সংসদে আলোচনা : ‘ছয় দফা ছিল স্বাধীনতার সিঁড়ি’

আগের সংবাদ

ছয় লক্ষ্য অর্জনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন : ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট, সর্বোচ্চ ঘাটতির দিক থেকেও নতুন মাইলফলক > বাজেট ২০২২-২৩

পরের সংবাদ

মহানন্দা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ : নির্মাণের দুমাস পরই ভাঙন

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি : ভোলাহাটের মহানন্দা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণের ২ মাসের মধ্যে বাঁধ ভেঙে গেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর ডান তীর রক্ষার জন্য প্রায় কোটি টাকা খরচ করে গোপিনাথপুর এলাকায় ১৫০ মিটার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাজটি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিন এন্ড কোং।
সরজমিন ঘটনাস্থলে গিয়েও স্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। চরধরমপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, নদীর তীরে আমার বেশ কিছু জমি রয়েছে। নদীর তীর বাঁধার সময় থেকেই প্রতিদিনই জমিতে আসা হতো। ঠিকাদারেরা বাইরে থেকে বালি না এনে যেখানে বাঁধ দেয়া হচ্ছে, ঠিক তার নিচ থেকেই মাটি তুলে কিছু বস্তায় ভরে নামমাত্র কাজ করেছে। বাঁধের গোড়ায় কোনো বস্তা না দিয়ে তাড়াহুড়ো করে কাজ করা হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই ব্লক ভেঙে নদীতে চলে গেছে। মধ্যখান থেকে লাভবান হচ্ছে ঠিকাদার আর কর্মকর্তারা। মো. এস্তাব আলী নামে অপর বাসিন্দা জানান, বাঁধের জন্য যে ব্লক তৈরি করা হয়েছে সেগুলো দায়সারা। কারণ ব্লকে ব্যবহার করা হয়নি পর্যাপ্ত সিমেন্ট ও উন্নতমানের বালি। যার কারণে এখনি ব্লকের বালি ও সিমেন্ট ঝরে পড়ে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় মাছ চাষি সাদিকুল ইসলাম, হাসান আলী ও মঈনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নদীর ধারে যে ব্লক ফেলা হয়েছে তা অল্প বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে। এছাড়া ড্রেজার মেশিন দিয়ে ওপর থেকে মাটি নিচে নামিয়ে সেখানে কোনো বস্তা দেয়া হয়নি, শুধু উপরে কিছু বস্তা দিয়েছে। যার কারণে নদীর ধার যে কোনো মুহূর্তে বসে যাবে। কিছু অংশ দুমাস যেতে না যেতেই ভেঙে গেছে। ৯০ লাখ টাকা খরচ করে যে কারণে বাঁধ দেয়া হলো তা এক বর্ষা মৌসুমে টিকবে কিনা সন্দেহ তাদের।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের পাশে থেকে উন্নয়নের কাজ তদারকি করার দায়িত্ব থেকে খোঁজ-খবর নিতে যাই। সেই সুবাদে কাজ চলার সময় সরজমিন গেলে কাজের ব্যাপক অনিয়ম দেখে প্রতিবাদ করেছিলাম। এ সময় ঠিকাদার ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান। ম্যানেজ চেষ্টা ব্যর্থ হলে আমার নামে আদালতে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে হয়রানিতে ফেলেছেন। উচ্চ আদালত থেকে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় জামিনে মুক্ত হই।
এদিকে বক্তব্য জানতে ঠিকাদার আকবর খান সোহেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্লক তৈরির কাজ করেছিল ঢাকার ডলি কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তারা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমরা সিডিউল অনুসারেই কাজ করেছি। অল্প বৃষ্টিতেই বাঁধের ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাশের জমির মালিক বাঁধ দিয়ে দেয়ায় বাঁধের ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। মেরামতের কাজ চলছে শেষ হয়ে যাবে দ্রুত।
ঠিকাদারের কাজের স্বচ্ছতা দাবি করলেও খোদ সাইডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসও) মো. আব্দুর রহমান অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুখলেসুর রহমান বলেন, নদীর তীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম নেই। তবে বৃষ্টির পানিতে বাঁধ ভেঙে গেছে, এর মেরামত চলছে। ২/১ দিনের মধ্যে মেরামতের কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, আরো ভাঙন দেখা দিলে ১ বছরের মধ্যে ঠিকাদারকে নিজ দায়িত্বে ঠিক করে দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়