প্রধানমন্ত্রী : অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি করব না > শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাল সংসদ

আগের সংবাদ

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী : পাচারের টাকা ফেরত আনব

পরের সংবাদ

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট : প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাত অবহেলিত

প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শরীফা বুলবুল : সংস্কৃতি খাতে ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবিটি ছিল সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিনের। বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে এই দাবি আরো বেশি জোরালো হয়। কিন্তু বাজেটে সেই দাবির প্রতিফলন হলো না। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়নে গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ৫৮৭ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৬৩৭ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ৫০ কোটি এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৫৮ কোটি টাকা বেশি।
তবে সংস্কৃতিজনরা বলেছেন, এবারো বাজেটে সংস্কৃতিকে অবহেলা করা হয়েছে। সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটকে ‘অগ্রহণযোগ্য ও অবহেলিত’ উল্লেখ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, আমরা হতাশ। আমরা যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম, সেগুলো বাস্তবায়ন না করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন। তিনি বলেন, সরকার একদিকে বলছে, সংস্কৃতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন একেবারেই নেই। আমরা আশা করব, বাজেট পেশ হওয়ার আগে এটি পুনর্বিবেচিত হবে। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় জানাব।
সংস্কৃতিজনরা বলেন, দেশব্যাপী সংস্কৃতি চর্চাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এই বাজেট অপ্রতুল। এবার মূল বাজেটের অন্তত ১ শতাংশ বরাদ্দ আশা করেছিল সংস্কৃতিকর্মীরা। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতিবারই আমরা দেখি বাজেটে সংস্কৃতির প্রতি অবহেলা। সংস্কৃতি খাতে যে বাজেট দেয়া হয়, সেটা তো বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় শেষ হয়ে যায়। তৃণমূলে সংস্কৃতি চর্চাকে এগিয়ে নিতে হলে রাষ্ট্রকে ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু সেখানে রাষ্ট্রের অবহেলা আমাদের ভীষণ রকম হতাশ করে।
তিনি বলেন, অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা দূরীকরণের লক্ষ্যে সংস্কৃতি খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাজেট প্রণেতারা সেপথে হাঁটলই না। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, সংস্কৃতি খাতে আমরা কখনোই কাক্সিক্ষত বাজেট পাইনি।

সংস্কৃতি খাত সরকারের বরাবরই উপেক্ষিত ছিল, অথচ এটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। সংস্কৃতি খাতকে অবহেলা করে অসাম্প্রদায়িক এবং মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সংস্কৃতির প্রতি এই অবহেলাটা খুবই খারাপ প্রবণতা। প্রতি বছর বাজেট কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত যেটাই বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয় সেটাও ঠিক মতো ব্যবহৃত হয় না, যা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কিংবা প্রজেক্টের পেছনে চলে যায়। আমরা চাই সংস্কৃতির বরাদ্দটা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে যাক। সেখানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে।
তিনি বলেন, এ রকম অর্থের অপচয় হলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ হবে না। ওই স্বপ্ন কেউ দেখেও না। সরকারের অভ্যন্তরে কিছু মৌলবাদী আছে, যারা এসব কর্মকাণ্ড করে। তারাই সংস্কৃতি উপেক্ষা করে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, এমনকি এবারের যে শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতা হয়েছে সেখানে অভিনয় এবং ছবি আঁকা বাদ দেয়া হয়েছে। আমি খোঁজ নিয়ে জানলাম, বিষয়টি কেউ জানেই না। সচিবালয়ের কিছু লোক এ কাজটি করেছে। এর মানে শিক্ষার মধ্যেও এসব সংস্কৃতিবিরোধী লোক রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়