রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

বাঁধ সংস্কার ও নদী-খাল খননে অনিয়ম দুর্নীতি

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মসিউর রহমান ফিরোজ, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা উপকূলবাসীর জীবন রক্ষাকারী বেড়িবাঁধ ও জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পাউবোর কর্মকর্তারা। এর মধ্যে সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তারা চরম অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের পথ বেছে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলার বেতনা নদী খনন ও উপকূল রক্ষাকারী বেড়িবাঁধ সংস্কারের শুরুতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভেকু মেশিনের মাধ্যমে বেড়িবাঁধের মুল সেøাভের কাছ থেকে গর্ত সৃষ্টি করেছে। সেøাভের মাটি কাটতে নিষেধ করলেও তারা মানছেন না। যার ফলে অতিবৃষ্টি বা প্রবল জোয়ারে এই বাঁধ ধসে যেতে পারে। নির্বাহী প্রকৌশলী, শাখা কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের লোকজনের যোগসাজশে কাজের শুরুতে এমন অনিয়মে প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সরজমিন দেখা যায়, পানি নিষ্কাশনে নদী, খাল খননে সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ আওতাভুক্ত প্রতিটি পোল্ডারে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। মরিচ্চাপ, বেতনা নদী সংযুক্ত প্রতিটি খাল খননের নামে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারে বাঁধ থেকে ১৫ মিটারের মধ্যে মাটি কাটা নিষেধ। কিন্তু মানা হচ্ছে না বাঁধ সংস্কার ও খননের কোনো দিকনির্দেশিকা। এসব দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর কর্মকর্তার দুর্নীতির সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছামতো চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অনিয়ম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে পাউবো সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ এর তত্ত্বাবধানে সদর ও কলারোয়া উপজেলায় আওতাভুক্ত ৪টি প্যাকেজে নদী, খাল খনন ও উপকূল রক্ষাকারী বেড়িবাঁধ সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২টি প্যাকেজে ২৩ কিমি বেতনা নদী খনন, ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫ কিমি শালিখা খাল খনন ও সদরের গোবিন্দপুর বাজার থেকে বিনেরপোতা হয়ে কলারোয়া উপজেলার অভিমুখে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষাকারী বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রকল্পের আওতাভুক্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে এবাদুল ইসলাম, সুনীল রায়, রেজাউল করিম, আনোয়ার হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আমিনুর রহমান ও মহিবুল্লাহ বলেন, সরকার আমাদের নদী, খাল খনন ও উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য যে বরাদ্দ দিয়েছে তার অর্ধেক পরিমাণ অর্থ প্রকল্পে ব্যয় হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেড়িবাঁধ ভেঙে শত শত কোটি টাকার মৎস্য ঘের ভেসে গিয়ে মানুষ সর্বস্বান্ত হতো না। তাছাড়া নদী, খাল খননে কোনো নকশা মানা হচ্ছে না। কিছু কিছু জায়গায় চিকন আবার কিছু কিছু জায়গায় নদী, খালের গভীরতা কমিয়ে খনন করা হচ্ছে। আমরা জানতে চাইলে ঠিকাদারের লোকজন বলেন, আপনারা বেশি বোঝেন? চুপ থাকেন আর দেখেন। অফিস বুঝবে।
তারা আরো বলেন, সরকারি অফিসের কোনো লোক প্রকল্পস্থলের পাশে কোনো দিন দেখিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইালে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট শাখা কর্মকর্তা সাদিউর রহমান বলেন, সাইটে যা-ই হোক আপনার দেখার দরকার নেই। আমার সঙ্গে বা স্যারের সঙ্গে দেখা করেন সব ঠিক হয়ে যাবে। সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, আমি কাজ দেখতে সাইডে গিয়েছিলাম। বেড়িবাঁধের সেøাভে ১৫ মিটারের মধ্যে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি করে মাটি কেটেছে। আমি তাদের বলেছি গর্ত ভরাট করে দিতে। খননের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটু সমস্যা হয়েছে। ফিনিসিংয়ে ঠিক হয়ে যাবে। প্রকল্পের অনেক দিন মেয়াদ আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়