রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য : কূটনৈতিক মহলেও টানাপড়েনে ভারত

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুভূতিকে আহত করে, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার এমন বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপড়েন প্রকট রূপ নিচ্ছে। উপসাগরীয় দেশ কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইনের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, মালদ্বীপ, জর্ডান, লিবিয়াও ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও গতকাল ভারতের বহুল সমালোচিত এই ইস্যুতে বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, আমরা সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার অবস্থানকে দৃঢ় সমর্থন ও উৎসাহ জানাই।
কুয়েতের বাজারে ভারতীয় পণ্য বর্জন করা হয়েছে। ইরান, কুয়েত এবং কাতার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। সৌদি আরব কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে। বিজেপির মুখপাত্র সদ্য বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মা গত মাসে এক টেলিভিশন বিতর্কে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির দিল্লি শাখার মিডিয়া প্রধান নভিন কুমার জিন্দালও এই ইস্যু কেন্দ্র করে টুইটারে উসকানিমূলক পোস্ট দেন। দুই নেতা এরই মধ্যে প্রকাশ্যে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। পাশাপাশি এক বিবৃতিতে বিজেপি বলেছে, কোনো স¤প্রদায় বা ধর্মকে অপমান বা হেয় করে, এমন যে কোনো আদর্শের বিরুদ্ধে বিজেপি।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ৫৭ সদস্যের ওআইসি ভারতের সমালোচনা করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পানি অনেকদূর গড়িয়ে গেছে। পরিস্থিতি সামলাতে এখন বিজেপি ও সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রকাশ্য বিবৃতি দেয়া লাগতে পারে। তা না হলে আরব বিশ্ব ও ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। ২০২০-২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮৭ বিলিয়ন ডলার। এসব দেশে লাখ লাখ ভারতীয় কাজ করে, যারা কোটি কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠায় দেশে। ভারতের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি আমদানিও হয় এসব দেশ থেকেই।

বিগত কয়েক বছরে দিল্লির সঙ্গে তেহরানের সম্পর্কে আগের মতো উষ্ণতা নেই। এর মধ্যে এই বিতর্ক ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানের আসন্ন ভারত সফরেও প্রভাব ফেলতে পারে। উইলসন সেন্টারের এশিয়া কর্মসূচির পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, বিদেশি রাষ্ট্র এমনকি দিল্লির ঘনিষ্ঠ কেউ যখন ভারতের কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয়ের সমালোচনা করেন, তখন ভারতীয় কর্মকর্তারা প্রায়ই আত্মপক্ষ সমর্থন করে প্রতিক্রিয়া দেখান। যদিও আরব দেশগুলো নিজ দেশের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ কমানোর উপায় খুঁজছে। এদিকে কুগেলম্যান বলেন, নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থেই উপসাগরীয় দেশগুলো চাইবে ভারত তাদের কাছ থেকে জ্বালানি কিনুক, তারা চাইবে ভারতীয়রা থাকুক, কাজ করুক। সর্বোপরি তারা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে চাইবে।
সমালোচকরা বলছেন, বিজেপি দাবি করলেও নূপুর শর্মা মোটেও ‘বিচ্ছিন্ন কেউ’ নন। তিনি দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র ছিলেন, যার কাজ ছিল বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা। বিষয়টি নিয়ে এই আন্তর্জাতিক টানাপড়েন ভারতের জন্য ‘জেগে ওঠার’ বার্তা হওয়া উচিত; বিভাজনের রাজনীতি যে আন্তর্জাতিক জটিলতায়ও ফেলতে পারে, তাও তাদের শেখা উচিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়