ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যশুরু

আগের সংবাদ

অর্থ পাচার উৎসাহিত হবে! পাচার হওয়া টাকা অর্থনীতির মূল¯্রােতে আনতে চান অর্থমন্ত্রী > বৈষম্যের শিকার হবেন সৎ করদাতারা : বিশ্লেষকদের অভিমত

পরের সংবাদ

বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা : গুরুদাসপুর

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : গুরুদাসপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানের আশপাশে বখাটেদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের স্বাভাবিক যাতায়াতে মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতকারী নারীরাও। প্রকাশ্যে এসব উৎপাত চললেও প্রশাসনের নেই কোনো তৎপরতা। উপজেলার পৌর শহরের বেগম রোকেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, শাহিদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়, বিলচলন শহীদ সামসুজ্জো সরকারি কলেজ, নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, গুরুদাসপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে ইদানীং বখাটেদের উৎপাত চরম আকার ধারণ করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে দলবদ্ধভাবে অবস্থান নিচ্ছে তারা। পথে-ঘাটে ছাত্রীদের উত্ত্যক্তসহ আপত্তিকর মন্তব্য করছে বখাটেরা। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে নেশার টাকার চাহিদা মিটাচ্ছে বলেও জানা গেছে। অথচ প্রশাসনের নজরদারি নেই সেদিকে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গুরুদাসপুর পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সবগুলোর প্রধান ফটকের সামনে বা আশপাশে বখাটেদের দৌরাত্ম্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে ছাত্রীদের চলাচলের পথে সমস্যা সৃষ্টি করছে বখাটেরা। নিরাপত্তার কথা ভেবে ছাত্রী ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকরা এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এতে করে বখাটেদের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন ভুক্তভোগীরা। শিক্ষার্থীরা লজ্জায় এর প্রতিবাদ করতে পারছে না। কোনো সচেতন ও প্রতিবাদী মানুষ বখাটেদের বাধা দিলে উল্টো প্রতিবাদকারীদেরই রোষানলে পড়তে হচ্ছে। দেখা যায়, বিভিন্ন নির্জন স্থানে, পুকুর পাড়ে, বাগানের পাশে, স্কুলের সামনে দোকানপাট, বাসস্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সামনে বসে বখাটেরা প্রকাশ্যেই মাদক সেবন করছে আর আড্ডা মারছে। এমনকি স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের পিছু নিয়ে তাদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে, যার কারণে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের চলাফেরা এবং লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে; এমনকি অনেক অভিভাবক ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে বাল্যবিয়ের হারও। সীমা, মীম ও বনফুল নামে কয়েকজন স্থানীয় শিক্ষার্থী জানায়, বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলাচল, কেনাকাটার সময় পাশে কেউ না থাকলে হাত ধরে টানাটানি করে হেনস্তা করা, তাদের ছবি ও ভিডিও করা, প্রতিবাদ করতে গেলে ছাত্রীদের মোবাইল কেড়ে নেয়া, হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সা দাবি করা, জোর করে প্রেম ও কুপ্রস্তাব দেয়া বখাটেদের নিত্যদিনের কাজ। এমনকি বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে গেলেও হেনস্তায় শিকার হতে হচ্ছে আমাদের প্রতিনিয়ত। আমরা বাঁচতে চাই, লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। গুরুদাসপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু বলেন, বখাটেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় দাপটের সঙ্গে রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রী ও পথচারীদের চলাচলে বিঘœ ঘটাচ্ছে। যার কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। এ ব্যাপারে আমার স্কুলেই অনেকবার ঝমেলা হয়েছে। যার সমাধান করতে কারো সহযোগিতা পাইনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, আমার কোনো পুত্র সন্তান নেই। তিন মেয়ে, তিনজনকেই অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছি বখাটেদের অত্যাচারে। বাল্যবিয়ের কুফল জেনেও বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। যার প্রভাব আমি নিজ চোখে দেখে গেলাম। এ রকম দুর্ভাগ্য যেন কারো না হয়। বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা রুমা বলেন, নেশাগ্রস্ত বখাটেদের অত্যাচার মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অতিদ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অন্যথায় যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে করে ছাত্রীরা নির্ভয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে পারে। অপরাধী সেই হোক তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়