ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

তসলিমার বিরুদ্ধে সুইডিশ আদালতে মামলা

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য প্রচার, ব্যক্তিগত আক্রমণ, পেশাগত ক্ষতিসাধন এবং সম্মানহানির অভিযোগে বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে সুইডেনে একটি মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সুইডিশ পুলিশের কাছে মামলাটি দায়ের করেন প্রবাসী কবি ও নাট্যকার আনিসুর রহমান। বর্তমানে ভারতে বসবাসরত তসলিমা নাসরিন বলছেন, মামলার বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে ‘কোনো মিথ্যা কথা’ তিনি বলেননি।
২০১৭ সালে ঢাকার একটি নিউজ পোর্টালে ‘নকল দুনিয়া’ শিরোনামে তসলিমা নাসরিনের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। সেখানে সুইডেনের দগেন্স নিহেতার পত্রিকার সাবেক প্রধান সম্পাদক অরনে রুথ এবং আনিসুর রহমানসহ কয়েকজনের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন ‘নেতিবাচক মন্তব্য’ করা হয়। সম্প্রতি আনিসুর রহমান তার এক লেখায় নাম উল্লেখ না করে প্রবাসে থাকা কয়েকজন লেখক ও ব্লগারের সমালোচনা করেন। এরপর তসলিমার সেই পুরনো লেখাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়।
আনিসুর রহমানের অভিযোগ, তসলিমাকে ‘সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে’ বিভিন্ন দেশে কিছু ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তাকে নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্য এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ’ শুরু করেন। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে তসলিমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি।
বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য আনিসুর রহমান এক যুগের বেশি সময় ধরে সপরিবারে সুইডেনে বসবাস করছেন। তিনি সুইডিশ রাইটার্স ইউনিয়নের পরিচালনা পর্ষদেরও সদস্য। আনিসুরের লেখা কবিতা ও গদ্য বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার লেখা নাটক পড়ানো হয়। নরওয়ে ও সুইডেনের থিয়েটারে তার লেখা নাটকের মঞ্চায়ন হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের পাঠ্যক্রমে তার দুটি নাটক অন্তর্ভুত।
এতদিন পরে মামলা করার কারণ সম্পর্কে আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মিথ্যার বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদ করা এবং মিথ্যা প্রচারের কারণে নিরাপত্তা হুমকি আর পেশাগত ক্ষতি থেকে প্রতিকার চাওয়ার অধিকারকে আমি রক্ষা করতে চাই, বিলম্বে হলেও চাই। এর থেকে প্রতিকার পাওয়ার কথা শুরু থেকেই ভেবেছি। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করে উঠতে পারিনি। সেই সঙ্গে দেশে বিদেশে আমার শুভাকাক্সক্ষী বন্ধু সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে আর আইনি দিক খতিয়ে দেখে আইনজ্ঞদের পরামর্শ পেতে আমার কিছু সময় চলে যায়। আমার কর্মক্ষেত্রকেও বিষয়টি অবহিত করার একটা ব্যাপার ছিল।
মৌলবাদীদের হুমকিতে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর তসলিমা নাসরিন কয়েকটি দেশ ঘুরে এখন ভারতে থাকছেন। ‘নকল দুনিয়া’ শিরোনামের লেখাটি নিয়ে তিনি নিজের অবস্থানে অটল থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি যা লিখেছিলাম, সত্য লিখেছিলাম। মিথ্যে কিছু আমি লিখি না। লিখতে পারি না। মামলার কথা এই প্রথম শুনলাম। কোনো মিথ্যুক যদি মামলা করে করুক, তার মিথ্যেটা তখন জনসম্মুখে আরো একটু প্রকাশ পাবে। চিকিৎসকসা শাস্ত্রের ডিগ্রিধারী তসলিমা নাসরিন গত শতকের ’৯০-এর দশকে লেখালেখি শুরুর পর আলোচনায় উঠে আসেন। বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়ন নিয়ে উপন্যাস ‘লজ্জা’ প্রকাশের পর মৌলবাদীদের হুমকি ও ব্যাপক হইচইয়ের মধ্যে ১৯৯৪ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনি। ক্রমাগত জঙ্গি হুমকির মুখে কয়েকটি দেশ ঘুরে একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন তসলিমা। পরে ভারতে এসে সেখানেই বসবাস করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়