পদ্মা সেতুর উদ্বোধন : সারাদেশে উৎসব হাতিরঝিলে হবে লেজার শো

আগের সংবাদ

সর্বনাশা ধ্বংসযজ্ঞের দায়ভার কার : নিহত অর্ধশত, দগ্ধ-আহত আড়াইশর বেশি, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মজুতের অনুমতি ছিল না, ২৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

পরের সংবাদ

প্রাণভয়ে পালাল গ্রামবাসী : মিয়ানমারে কয়েকশ বাড়িঘর পুড়িয়ে দিল সামরিক জান্তা

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে স্থানীয় মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে চালানো তিন দিনের অভিযানে শত শত বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে দেশটির জান্তা বাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দা এবং গণমাধ্যম বলছে, গত সপ্তাহে তিন দিন ধরে উত্তরাঞ্চলের কিন, আপার কিন এবং কে তাউং গ্রামে শত শত ভবনে আগুন দিয়েছে সৈন্যরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শত শত গ্রামবাসী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। গতকাল শনিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু কির নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
অভ্যুত্থানের পর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে ভয়াবহ সংঘর্ষ এবং রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধের ঘটনা দেখা গেছে। স্থানীয় বিদ্রোহীগোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সদস্যরা নিয়মিত জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পিডিএফ মিলিশিয়াদের কার্যকর লড়াই জান্তা বাহিনীকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। এই মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান চালাতে গিয়ে অসংখ্যবার বিমান হামলাও করেছে জান্তা সৈন্যরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেছেন, গত ২৬ মে সৈন্যরা গ্রামের দিকে এগিয়ে আসার সময় ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এ সময় শত শত গ্রামবাসী কিন ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। পরের দিন সকালে সৈন্যদের চলে যাওয়ার আগে আমরা গ্রাম থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখেছি।

তিনি বলেন, দুই শতাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে… আমার বাড়ি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। শুধু কংক্রিটের ভিত্তি বাকি আছে।
ড্রোন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের গ্রামগুলো থেকে আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়ছে। চিন্দউইন নদীর প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধোঁয়ার এই কুণ্ডলি দেখা গেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ড্রোনের একটি ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাওয়া একটি ক্লিনিকের অবস্থান কে তাউং গ্রামের অবস্থানের সঙ্গে মিলে গেছে। এএফপির ডিজিটাল ভেরিফিকেশন প্রতিনিধিরা ফুটেজটি গত সপ্তাহের আগে অনলাইনে দেখা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে ফুটেজটি যে ওই অঞ্চলের তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
কে তাউং গ্রামের বাসিন্দা আয়ে তিন ছদ্মনাম ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, সৈন্যরা অভিযান চালিয়ে আমাদের বাড়িঘর ধ্বংস করেছে। তারা মোটরচালিত নৌকাগুলোও পুড়িয়ে দিয়েছে। এসব নৌকা আমরা পরিবহন এবং গ্রামের খাবার বহনের জন্য ব্যবহার করি। তিনি বলেন, আমার জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। কারণ আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি… এবং জীবিকা চালানোর মতো আমার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইট চিত্রে গত সপ্তাহে কে তাউং এবং কিন গ্রামের সঙ্গে মিলে যাওয়া ভৌগোলিক অবস্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। সৈন্যরা বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমারের জান্তা। একই সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ পিডিএফের যোদ্ধারা আগুনের সূত্রপাত করেছে বলে অভিযোগ করেছে সামরিক সরকার। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জান্তা প্রধান মিং অং হ্লেইং বলেছিলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পাল্টা অভিযান চালানোর সময় যতটা সম্ভব হতাহত কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক গেøাবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারকে তিনি বলেন, এখন দেশ শান্ত আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়