সংসদে আলোচনা : ‘ছয় দফা ছিল স্বাধীনতার সিঁড়ি’

আগের সংবাদ

ছয় লক্ষ্য অর্জনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন : ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট, সর্বোচ্চ ঘাটতির দিক থেকেও নতুন মাইলফলক > বাজেট ২০২২-২৩

পরের সংবাদ

কুমিল্লা সিটি নির্বাচন : ভোটারদের কাছে টানতে মরিয়া প্রার্থীরা

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের মাঠে ভোটারদের কাছে টানতে মরিয়া প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী দিন-রাত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও নানান প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা। সিটি করপোরেশনের গত দুটি নির্বাচনের চেয়ে মেয়র নির্বাচনে এবারের হিসাব-নিকাশ অনেকটা ভিন্ন। তবে বাড়তি সুবিধা যোগ হয়েছে জেলা বিএনপির আহ্বায়কের শ্যালক নিজাম উদ্দিন কায়সারের ঝুড়িতে। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জন করলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে এসে দলের প্রভাবে বিএনপি-জামায়াতের বৃহৎ অংশ নিজের ইমেজ রক্ষায় কায়সারের পক্ষে ইউটার্ন করেন। কায়সার তাদের দলের একসময়ের নেতা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসেবে দাবি করলেও সাক্কু বলছেন, আমি অতীতে জনগণের জন্য কাজ করেছি এবং এবার আমি জনগণের প্রার্থী।
২০১২ ও ২০১৭ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ দুটি নির্বাচনের মধ্যে প্রথমবার বিএনপি নির্বাচনে যায়নি। ওই সময় মনিরুল হক সাক্কু বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক সমাজের প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন। পরে দ্বিতীয়বার নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয় এবং ওই নির্বাচনে সাক্কু ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে ফের নৌকার প্রার্থীকে পরাস্ত করে মেয়র নির্বাচিত হয়ে টানা দুই মেয়াদে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ওই দুটি নির্বাচনে সাক্কুর বিজয়ের পেছনে আওয়ামী লীগের একটি অংশের নীরব সমর্থন ছিল। এ নিয়ে এখনো ক্ষোভের আগুন জ্বলছে দলটির স্থানীয় প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে।
তারা বলছেন, ওই দুটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর হেরে যাওয়ার পেছনে এবারের নির্বাচনে দলের প্রার্থী পক্ষটির দায় রয়েছে। অপরদিকে ওই দুটি নির্বাচনে জয়লাভ করে সাক্কু ও তার অনুসারীসহ আওয়ামী লীগের যে অংশটি তার পক্ষে কাজ করেছে তাদের নিয়ে মিলেমিশে ১০টি বছর পার করেছেন। এতে বিএনপির মূলধারার অংশের নেতাকর্মীরা সাক্কুর উপর ক্ষুব্ধ হন এবং এ সময়ে তারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন। তাই এবার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে সাক্কুকে ছাড় দিতে নারাজ দলের ওই ক্ষুব্ধ অংশটি। সিটির তৃতীয় নির্বাচনে এবার সাক্কুর মুখোমুখি হয়েছেন দলটির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক আমিন-উর রশিদ ইয়াছিনের শ্যালক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে তিনি বহিস্কৃত হলেও তার রয়েছে দলটির বৃহদাংশের নেতাকর্মীদের সরব-নীরব সমর্থন। এ অবস্থায় বিগত দুটি নির্বাচনে সাক্কুর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যতটা সহজ ছিল এবার তা হচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার সাক্কুর পাশে নেই আওয়ামী লীগের ওই অংশটি। এছাড়া দল থেকে বহিস্কৃত হলেও নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে দলের মূলধারার বৃহৎ অংশটিও কায়সারের পক্ষে নেমেছে। এতে ক্রমেই সাক্কুর জন্য ভোটের সমীকরণ জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। গণসংযোগ, উঠান বৈঠকে সাংবাদিক ও ভোটারদের উদ্দেশে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, নির্বাচনী মাঠে কত কথা হয়, সব কথার জবাব দিতে হয় না। তবে এবার আমি নির্বাচন করছি ভোটারদের ওপর নির্ভর করে। আমি গত ১০ বছর তাদের সেবা দিয়েছি। আশা করি, তৃণমূলের মানুষ আমাকেই আবার নির্বাচিত করে তাদের সেবা করাসহ আমার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ দিবেন। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারও গণসংযোগ, উঠান বৈঠকে সাংবাদিক ও ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আমার প্রতিদ্ব›দ্বী দুই প্রার্থীকে নিয়ে ভোটের মাঠে অনেক কথা ভেসে বেড়াচ্ছে। এসব নিয়ে আমি ভাবি না। নগরবাসী তাদের বিষয়ে সব জেনে গেছে। আশা করি, তরুণ সমাজের প্রার্থী হিসেবে নগরবাসী আমাকেই বেছে নিবে বলে আশা করছি।
প্রার্থীদের গণসংযোগ : টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু গতকাল নগরীর মগবাড়ী, কালিয়াজুড়ি, ছোটরা, রেইসকোর্সসহ বিভিন্ন স্থানে পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন। আর ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার পথসভা, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক করেন নগরীর শাকতলা, আদালতপাড়া, ভাটপাড়া, বিষ্ণুপুর, ছোটরা, থিরাপুকুরপাড়, সালমানপুর এলাকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়