রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

সনের স্মরণীয় ম্যাচে জয়শূন্য ফ্রান্স

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কোয়ালিফাই করা প্রায় প্রতিটি দেশই নিজেদের দলকে গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। ক্লাব ফুটবলের গ্রীষ্মকালীন দলবদলের সুবাদে সময় পেয়ে প্রত্যেক ফুটবলার স্বদেশের জার্সিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। ইউরোপের দলগুলো তাদের নেশন্স লিগ দিয়েই প্রস্তুতি পর্ব সেরে নিচ্ছে। অন্যদিকে লাতিন আমেরিকার দলগুলো এশিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলের কোয়ালিফাইন করা দলগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ব্যস্ত। কিছুদিন আগেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে যৌথভাবে গোল্ডেন বুট জিতেছেন টটেনহ্যামের দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড সন হিউং মিন। এবার দেশের জার্সিতে আরেকটি অনন্য রেকর্ড অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ঘরের মাঠে চিলিকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজের শততম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রেখেছেন সন হিউং মিন। আগের ম্যাচেই শক্তিশালী ব্রাজিলের বিপক্ষে ৫-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল কোরিয়ানরা। সেখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরে লাতিন আমেরিকারই আরেক শক্তিশালী দল চিলিকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে একটি করে গোল করেছেন হোয়াং হি চ্যান ও সন হিউং মিন।
ঘরের মাঠে সবদিক থেকেই চিলির ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে স্বাগতিকরা। ম্যাচজুড়ে সব পরিসংখ্যানেই এগিয়ে আছে কোরিয়া। প্রতিপক্ষের ৪৮ শতাংশ বল দখলের বিপরীতে ৫২ শতাংশ বল নিজেদের অধীনে রেখে চিলির বিপক্ষে নিয়েছে ১১টি শট। যেখান থেকে ৩টি শটকে লক্ষ্য বরাবর রাখতে পেরেছেন। মাত্র তিন শটের দুটিতেই কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পেয়েছে এশিয়ান জায়ান্টরা।
ম্যাচের ১২ মিনিটেই লিড পায় স্বাগতিকরা। সন হিউং মিনের শততম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রথম উপহারটি দিয়েছেন হোয়াং হি চ্যান। এরপর এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে গিয়েছে কোরিয়া। বিরতি থেকে ফিরেও সমতায় ফিরতে পারেনি চিলি। পুরো ম্যাচে নেয়া ৭ শটের মধ্যে মাত্র একটি রাখতে পেরেছেন লক্ষ্য বরাবর। এরপর ম্যাচের ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে শততম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে দ্বিতীয় গোলটি করেছেন সন হিউং মিন নিজেই। দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে বলকে সরাসরি চিলির জালে পাঠিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। শততম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে সাহায্য করার জন্য ম্যাচ শেষে সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সন হিউং মিন। সেই সঙ্গে বলেছেন, শততম ম্যাচ জিততে পেরে আমি খুবই খুশি। দল হেরে যাওয়ার পর লোকে যদি আমাকে শততম ম্যাচের জন্য অভিনন্দন জানাত, খুব অস্বস্তিকর ব্যাপার হতো। সময় বয়ে গেছে এবং ফিরে তাকানোর ফুরসত খুব একটা পাইনি। একসময় ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি হবে, এই স্বপ্ন দেখতাম বটে। তবে বেশির ভাগ সময়ই চেয়েছি বর্তমানে থাকতে। নিজের চেয়ে বেশি এগিয়ে ভাবতে চাইনি।
টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে এবার দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটিয়েছেন সন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল করেছেন ২৪টি। সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন আরো ১০টি। জাতীয় দলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। ২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলার পর ২০১০ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন সন। প্রায় এক যুগের গৌরবময় পথচলায় এই ম্যাচ দিয়ে পূর্ণ হলো সেঞ্চুরি। দক্ষিণ কোরিয়া আগামী শুক্রবার আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। এর চারদিন পর মিশরের মুখোমুখি হবে এশিয়ান জায়ান্টরা।
অন্যদিকে উয়েফা নেশন্স লিগে গতকাল রাতে ফ্রান্সের জয়কে রুখে দিয়েছে মড্রিচের ক্রোয়েশিয়া। সর্বশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালেই ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করেছিল ফ্রান্স। তবে গতকাল আর সেই জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারেনি ফরাসিরা। প্রথমে লিড নিয়ে এগিয়ে গেলেও শেষদিকে ক্রোয়েশিয়ানদের মুহুর্মুহু আক্রমণে ১-১ গোলের ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ফরাসিদের। ফ্রান্সের জার্সিতে একমাত্র গোলটি করেছেন আদ্রিওঁ রাবিও ও ক্রোয়েশিয়ার হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন আন্দ্রেই ক্রামারিচ। দুই দলের নয় দেখায় এ নিয় তিনবার ড্র হয়েছে। এছাড়া বাকি ছয়বারই জিতেছে ফ্রান্স। ক্লাব মৌসুম শেষেই জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে বেশ ব্যস্ত ফুটবলাররা। ১১ দিনের মধ্যে খেলেছে ৪ ম্যাচ। তাই খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেয়ার প্রয়োজন বোধ করে ডেনমার্কের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া একাদশ থেকে ১০ ফুটবলারকে পরিবর্তন করেছিলেন ফরাসি কোচ। করিম বেনজেমা, কিলিয়ান এমবাপ্পেসহ কেউ ছিলেন না ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষের একাদশে। দুই দলেই অনেক পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে মাঠের ফুটবলে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চললেও তেমন ধার ছিল না। ১৮তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করেন ফরাসি গোলরক্ষক।
এরপর ৩৮ মিনিটে ডি-বক্স থেকে নেয়া ফরাসি ফুটবলার মুসা দিয়াবির শটকে আটকে দেন ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক দমিনিক লিভাকোভিচ। পরের মিনিটে অগেলিয়া চুয়ামেনির দূর থেকে নেয়া শটও ঠেকিয়ে দেন তিনি। প্রথমার্ধের অনেকটা সময় ঝিমিয়ে থাকা ফ্রান্স ৫২তম মিনিটে এগিয়ে যায়। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে রক্ষণচেরা থ্রæ বল বাড়ান উইসাম বেন ইয়েদের। গতিতে ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন ইউভেন্তুস মিডফিল্ডার আদ্রিওঁ রাবিও। ৮৩তম মিনিটে সফল স্পট কিকে সমতা টানেন আন্দ্রেই ক্রামারিচ। হফেনহাইমের এই ফরোয়ার্ড নিজেই ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় তারা। প্রথমে অবশ্য বাজে অফসাইডের বাঁশি, তবে ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত। বাকি সময়ে দুই দলই একটি করে ভালো সুযোগ পায়, কিন্তু সফল হয়নি কেউই। এবারের নেশন্স লিগে এখন পর্যন্ত তাই জয়শূন্যই রইল দল দুটি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়