ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

আর্তমানবতার সেবায় চট্টগ্রামবাসী

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সীতাকুণ্ডে বেসরকারি মালিকানাধীন বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণে হতাহতদের সাহায্যার্থে ডিপো মালিক বা মালিক কর্তৃপক্ষকে পাওয়া যায়নি। তবে চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণ এসব আর্তপীড়িত মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। অকৃত্রিম মমতায় বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। মানবতার ছোঁয়া দিয়েছেন কোনো বাছবিচার না করেই। এসব অসহায় আহত মানুষকে রক্ত দেয়ার জন্য শনিবার রাত থেকেই ছাত্র-যুবা থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যেভাবে ছুটে গেছেন ঘটনাস্থল সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। মেডিকেলের চিকিৎসকরাই শুধু নন- মেডিকেলে পড়–য়া শিক্ষার্থী, নার্স ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে সবাই কোনো না কোনোভাবে এসব আহত মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। কোনো রোগী হাসপাতালে এলেই তার জন্য কী কী লাগবে কী করতে হবে, ওষুধ কিনে আনা থেকে শুরু করে সব কাজই যে যার সাধ্যমতো করেছেন, করছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী শনিবার রাতেই ক্যাম্পাস থেকে চলে এসেছিলেন আহত মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচানোর জন্য। সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, ছাত্র, সংস্কৃতিসেবী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, চট্টগ্রামের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়রের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের’ পক্ষ থেকেও নানাভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজম রনি তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শনিবার

রাত থেকেই রোগীদের জন্য পানি, ওষুধ খাবারসহ নানা সামগ্রী দিয়ে আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূরে বোয়ালখালী উপজেলা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ছুটে এসেছেন শাকপুরা স্কুলের শিক্ষক উৎপল বড়–য়া। কিন্তু তার কোনো আত্মীয় চিকিৎসাধীন নেই। তিনি বললেন, আমার দেশের মানুষের ওপর এমন বিপর্যয়, বিপদ নেমে এসেছে। এমন সময় আমি ঘরে বসে থাকি কি করে বলুন? মানবতাবাদী এই শিক্ষককে গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্তও দেখা গেছে আহতদের সেবা করতে। তিনি যেসব রোগীর জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন হবে তাও যাতে সরকারের পক্ষ থেকে বিনা খরচে করা হয় সেজন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। চমেক হাসপাতালের সামনে একটি ফার্মেসি (ওষুধ বিপনি প্রতিষ্ঠান) শনিবার রাত থেকেই বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে গেছেন অকাতরে। এবারে ‘সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি’ তে চট্টগ্রামের নানা শ্রেণি-পেশার মানবিক নাগরিকরা যে আন্তরিকতা আর ঔদার্য দেখাচ্ছেন তা যদি সব সময় অব্যাহত থাকে তাহলে সত্যিই এক অনন্য মানবিকতার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে চট্টগ্রাম। গতকাল রবিবার দিনভর অফিস-আদালতসহ পথেঘাটে বাজারে সর্বত্রই ছিল সীতাকুণ্ডের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়ে নানামুখী আলোচনা। সেই সঙ্গে মানবিক সাহায্যের যে অবারিত হাত আর হৃদয় প্রসারিত হয়েছে আর্তমানবতার সেবায় তা যেন অব্যাহত রাখা যায় এমন প্রত্যাশাই চট্টগ্রামবাসীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়