ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

রাসায়নিক সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই বিষাক্ত এ কেমিক্যালযুক্ত পানি যাতে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশতে না পারে সেবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম। বিস্ফোরণের দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ডিপো কর্তৃপক্ষ সেখানে কী পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ মজুত ছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭০ কানি জমিতে গড়ে ওঠা বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ৫০০ মিটারের একটি টিনশেডের ভেতর মজুত ছিল বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিক। এছাড়া আমদানি-রপ্তানির জন্য বিভিন্ন পণ্যও এ ডিপোতে রাখা হতো। গত শনিবার রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বাইরে ছড়িয়ে যায়। গতকাল রবিবার সকাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসব রাসায়নিক যাতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সেলক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। গতকাল চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর ব্যাটালিয়ন-১ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল রবিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, এখানে ২টি ড্রেন ছিল, যা বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল চলে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার টিম ড্রেনগুলো ব্লক করে দিতে কাজ করছে যাতে ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল যাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকে।
কর্নেল মনিরা সুলতানা বলেন, কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেমিক্যাল যাতে ড্রেনের মাধ্যমে সমুদ্রে না ছড়াতে পারে, সেজন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করতে সেনাবাহিনীর বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের শতাধিক সদস্য কাজ করছেন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলে কেমিক্যাল সমুদ্রে ছড়াতে পারে। এতে সমুদ্রের পানি এবং মৎস্য ও জলজ সম্পদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে আমাদের এ উদ্যোগ। তিনি আরো জানান, অন্তত ২৭টি কেমিক্যাল ভর্তি কন্টেইনার ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এর মধ্যে একটি কন্টেইনারে বিস্ফোরণ হয়। বাকি কন্টেইনারগুলো সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তবে গতকাল রবিবার বিকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ থেকে বঙ্গোপসাগরে কেমিক্যাল ছড়িয়ে পড়েনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন, তারা সার্ভে করছেন। যে বড় নালা বা খাল দিয়ে পানি সাগরে যায় সেটি বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনার ১৯ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নানা নাটকীয়তার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে নিজের প্রতিষ্ঠানের সাফাই গেয়েছেন স্মার্ট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান চিটাগং ডেনিম মিলস লিমিটেডের জিএম (এডমিন) অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শামসুল হায়দার সিদ্দিকী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, ডিপোতে মজুতকৃত রাসায়নিকের সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন মালিকপক্ষের এ প্রতিনিধি। তিনিও সাংবাদিকদের মতো ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহের জন্য এসেছেন বলে জানান। অথচ যে রাসায়নিকের কারণে অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, সেই রাসায়নিকের বিষয়ে কোনো তথ্যই জানাতে পারেননি এ কর্মকর্তা। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের করা মন্তব্যের বিপরীতে তিনি বলেছেন, ‘আমিও এই মাত্র ঢাকা থেকে এসেছি। তদন্ত করে দেখি তারপর বাকিটা বলা যাবে।’ তিনি বলেন, আমাদের যেসব ওয়ার্কার (শ্রমিক) মারা গেছে, যারা আহত হয়েছে তাদের যাবতীয় চিকিৎসাসহ ক্ষতিপূরণ বাবদ আমৃত্যু যা যা প্রয়োজন সবই আমরা করব। এজন্য আমরা অলরেডি লিস্ট করা শুরু করেছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়