আমি এক পিচ্চি। নাম আমার রাজিন। আমি যা করি তাতেই নাকি দোষ। আমি সব ভুল কাজ করি।
আমি বুঝি না কেন ওরা আমাকে বকা দেয়। শাদা দেয়াল দেখে আমার ছবি আঁকতে মন চায়। আমি রং পেন্সিল দিয়ে দেয়ালে ছবি আঁকা শুরু করি।
অমনি মা চেঁচিয়ে ওঠেন-
ওরে হাঁদারাম- দেয়াল নষ্ট হবে। কাগজে ছবি আঁকো।
আমি বুঝি না দেয়ালে ছবি আঁকলে কি এমন ক্ষতি হয়?
এতে দোষের কি আছে?
আর মা আমাকে হাঁদারাম বলল কেন?
আমি মাকে বললাম, আমি হাঁদারাম হলে তুমি হচ্ছ
হাঁদারামের মা। তাই না?
আমি ঘরের ভেতর বল
খেলতে খুব ভালোবাসি।
সেদিন একটা ফুলদানি ভেঙে ফেলেছি।
আমাদের ওয়ার্ডরোবের ওপরে রাখা মায়ের প্রিয় ফুলদানি। বলের ধাক্কায় কাঁচের
ফুলদানিটা নিচে পড়ে, ভেঙে চুরচুর হয়ে গেল।
মা প্রায় আর্তনাদ করে উঠলেন। ওরে বোকারাম কি এটা!
আমি শুধু বললাম, তুমি তাহলে বোকারামের মা।
আমি চায়না পটকা ফোটাতে ভালোবাসি। বেলুন ফুটো করে
হা হা করে হাসি।
আমি বেড়ালের পেছনে ধাওয়া করি। বাড়ির পেছনে ধাওয়া করি। বাড়ির সামনে কয়েকটা কুকুর ঘুরঘুর করে। আমি লাঠি হাতে ওদের ধাওয়া করি।
আরো অনেক দোষ আছে আমার। আমি ভাত খাওয়ার
সময় অনেক ভাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাই। আর ট্যাবে তখন
আমি গেম খেলতে থাকি।
মা বকা দেন।
আমার মনে সেসব বকা
কোনো ছন্দ তৈরি করে না।
আমি আমার মতো থাকতে চাই।
আমার গোসল করতে
ভালো লাগে না। দাঁত ব্রাশ করতে ভালো রাগে না।
ঘুমানোর সময় চাদর
গায়ে দিতে পারি না।
মোরগ পোলাও ছাড়া কিচ্ছু
খেতে ভালো লাগে না।
জুতা পরি কিন্তু মোজা
পরতে আমার গরম লাগে।
সারাদিন আলুর চিপস
আর চকোলেট খেতে ইচ্ছা হয়। ইংরেজি পড়া আর অঙ্ক করা আমার একদম ভালো লাগে না।
কিন্তু মা-বাবা কাকা মামা বাই বলে এগুলো নাকি আমার দোষ।
মা এসব দেখে বলে, তুই একটা গাধা।
আমি বলি তাহলে তুমি হচ্ছ গাধার মা।
মা হেসে ফেলেন। আমি বিপুল উৎসাহে তখন দেয়ালে ছবি আঁকা শুরু করি। নানা বর্ণের নানা ছন্দের ছবি আঁকি।
আমার কাজ দেখে মা হতভম্ব হয়ে যায়। কিছু বলতে পারে না।
আমি ছবি এঁকেই চলি।
ছবি আঁকা দোষের কিছু না।