ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

সাকিব বন্দনায় তামিম

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রিকেটপ্রেমীরা। টেস্টে তাকে নিয়ে প্রশ্ন নেই কারো। কিন্তু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তামিমের ব্যাটিংয়ের ধরন যেন অনেকের কাছেই জুতসই নয়। ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ও স্ট্রাইকরেট নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায় ক্রিকেট পাড়ায়। এসব নিয়ে সমালোচনার মাত্রা এখন এতই বেশি হয়েছে, জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তামিম। এবার তার ব্যাটিং পজিশন নিয়ে আলোচনার আগুনে আরো ঘি ঢেলে দিয়েছেন টাইগার ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স। তিনি সংবাদমাধ্যমে গত পরশু বলেছেন, ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বরে খেললে তামিম ভালো করবেন। সিডন্সের সেই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার। গতকাল একটি টেলিফোন কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তামিমকে ব্যাটিং পজিশন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তখন চারে খেলানোর প্রশ্নকেই ‘স্টুপিড’ বলে আখ্যায়িত করেন টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক। এছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাকিবের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন তামিম। টাইগার অলরাউন্ডারের টেস্ট নেতৃত্ব নিয়েও কথা বলেন তিনি। তামিম জানান, সাকিবের নেতৃত্বে আগে দুবার খেলেছেন।
এদিকে সাদা পোশাকে মুশফিকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পা রাখার দৃঢ় অপেক্ষায় আছেন টাইগার ওপেনার তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আর ১৯ রান তুলতে পারলেই এই পাঁচ হাজারি ক্লাবে নাম তুলবেন তিনি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে আগামী ১৬ জুন প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে টাইগাররা। সেই ম্যাচ দিয়েই ব্যাটিং আক্ষেপ মেটাতে মরিয়া তামিম। এছাড়া ব্যাট হাতে ক্রিকেট মাঠে তামিমের দাপট নতুন কিছু নয়। টেস্ট আর ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ে তার বিকল্প এখনো পায়নি বাংলাদেশ। ইতিপূর্বে কখনো তার ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে তাই প্রশ্নও ওঠেনি। দেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে জাতীয় দল, সবখানে তামিমকে দেখা গেছে ওপেনারের ভূমিকায়। প্রায় দেড় দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তামিম ৩৭০টি ম্যাচ খেলে ব্যাটিং করেছেন ৪২৯ ইনিংসে। যেখানে ৪২৮ ইনিংসেই তামিম ছিলেন ওপেনার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একটিমাত্র ইনিংসে পাঁচ নম্বরে নামতে হয়েছে তামিমকে। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রæম টেস্টে ফিল্ডিংয়ে ৪৯ মিনিট বাইরে থাকার সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ঘোষণা করায় তামিমকে বাধ্য হয়ে দেরিতে নামতে হয়। পাঁচ নম্বরে নেমে করেছিলেন ৩৯ রান। ওপেনিংয়ে তামিমের চেয়ে সাফল্য পাওয়া দ্বিতীয় টাইগার ব্যাটার আর একটি খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু গতকাল টেস্টে তার চারে ব্যাটিং করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তামিম বলেন, আমি জানি না যে প্রশ্নটা করেছে ওর মাথার মধ্যে কী আছে না আছে। কিন্তু প্রশ্নটা ছিল খুবই স্টুপিড। আমি নিজে চারে ব্যাটিং করার কোনো কারণ খুঁজে পাই না। আমি মনে করি, ১৭ বছর আমি ওপেনিংয়ে ভালোই করছি। আমি নিজের কাছে চারে ব্যাটিং করার কোনো কারণই খুঁজে পাই না।
একই সময়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন সাকিব ও তামিম। দুজনের ক্যারিয়ারও এগিয়েছে সমানতালে। একজন ব্যাট হাতে দেশসেরা, আরেকজন ব্যাটে-বলে সমানতালে নিজেকে পরিণত করেছেন দেশের সেরা ক্রিকেটার। এর আগে ২০০৯ সালে সাকিবকে যখন অধিনায়ক করা হয় তার ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ পান তামিম। তিন বছর তাদের দুজনের কাঁধেই ছিল জাতীয় দলের দায়িত্ব। তিন বছর পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তামিম-সাকিবকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তারা দুজন সময়ের বিবর্তনে ফের জাতীয় দলের নেতৃত্বেও দায়িত্ব পেয়েছেন ভিন্ন ফরম্যাটে। সাদা পোশাকে এখনো টাইগারদের অবস্থা ভালো নয়। ফলে ওয়ানডে অধিনায়ক বিশ্বাস করেন সাকিবের চৌকস ও চমৎকার নেতৃত্বে আগামী ২-৩ বছরেই ভালো অবস্থানে যাবে বাংলাদেশ। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গতকাল সাকিবকে প্রশংসায় ভাসিয়ে তামিম বলেনে, আমি ওর অধিনায়কত্বে দুবার খেলেছি। অধিনায়কত্ব রকেট সায়েন্স নয়। আমরা সবাই জানি তার খুব ভালো ক্রিকেটীয় জ্ঞান আছে। আমি নিশ্চিত টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব করা সহজ নয়। এই একটা সংস্করণে ফলটা খুব বেশি আমাদের পক্ষে আসে না। আমি যখন অধিনায়ক হয়েছি আমি বলেছি, আমাকে অনেক সময় দিতে হবে। আমার মনে হয় সাকিবের জন্য এমন হওয়া উচিত। তারও লম্বা সময় দরকার। এটা এমন একটি সংস্করণ যেখানে আমরা খুব শক্তিশালী নয়। তার পরিকল্পনা, নেতৃত্ব সব কিছুই দারুণ। আমাদের সবার সহযোগিতা থাকলে হয়তো ২-৩ বছরে দারুণ একটি টেস্ট দল হবে।
এদিকে তৃতীয় বারের মতো টেস্ট নেতৃত্বে ফিরেছেন সাকিব। মুমিনুল হক স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়ার পর লাল বলে এই অলরাউন্ডারের ওপর আবারো দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত দুবার সাকিবের নেতৃত্বে মোট ১৪ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ।
তাতে জয় ছিল তিনটিতে, হার ১১টি। মুমিনুলের নেতৃত্বে খেলা ১৭ টেস্টেও জয় তিনটি, ড্র দুটি ও হার ১১টি। তবে মুমিনুলের হাত ধরে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়টি এসেছে। তাই আগামীতে সাদা পোশাকে সাফল্য পেতে হলে অধিনায়ক সাকিবকে সময় দিতে হবে বলে মনে করেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়