প্রধানমন্ত্রী : অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি করব না > শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাল সংসদ

আগের সংবাদ

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী : পাচারের টাকা ফেরত আনব

পরের সংবাদ

বরাদ্দ বাড়লেও বাড়তি গুরুত্ব পায়নি স্বাস্থ্য খাত

প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সেবিকা দেবনাথ : স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের দাবি দীর্ঘদিনের। সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে এই দাবি আরো বেশি জোরালো হয়। কিন্তু বাজেটে সেই দাবির প্রতিফলন হয় না। বাজেটে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও এর সুফল সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে খুব একটা ভূমিকা রাখে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বেশি বরাদ্দ পেতে কাঠামোগত পরিবর্তন বা খাতভিত্তিক যে পরিকল্পনা সেটি যেমন স্বাস্থ্য খাতে হয়নি, তেমনি বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়ার বিষয়টিও সত্য। গতানুগতিক স্বাস্থ্য বাজেটে নেই পরিবর্তনের সুর।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে উত্থাপিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ২৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগে ৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। গত ৫ জুন এক অনুষ্ঠানে বাজেটে স্বাস্থ্য খা?তে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর আগে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের জন্য ৭ থেকে ৮ শতাংশ বরাদ্দ রাখার সুপারিশ করেছিলেন। তবে গত কয়েক অর্থবছরে মোট বাজেটের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৬ শতাংশের কম।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ প্রসঙ্গে এক প্রতিক্রিয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বেড়েছে। এই বরাদ্দের বেশির ভাগটাই চলে যাবে কেনাকাটা, বেতন ভাতায়। দিন শেষে স্বাস্থ্যসেবা নিতে ব্যক্তির নিজের পকেট থেকে স্বাস্থ্যসেবার খরচ (আউট-অব-পকেট-পেমেন্ট) বাড়বে বৈ কমবে না। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। এদিকে আবার

বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করার সক্ষমতাও আমাদের নেই। অর্থ খরচ করতে না পারার বিষয়টি যেমন ঠিক তেমনি প্রশ্ন হলো খরচ করার দায়িত্ব কার? ম্যানেজার (ব্যবস্থাপক) সবল না হলে কীভাবে অর্থ খরচ হবে? ব্যবস্থাপনা সবল করার কোনো প্রক্রিয়াওতো আমরা দেখি না। চিকিৎসা শুধু চিকিৎসা নয়, এখানে ব্যবস্থাপনাও একটি বড় বিষয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রত্যাশা অনুযায়ী না বাড়ার বিষয়টিকে বাস্তবভিত্তিক বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৫ শতাংশের বেশি হবে সে বিষয়ে আমি আশাবাদী ছিলাম না। সরকার হঠাৎ করে বরাদ্দ বাড়াতে পারবে না। এর জন্য আমাদের স্বাস্থ্য খাতের কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি। সেই পরিবর্তন যদি না হয় সেখানে বেশি বরাদ্দ পাওয়া যায় না। বাজেট চাওয়া ও পাওয়ার ক্ষেত্রটি তৈরি করতে হবে। পরিবর্তনটি করে বাজেট চাইতে হবে। যেহেতু সেই পরিবর্তনগুলো হয়নি তাই বাজেট বাড়েনি। বাজেটে সিস্টেম পরিবর্তনের সুর নেই।
প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করে বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, সামগ্রিক বাজেটে যে ভাবে বরাদ্দ বেড়েছে স্বাস্থ্য খাতে তা কম হারে বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট জাতীয় বাজেট বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। সেখানে স্বাস্থ্যের বাজেট বেড়েছে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। গত বছর ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা বেড়েছে। গত অর্থ বছরেও গবেষণার জন্য ১’শ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, এবার তা বাড়েওনি। কমেওনি। এছাড়া যে কোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্যে ৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়