটি থাকবে। সেখান থেকে সরাসরি বেল্ট কনভেয়ারের সাহাজ্যে খাদ্যশস্য সাইলোর স্টিল সেলে পৌঁছে যাবে। আবার বেল্ট কনভেয়ারের মাধ্যমেই সাইলো থেকে চাল বা খাদ্যশস্য বের করা হবে। সাইলোতে তিন বছর পর্যন্ত তাপমাত্রা এবং খাদ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অপরদিকে নির্মাণ প্রকল্পের কারিগরি বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন সাইলো আপৎকালীন মানুষের সহায়ক হবে এবং পরবর্তী সময়ে ফসল না ওঠার আগ পর্যন্ত যে খাদ্য সংকট দেখা দেবে এই সাইলোর মাধ্যমে সেই সংকট দূর হবে।তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বর্ষা মৌসুমের আগেই পাইলিংয়ের কাজ শেষ করতে। কেননা, বর্ষার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাইলো নির্মাণকাজে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তাই এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বর্ষার আগেই জিরো লেভেলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তী সময়ে স্ট্রাকচারের কাজ শুরু করব। এজন্য প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন শ্রমিক কাজ করছেন প্রকল্প এলাকায়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী এই কারিগরি বিশেষজ্ঞ।
এদিকে খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় স্থানীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৯০ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। সাইলো নির্মাণের ফলে মজুতের ব্যবস্থা আরো ৪৮ হাজার টন বৃদ্ধি পাবে।
এ সংরক্ষণাগারে দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত চালের মান অক্ষুণ্ন রেখে সংরক্ষণ করা যাবে। পাশাপাশি যে কোনো দুর্যোগের সময় খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এই সাইলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমনটাই আশাবাদী খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়