ডিএমপি কমিশনার : জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই

আগের সংবাদ

বিপজ্জনক জেনেও সংরক্ষণে ত্রæটি

পরের সংবাদ

আমরা শোকাহত

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর খবরও বাড়ছে। একই সঙ্গে নিঃশেষ হচ্ছে বহু পরিবারের স্বপ্ন। চট্টগ্রামের আকাশ-বাতাসে এখন শুধুই পোড়া গন্ধ। চারপাশ ভারি হয়ে উঠেছে দগ্ধ ও নিহতদের স্বজনদের কান্নায়। এ ঘটনা মর্মান্তিক। বেদনাদায়ক। গতকাল বিকেলে এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এর মধ্যে আটজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়েছেন চার শতাধিক। হতাহতের সব পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে। প্রথমে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই আগুন এতটাই তীব্র ছিল যে, ফায়ার সার্ভিস দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। আর আগুনে পুড়ে লাশগুলো এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে- ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া এই লাশ হস্তান্তর করা সম্ভব নয়। মূলত কিছু অপরিণামদর্শী মানুষের লোভের কারণে বারবার অগ্নিকাণ্ডের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ২০১০ সালে নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ১২৪ জন। এছাড়া ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় রাসায়নিকের গুদাম বিস্ফোরণ থেকে লাগা আগুনে পুড়ে মারা গেছে আরো ৭১ জন। ঠিক একইভাবে কিছুদিন আগে আরমানিটোলায় মারা গেছে ৫ জন। সীতাকুণ্ডের ঘটনাটিও ব্যতিক্রম নয়। আমরা নিমতলীর ঘটনা থেকে শিখিনি, চুড়িহাট্টার ঘটনা থেকে শিখিনি, সীতাকুণ্ডের ঘটনা থেকেও শিখব না। প্রতিটি বিস্ফোরণের কারণ ছিল রাসায়নিক দ্রব্য। বিএম ডিপোতে প্রায় ৫০ হাজার কন্টেইনার ছিল। এর মধ্যে বেশ কিছু কন্টেইনারে দাহ্য পদার্থ ছিল। কন্টেইনারগুলো বিস্ফোরণে এত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, এমন সব দাহ্য রাসায়নিক ডিপোতে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর মালিকপক্ষ সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। বারবার বিস্ফোরণের কারণে আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে। আগুন কিছুটা নিভে আসার পর পুনরায় কন্টেইনার ডিপোর ভেতরে নতুন করে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। কোন কন্টেইনারে কী পণ্য আছে তা নিশ্চিত নয় বলে আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে। এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ও ছবি নেয়া, আগুনের কারণ জানা, বিদ্যুৎ অফিসের প্রত্যয়নপত্র নেয়া, স্থানীয় থানায় মামলা, আগে আগুন লেগেছিল কি-না, কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল কি-না, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র আছে কি-না, ফায়ার সেফটি প্ল্যান গ্রহণ করেছিল কি-না- তা তদন্ত কমিটিকে জানতে বলা হয়েছে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক। হতাহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। হে প্রভু! এই লাশের সারি, এই মৃত্যুর মিছিল, আহত আর স্বজন হারা মানুষের এই আর্তনাদ আর দীর্ঘায়িত না হোক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়