মাগুরা প্রতিনিধি : শালিখা উপজেলা সদরের আড়পাড়ায় সিলগালা করে দেয়া অবৈধ একটি ক্লিনিকে নার্সের অপারেশনে নির্জনা খাতুন (১৩) নামে এক কিশোরী মারা গেছে। নিহত নির্জনা শালিখার পুকুরিয়া গ্রামের নাজমুল মোল্যার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গতকাল রবিবার সকালে ঘটা এ ঘটনায় অভিযুক্ত ক্লিনিক মালিকের স্ত্রী ও মাগুরা সদর হাসপাতালের স্টাফ নার্স করিমুন্নেছাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। করিমুন্নেছার স্বামী বাচ্চু মিয়া পালিয়ে গেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চালিয়ে আসা আল হেরা প্রাইভেট হাসপাতাল নামে ক্লিনিকটি গত ২৯ মে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। কিন্তু এ নির্দেশ অমান্য করেন করিমুন্নেছা তার স্বামী বাচ্চু মিয়ার সহায়তায় গোপনে ওই ক্লিনিকে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে রবিবার সকালে ওই কিশোরীকে অবৈধভাবে নিজেই অপারেশন করলে ভুল চিকিৎসায় মারা যায়। নিহতের চাচা ডাবলু মোল্যা অভিযোগ করেন, শনিবার পেটে ব্যথা নিয়ে নির্জনাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকাল ৭টার দিকে তার অ্যাপেনডিসাইটিস অপারেশন করেন নার্স করিমুন্নেছা। এর কিছুক্ষণ পরই মেয়েটি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে দ্রুত যশোরে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ১০টার দিকে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে দুপুরে মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান, শালিখা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইনচার্জ ডা. আবজাল হোসেন ও শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে নার্স করিমুন্নেছাকে গ্রেপ্তার করেন।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান জানান, করিমুন্নেছা নিজে যদি অপারেশন করে থাকেন তাও অপরাধ আবার একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে যদি কোনো ডাক্তারকে প্রাইভেট ক্লিনিকে সহায়তা করেন সেটিও অপরাধ। আমরা তার বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশারুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত নার্স কারিমুন্নেছাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।