ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

খেলাপি ঋণে রেকর্ড ভঙ্গ! : তিন মাসে ১০ হাজার কোটি বেড়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নানা সুবিধায়ও খেলাপি ঋণ কমছে না; বরং লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছেই। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে এটি মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, এ যাবতকালের সর্বোচ্চ অঙ্ক। আর মাত্র তিন মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে এসব তথ্য।
২০২২ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তিন মাস আগেও ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর গত বছরের মার্চের তুলনায় খেলাপি বেড়েছে ১৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। এর আগে, ২০২১ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২০-২১ সালজুড়ে কয়েক দফায় করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কোনো ঋণ পরিশোধ না করে কিংবা সামান্য পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ ছিল। এ সুবিধার বেশিরভাগই শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এর পরপরই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, খেলাপিরা মনে করেন, খেলাপি হলেও সমস্যা নেই, বরং সুবিধা পাওয়া যায়। এ কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ার কথা বলে এরই মধ্যে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কেউ ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি না করার দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
খেলাপি বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে : মার্চ শেষে রাষ্ট্রীয় সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ও বেসিকে এ ছয় ব্যাংকের মোট ঋণ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ২০ দশমিক ০১ শতাংশ।
টাকার অঙ্কে খেলাপি বেশি বেসরকারি ব্যাংকে : বেসরকারি ব্যাংকগুলো মার্চ পর্যন্ত ঋণ দিয়েছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৫৭ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ খেলাপি হয়ে আছে।
বিশেষায়িত তিন ব্যাংক : বিশেষায়িত কৃষি, প্রবাসীকল্যাণ ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন এ ৩টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা।
এ অঙ্ক তাদের বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ০১ শতাংশ। তারা বিতরণ করেছে মোট ৩৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকার ঋণ।
বিদেশি নয় ব্যাংক : বিদেশি মালিকানার নয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলো মোট ঋণ দিয়েছে ৬৩ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়