মামলায় জিতে টাকা ‘ইনকাম’

আগের সংবাদ

ভোক্তার সুফল কোন পথে : বাজেটে কর বাড়লে দাম বাড়ে, কর কমলে দাম কমে না, সরকারি সিদ্ধান্তের সুফল পান না ভোক্তারা

পরের সংবাদ

পুঁজিবাজারে কালো টাকা চায় সিএসই

প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। এতে বাজারে তারল্যসহ সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির। প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গতকাল শনিবার সিএসইর পক্ষ থেকে এ দাবি জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা রহিত করা হয়েছে। এই সুবিধা আগামী বছর পর্যন্ত বহাল রাখার জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। এতে বাজার যেমন শক্তিশালী হবে তেমনি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে, পাশাপাশি অর্থপাচারও কমবে বলে আমরা আশা করছি।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়াকে বিভিন্ন পক্ষ থেকে অনৈতিক বলা হচ্ছে। তাহলে আপনারা কেন পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আফিস ইব্রাহিম বলেন, নৈতিকভাবে আমরা কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে সমর্থন করি না। আমরাও মনে করি এতে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন। তবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে এবং শেয়ারবাজারে তারল্য বাড়বে। পাশাপাশি অর্থপাচার কমবে।
তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার করহারের ব্যবধান ১০ শতাংশ করার দাবি জানান সিএসইর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের অধিক শেয়ারের ক্ষেত্রে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আগত তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ১০ শতাংশ বা তার কম শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তরকারী লিস্টেড কোম্পানির করহার না কমিয়ে পূর্বের হার অর্থাৎ ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের করহার হ্রাসের এই ঘোষণাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
তবে পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তিকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা যেতে পারে বলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম। তিনি বলেন, বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির মধ্যে করহারের ব্যবধান খুবই কম। তাই ভালো কোম্পানি এই বাজারে আসতে আগ্রহী হয় না। কারণ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে নানা ধরনের কমপ্লাইয়ান্স পরিপালন করতে হয়। এতে কোম্পানিগুলোকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। ফলে করহার রেয়াতের প্রকৃত কোনো সুবিধা ভোগ করা যায় না। তিনি আরো বলেন, অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহার কমিয়ে তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে করহারের ব্যবধান বাড়ানো হলে কর সুবিধা রেয়াতের জন্য ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে। এতে একদিকে পুঁজিবাজার সমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে লেনদেন বাড়লে তা থেকে বাড়তি কর আদায় হবে। তাছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা ও জাবাদিহিতা বাড়ে। নানা সংস্থার তদারকিতে থাকতে হয় বিধায় কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কমে আসে। তাতে সরকারের কর সংগ্রহ নিশ্চিত হয়।
সিএসইর জন্য বর্তমানে ৩০ শতাংশ করপোরেট করহার ধার্য রয়েছে। এটাকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত শূন্য হার নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছে সিএসই। এ দাবির পক্ষে যুক্তি হিসেবে সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, কৌশলী বিনিয়োগকারী আকর্ষণ করাসহ স্টক এক্সচেঞ্জের কারিগরি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে মূলধন পুনর্বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও দক্ষতা ও দীর্ঘমেয়াদে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনের লক্ষ্যে সিএসইর আর্থিক সক্ষমতা প্রয়োজন হলেও বর্তমানে এক্সচেঞ্জগুলোর আয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ‘তাছাড়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এটি গঠন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারিগরি সহায়তা, আইন-কানুন প্রণয়ন, প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে’ যোগ করেন আসিফ ইব্রাহিম।
সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছানোর লক্ষ্যে, বেসরকারি বিনিয়োগ ও জিডিপি অনুপাতের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রয়াসে নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেটে করপোরেট করহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বেসরকারি বিনিয়োগ ও জিডিপি অনুপাত ২৩ শতাংশ। উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সরকার এ অনুপাত বৃদ্ধির জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করছে, যা খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ বলে আমরা মনে করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়