ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

কালো ধোঁয়ায় পাঠদানে বিঘ্ন : শিবগঞ্জে স্কুলের পাশে স্যান্ডেল পুড়িয়ে গলানো হচ্ছে পিচ

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আতিক ইসলাম, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : পুরনো-পরিত্যক্ত স্যান্ডেল পোড়ানোর কালো ধোঁয়ায় শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের দিয়াড় পশ্চিম জাহাঙ্গীরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উজিরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ উজিরপুর নাসির মণ্ডলের টোলা গ্রামে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। সড়কের পিচ গলানোর সঙ্গে পাথর ও পিচের মিশ্রণ করানোর মেশিনের শব্দে অতিষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের সড়কে চলছে পিচ কার্পেটিংয়ের কাজ। সংস্কার কাজের জন্য বিদ্যালয়ের পেছনেই গত ৭ দিন ধরে পিচ গলাতে জ¦ালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে পুরনো স্যান্ডেল। এতেই কালো ধোঁয়ায় ক্লাসে বসা শিক্ষার্থীরা দূষণের শিকার হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঘেঁষে মেশিনে পিচ ও পাথরের মিশ্রণ করায় ধুলাবালি ও শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে তারা।
রবিবার সকালে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্যান্ডেল পোড়ানোর কালো বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসের তোড়ে গিয়ে ঢুকছে শ্রেণিকক্ষে। শিক্ষার্থীরা জানায়, কালো ধোঁয়ায় তাদের চোখ জ¦ালা করে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। এমনকি বমি বমি ভাব হয়। টিনের অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ হওয়ায় কালো ধোঁয়া-শব্দ কোনোটাই আটকানো যায় না। দিয়াড় পশ্চিম জাহাঙ্গীরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলি খাতুন ও মমতাজ খাতুন জানান, গত এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই স্কুলের গা ঘেঁষে পিচ গলাতে স্যান্ডেল পোড়ানো ও পিচ-পাথর মেশানো শুরু হয়। প্রচুর পরিমাণে গন্ধ আসে। ক্লাসের শিক্ষার্থীদের খুব কষ্ট হয়। এরই মাঝে বাধ্য হয়েই ক্লাস করাতে হচ্ছে। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীম ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম জানায়, ক্লাস করা অবস্থাতেই চোখে-মুখে মেশিনের ধুলাবালি আসে। কালো ধোঁয়া নাকের কাছে এলে বমি বমি ভাব হয়। ম্যাডামদের একাধিবার বলেও কোনো লাভ হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, উপজেলার ছত্রাজিতপুর থেকে এসব রাবারের পুরনো ও পরিত্যক্ত স্যান্ডেল কিনে এনে পোড়ানো হয়। কেজিপ্রতি ১১ টাকা করে এসব স্যান্ডেল কেনা হয়েছে। বেশি সময় ধরে জ¦লে বলে মালিকরা এসব পোড়াচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন জানান, শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২০ জন। শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। তিনি জানান, পিচ গলানো ও মেশিনে পাথর মিশ্রণের কাজ করার জন্য স্কুলের পাশে জায়গা ব্যবহার করবেন মর্মে মৌখিকভাবে ঠিকাদারের লোকজন তাকে জানিয়েছেন। বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য একটি দোলনা কেনা বাবদ ১৫ হাজার টাকা দেয়ার প্রতিশ্রæতিও দেয়া হয়। ফলে আর কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি। ঠিকাদার খাইরুল কবির রানা জানান, উন্নয়ন কাজ করতে গেলে একটু অসুবিধা হবে। সাময়িক অসুবিধার বিষয়টি মেনে নিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে হবে। তবে জ¦ালানি হিসেবে পুরনো রাবারের স্যান্ডেল ব্যবহার নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাহার আলী প্রামাণিক জানান, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘœ ঘটিয়ে এসব কাজ করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া পিচ গলাতে জ¦ালানি হিসেবে কাঠ বা কাপড়ের জুট ছাড়া স্যান্ডেল ব্যবহারের কোনো নিয়ম নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়