রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : কিছু একটা না ঘটলে এতগুলো প্রাণ যায় না

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমাদের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম কাজ করছে। তদন্তে যার বা যাদেরই গাফিলতি পাওয়া যাবে, সে যে দলেরই হোক, যত বড় প্রভাবশালী হোক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ফায়ার ফাইটার মো. শাকিল তরফদারের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে নিহত ফায়ার ফাইটার শাকিল তরফদারের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেন, কারা অধিদপ্তরের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনসহ সংস্থাটির বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা কি কখনো দেখেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দিয়েছেন। সংসদ সদস্যকেও ছাড় দেননি। আমাদের মেসেজ স্পষ্ট, যদি কারো সম্পৃক্ততা এবং কারো গাফিলতি পাওয়া যায় অবশ্যই তাদের শাস্তি পেতে হবে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার গাফিলতি, কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা, কেউ পুড়িয়েছে কিনা- কিছুই বলা যাচ্ছে না। নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে, না হলে এতগুলো প্রাণ যায় না। সেটা আমি বিশ্বাস করি।
সীতাকুণ্ডের মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের আরো আধুনিকায়ন প্রয়োজন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু ঘণ্টা বাজানোর ফায়ার সার্ভিস থেকে এটিকে একটি আধুনিক ফায়ার সার্ভিসে নিয়ে এসেছি। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে উপস্থিত হন। আগে দেখতাম আগুন নিভে গেছে তখন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে উপস্থিত হতেন। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসকে আমরা সক্ষম বাহিনীতে পরিণত করেছি। ক্রমাগতভাবে আরো সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
ফায়ার ফাইটারদের অকুতোভয় সেনানী উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অকুতোভয় সেনানী তা তারা সব সময় প্রমাণ দিয়েছেন। জঙ্গি অভিযানে আমরা দেখেছি, সিলেটে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একজন শাহাদাত বরণ করেছেন এবং এফআর টাওয়ারের আগুন নেভানোতেও দেখেছি। জীবনবাজি রেখে আগুন নেভানোর কাজ করায় ফায়ার ফাইটার সব সময় প্রশংসার দাবিদার। সীতাকুণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও দেরি না করে ছুটে গিয়েছেন ফায়ার ফাইটাররা। সংস্থাটির ৯ জনের মৃতদেহ আমরা পেয়েছি ও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। আরো ১৫ জন আহত হয়েছেন। যাদের সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ফায়ার ডিজি বলেন, এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত ও শোকাহত। ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ নিহতের ঘটনা। এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের একটা কঠিন দিন। ঘটনাস্থলে কেমিক্যাল ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেমিক্যাল রয়েছে কিনা আমরা জানতাম না। ফায়ার সার্ভিস দলের মনোবল কোন অবস্থায় রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উজ্জীবিত করার, মনোবল চাঙা রাখার জন্য কথা বলেছি।
শাকিল তরফদারকে অশ্রæসিক্ত বিদায় : চোখের জলের শেষ বিদায় জানানো হলো ফায়ার ফাইটার শাকিল তরফদারকে। গতকাল তার মরদেহ শেষবারের মতো আনা হয়েছিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরে। বেলা সাড়ে ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে সহকর্মীরা আবেগে আপ্লæত হয়ে পড়েন। তারা সহকর্মীকে শেষবারের মতো বিদায় জানান। পরে শাকিল তরফদারের মরদেহ খুলনার বটিয়াঘাটা থানার শুখদারা গ্রামের উদ্দেশে নেয়া হয়।
ফায়ার ফাইটার শাকিল তরফদারের চাচা আবুল কালাম তরফদার বলেন, আমার ভাতিজা পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিল। তার অকাল মৃত্যুতে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, শাকিলের ভাইকে যেন যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেয়া হয়। আমার ভাতিজার জন্য সবাই দোয়া করবেন। তিনি জানান, শাকিল ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। সর্বশেষ তিনি সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়