কাগজ প্রতিবেদক : করোনা সংক্রমণ ও রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনে সৃষ্ট বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা, সরকারি ব্যয়ে সংকুলান এবং বেসরকারি খাতকে চাঙ্গা করার যুক্তিতে দেশ থেকে পাচার করা অর্থ বিনা প্রশ্নে ফেরত আনতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান সংযোজনের অভূতপূর্ব অনৈতিক এক প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যা সম্পূর্ণরূপে অসাংবিধানিক, সংশ্লিষ্ট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক এবং অর্থপাচারের মতো ঘৃণিত অপরাধের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার নামান্তর। এই ন্যাক্কারজনক প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থাটি।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থমন্ত্রী যেভাবেই ব্যাখ্যা করেন না কেন, নামমাত্র কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে পাচার করা অর্থ বিদেশ থেকে আনার সুযোগ স্পষ্টতই অর্থ পাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার দেয়া। অথচ অর্থপাচার রোধ আইন-২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ, দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুণ জরিমানা ও ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে। এ সুযোগ অর্থপাচার তথা সার্বিকভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে, যা সংবিধান পরিপন্থি এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ ঘোষণার অবমাননাকর।
অন্যদিকে, যারা বৈধ উপার্জননির্ভর করদাতা তাদের জন্য এই প্রস্তাব প্রকটভাবে বৈষম্যমূলক, কারণ তারা ৭ শতাংশের কমপক্ষে তিনগুণ হারে কর দিয়ে থাকেন। এটি বৈষম্য ও সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি। অবিলম্বে এ সুযোগ বাতিল করতে হবে এবং অর্থপাচারকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনি প্রক্রিয়া নির্ধারিত রয়েছে, তা অনুসরণ করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।