ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

নক্ষত্রের প্রস্থান…

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত মঙ্গলবার কলকাতায় নজরুল মঞ্চে পারফর্ম করার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই থেমে যায় বলিউডের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কেকের হৃদস্পন্দন। গানে গানেই বিদায় নিয়েছেন তিনি, তবে এ গায়ককে ‘আলবিদা’ জানাতে গিয়ে
মন কাঁদছে অনুরাগীদের। কেকে’কে স্মরণ করলেন তারই কয়েকজন কাছের মানুষ

আমাদের প্রথম ব্রেক, প্রথম ছবি, প্রথম সফলতা একসঙ্গে
বিশাল ভরদ্বাজ

কেকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিভিন্ন মহল। পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ হিন্দিতে লেখা একটি আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে প্রয়াত এ গায়ককে স্মরণ করেছেন। ভরদ্বাজ লিখেছেন, কীভাবে তিনি এবং কেকে একসঙ্গে যাত্রা শুরু করেছিলেন।
একসঙ্গে একই সিনেমায় প্রথম সাফল্য পেয়েছিলেন। ফেলে আসা সেই দিনের স্মৃতি আরো একবার স্মরণ করলেন বিশাল। জানিয়েছেন দিল্লি থেকে একই সঙ্গে মুম্বাইতে এসেছিলেন তারা। কেকেকে নিজের ছোট ভাইয়ের মতো দেখতেন তিনি। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ছোট ভাই। একসঙ্গে দিল্লি থেকে এসেছিলাম। আমাদের প্রথম ব্রেক, প্রথম ছবি, প্রথম সফলতা একসঙ্গে- মাচিস। ছোড় আয়ে হাম ওহ গলিয়াঁ, লতাজির পানি পানি রে-তে দ্বিতীয় গানও গেয়েছিলেন। অগণিত সময়, অগণিত মুহূর্ত, অনেকটা যন্ত্রণা, সবটাই একটু একটু করে হারালো।
একাধিকবার বিশাল ভরদ্বাজের পরিচালনায় গান গেয়েছেন কেকে। তার পরিচালনাতে ১৯৯৬ সালে ‘ছোড় আয়ে হাম ওহ গলিয়াঁ’ গানটা গেয়েছিলেন। বিশাল ভরদ্বাজের সংগীত পরিচালনায় ‘রঙ্গুন’ সিনেমায়ও গেয়েছিলেন কেকে। লাইভ শো শেষ করেই মানুষটার চলে যাওয়ার মতো বড় আঘাত! এমনটা হবে কেউ ভাবতেও পারেনি। কেকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বলিউড তথা গোটা দেশ।

সব দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেল
অভিজিৎ ভট্টাচার্য

ঘটনার রেশ কাটতে বহু দিন লেগে যাবে গায়কের অনুরাগীদের। রেশ কাটবে না বলিউড থেকেও। কেন কেকে’কে কখনো ভোলা যাবে না? অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘ও এসেছিল, আমাদের জেনারেশনের জন্য একটা ‘থ্রেট’ হয়ে। আমি-শানু-উদিত- আমরা তিনজন বলিউডের গানের জগতে বিরাট আকার নিয়ে ছিলাম। পরের প্রজন্মে আমাদের সামনে হঠাৎই চ্যালেঞ্জ হিসেবে চলে আসে কেকে। এত প্রতিভা নিয়ে ও এসেছিল, গোটা বলিউড কেঁপে যায়।’
আরো বেশ কয়েকটি কারণে বাকিদের থেকে অনেক আলাদা ছিলেন কেকে। এমনই মত অভিজিতের। বলেছেন, ‘ও নিয়মিত পড়াশোনা করত। পড়াশোনা, পরিবার এসব নিয়ে সময় কাটাত। কোনো দিন কাজের বাইরে পরনিন্দা-পরচর্চা করতে কেউ দেখেননি ওকে।’
তবে এটাই শেষ কথা নয়। এর পরে অভিজিৎ বলেন, ‘হালের বহু গায়ক-গায়িকাদের তো দেখি। একের পর এক বিতর্ক। ইউটিউবে গান গেয়ে বিখ্যাত হয়েছেন। চলে গেলেন মঞ্চে গান গাইতে। আর তার পরে নেশা! মদ্যপান, ধূমপান তো ছেড়েই দিলাম- মাদকসেবন। এসব বিষয়ের মধ্যে কোনো দিন ছিল না কেকে। নতুন প্রজন্মের গায়ক হয়েও কোনো দিন এসব বিতর্কে জড়ায়নি। নেশা তো অনেক দূরের কথা।’
‘কিশোর কুমার, রফিজির পরে আমাদের প্রজন্ম বলিউডের গানের জগৎ শাসন করেছে। তার পরের প্রজন্মে যারা উঠে এলেন, তাদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতেই ছিল কেকে। যার হাতে ছিল বলিউডের সংগীতের অনেকটা দায়িত্ব, যাকে নিয়ে নতুন প্রজন্মের সংগীত পরিচালকরা সুরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্বপ্ন দেখে গিয়েছেন, সে আর রইল না। সব দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেল।’ আঘাত সামলাতে সামলাতে বললেন অভিজিৎ।

দুর্নীতি কিংবা ভেজাল কেকেকে স্পর্শ করতে পারেনি
শান

কেকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। শোক প্রকাশ করছেন সবাই। সহকর্মী, বন্ধুর একটি ভিডিও শেয়ার করে টুইটারে শোক প্রকাশ শানের।
ইন্ডাস্ট্রিতে শান এবং কেকের বন্ধুত্বের কথা কারো অজানা নয়। একসঙ্গে একাধিক গান গেয়েছেন, অনুষ্ঠান করেছেন। এ দিন নেটমাধ্যমে কেকের সঙ্গে স্টেজ পারফরম্যান্সের একটি ভিডিও শেয়ার করে শান লিখেছেন, ‘জীবন একটু একটু করে ভেঙে দেয় আমাদের। মাঝেমধ্যে একেবারে বিধ্বস্ত করে দেয়… কেকে চিরতরুণ হয়েই থেকে যাবে, বয়স বাড়লেও যার বড় হয়ে উঠতে আপত্তি ছিল বরাবর। দুর্নীতি কিংবা ভেজাল যাকে এতটুকু স্পর্শ করতে পারেনি। সহজ, সরল, মনের মতো করে জীবন কাটিয়ে গেল এত বছর।’
‘ইটস দ্য টাইম টু ডিসকো’, ‘আসমা’সহ একাধিক গানে একসঙ্গে গলা দিয়েছেন শান-কেকে জুটি। বলিউডে একাধিক জনপ্রিয় গানে দর্শকের মনে তারা জায়গা করেছেন। আর সেই গানের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবে তাদের বন্ধুত্ব। প্রিয় বন্ধু-সহকর্মী কেকেকে আচমকা হারিয়ে শোকস্তব্ধ শান।
:: মেলা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়