পদ্মা সেতুর উদ্বোধন : সারাদেশে উৎসব হাতিরঝিলে হবে লেজার শো

আগের সংবাদ

সর্বনাশা ধ্বংসযজ্ঞের দায়ভার কার : নিহত অর্ধশত, দগ্ধ-আহত আড়াইশর বেশি, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মজুতের অনুমতি ছিল না, ২৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

পরের সংবাদ

নাগরিকসেবা বাড়ানোর উদ্যোগ : ‘কমান্ড সেন্টার’ আধুনিকায়ন করছে ডিএনসিসি

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নাগরিকসেবা সমূহ সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পৌঁছে দিতে এবং জনদুর্ভোগ কমাতে ‘কমান্ড সেন্টার’ আধুনিকায়নের ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে ‘ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ম্যানেজমেন্টের’ আওতায় মিরপুর-১২ থেকে ফার্মগেট হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত যে এমআরটি-৬ লাইনটি হচ্ছে তাকে কেন্দ্র করে কীভাবে সাধারণ মানুষের কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায় এ বিষয়ে নানা পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশান-২ নগরভবনে আয়োজিত সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে সেবা পাবেন নাগরিকরা : বর্তমানে নগর ভবনের ২য় তলায় একটি কমান্ড সেন্টার রয়েছে। কিন্তু সেটা রয়েছে হার্ডওয়ারে, সেটা কীভাবে পরিচালিত হবে তা জানা ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই কমান্ড সেন্টারে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি, পুলিশের প্রতিনিধি ও নিউইয়র্ক সিটির প্রতিনিধি মিলে তারা পুরো কমান্ড সেন্টার মনিটর করছে। কোথায় কোন সমস্যা তা তাৎক্ষণিক তারা জানতে পারছে। পুরো সিস্টেমটি তারা একটি ফাইলের মধ্যে নিয়ে কাজ করছে। এর মাধমে সেখানকার সিটি করপোরেশন প্রতি মাসে আইনের মাধ্যমে জরিমানা করে ৪শ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। এভাবে ডিজিটাল সিস্টেমে না গেলে ঢাকা শহরবাসীর সঠিক সেবা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব নয়। তাই একইভাবে আমরা নিউইয়র্কের আদলে নতুন করে এই কমান্ড সেন্টার পরিচালনা করব।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, কমান্ড সেন্টার থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে জলাবদ্ধতার স্পট ট্র্যাকিংসহ, ময়লার গাড়ি, মশক কর্মীদের মুভমেন্ট ট্র্যাকিং, সবার ঢাকা অ্যাপ ক্যাম্পেইন মনিটরিংসহ রেভেনিউ মনিটরিং, খাল, ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজের অ্যাস্কেলেটর, এসটিএস,

স্মার্ট স্ট্রিট লাইটসহ বিভিন্ন সেন্সর মনিটরিং করা হবে। সব সেক্টরের সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সেন্টার নিয়ন্ত্রিত হবে।
আইসিএম প্রজেক্টের (ইনডোর করিডোর ম্যানেজমেন্ট) মাধ্যমে নগরবাসীর আর্থিক উন্নয়ন : মেয়র বলেন, সম্প্রতি এমএমসি (মেয়র মাইগ্রেশন কাউন্সিল) ও বিশ্বব্যাংকের আমন্ত্রণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে যাই। সেখানে বাংলাদেশের বৈরী জলবায়ুর প্রভাবে যা যা ঘটছে তা তুলে ধরাসহ জলবায়ু ফান্ডের দাবি জানাই। একই সঙ্গে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হলে কেমন হবে আমাদের নাগরিকসেবা সমূহ, তার বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন শহরের বিভিন্ন স্থান, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে মতবিনিময় করা হয়। কীভাবে সাধারণ মানুষের কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায় সেই বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ম্যানেজমেন্টের আওতায় মিরপুর-১২ থেকে ফার্মগেট হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত যে এমআরটি-৬ লাইনটি হচ্ছে তাকে কেন্দ্র করে শহরে যে পরিবর্তন আসবে সেটার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। কীভাবে সাধারণ মানুষের কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায় সেই বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
এক্ষেত্রে মেট্রোরেলের নিচের কানেকটিভিটি কীভাবে মেনটেইন হবে, কী ধরনের ফুটপাত হবে, মানুষ ট্রলি নিয়ে কীভাবে রেলের কাউন্টারে পৌঁছাবে, সাইকেল কোথায় রাখা হবে সেই অনুযায়ী সাইকেল লেন করা, টোটাল ডিজাইন বিশ্বব্যাংক করে দেবে। এর সঙ্গে ৫০টি ইলেকট্রিক্যাল বাস চলবে সেটিও তারা ফান্ডিং করবে। এদিকে সিভিল এভিয়েশনের ভেতরে ডিএনসিসি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে যে খাল খনন করেছে সেই খালের পাড় বাঁধাই করা, সাইকেল লেন এবং বৃক্ষ রোপণ কার্যক্রম এই আইসিএম প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম মেয়র মাইগ্রেশন কাউন্সিল এবং বিশ্বব্যাংকের আমন্ত্রণে গত ১৫-২৬ মে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তিনি এমএমসি লিডারশিপ বোর্ড মিটিং, ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্ট, জেনারেল অ্যাসেম্বলি মিটিংসহ ইত্যাদি প্রোগ্রামে অংশ নেন। তিনি সফরকালে নিউইয়র্ক শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, স্ট্রিট পার্কিং, বাস টার্মিনাল, পাইকারি বাজারের সরবরাহ পদ্ধতি বিষয়ে বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এছাড়া ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন সিটির ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, আরবান প্ল্যানিং, রাজস্ব আদায়, ক্রয় কাজের কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন।
তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রস্তাবিত করিডোর ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেন। ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণে আয়োজন করার জন্য তিনি বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়