প্রধানমন্ত্রী : অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি করব না > শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাল সংসদ

আগের সংবাদ

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী : পাচারের টাকা ফেরত আনব

পরের সংবাদ

এশিয়ায় এলএনজির চাহিদায় উল্লম্ফন

প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গ্রীষ্মের তীব্র গরমে এশিয়ার দেশগুলোয় অব্যাহত বাড়ছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা। এ অঞ্চলের ক্রেতারা স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় বাড়িয়েছেন। এদিকে চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ ঝুঁকির উদ্বেগও রয়েছে। এতে আগামী মাসগুলোয় এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে এলএনজির আমদানি চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে আগামী মাসগুলোয় জ্বালানিটির ব্যবহার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠবে।
অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার প্রভাব থেকে বাঁচতে এসি, ফ্যানসহ অন্যান্য যান্ত্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। এ কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি। আর কম দূষণযোগ্য হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে চাহিদা বেশি এলএনজিরও। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় তুলনামূলকভাবে বাড়িয়েছে। এসএন্ডপি গেøাবাল প্লাটসের এলএনজি অ্যানালিটিকস এশিয়ার ম্যানেজার জেফরি মুর এ কথা জানিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এশিয়ার ক্রেতারা গ্রীষ্মকালীন চাহিদাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে এলএনজি কার্গো নিশ্চিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে কিছু মূল্যসংবেদনশীল ক্রেতা দাম কমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
জেফরি মুর বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর তুলনায় তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও থাইল্যান্ড এখনো তুলনামূলক কম মূল্যসংবেদনশীল।
এদিকে অনেক ইউরোপিয়ান কোম্পানি রুবলের মাধ্যমে রাশিয়ান গ্যাস কেনা থেকে সরে আসছে। এতে তাদের স্পট মার্কেট থেকে অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ পরিস্থিতিতে এশিয়ার বাজারে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ায় এলএনজির দাম চড়া হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন মুর। তিনি বলেন, আগামী মাসগুলোয় প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ২০ ডলারের ওপরে অবস্থান করবে। গেøাবাল প্লাটসের হিসাব অনুযায়ী, আগামী মাসে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ২৩ ডলার ৬৭ সেন্টে অবস্থান করবে।
তাইওয়ান ব্যুরো অব এনার্জির তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিলে তাইওয়ান ১৭ লাখ ২০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। দেশটি মূলত গ্রীষ্মকালীন চাহিদাকে সামনে রেখে মজুত পরিপূর্ণ করতেই আমদানি বাড়িয়েছে।
জাপানে জ্বালানির আমদানি ১২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। গত বছরের আগস্টের পর প্রথমবারের মতো আমদানি বাড়ল। দেশটি অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি বাড়িয়েছে। এপ্রিলের ঊর্ধ্বমুখী দাম সত্ত্বেও জাপান ১০টির বেশি স্পট কার্গো এলএনজি কিনেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আমদানিকারকরা এপ্রিলে এলএনজি আমদানিতে ২৩৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে। অথচ গত বছরের একই সময় আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ১৮৩ কোটি ডলার।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানও জুন-জুলাইয়ে সরবরাহ বাড়ানোর দিকে এগোচ্ছে। ভারতে বর্তমানে জ্বালানি চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। চাহিদা পূরণে সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কে সরবরাহের জন্য গ্যাস কোম্পানি গেইলের জন্য আমদানি বাড়ানো বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে।

এদিকে এশিয়ার চাহিদা বাড়া-কমা চীনের বাজারের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশটিতে চলমান লকডাউন কবে নাগাদ পুরোপুরি শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না। ফলে শিল্প খাতের চাহিদা নিয়েও কোনো ধরনের পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

জেফরি মুর বলেন, স্পট এলএনজির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে এশিয়ায় সবচেয়ে বড় ওয়াইল্ডকার্ড হিসেবে কাজ করছে চীন। দেশটির সামষ্টিক অর্থনীতিতে দুর্বল পরিস্থিতি এবং বিকল্প জ্বালানি খাতে প্রতিযোগিতা ও সরবরাহ দেশটিতে এনএলজি আমদানি অনেক কমিয়েছে। তবে প্রধান শহরগুলোয় লকডাউন কিছুটা শিথিল হতে শুরু করায় আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে তৃতীয়-চতুর্থ প্রান্তিকের মধ্যে দেশটি বেশ ভালো পরিমাণ এলএনজি আমদানি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়