ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

‘আঙ্গোরে নদীভাঙন থেকে বাঁচান’ : ১২ বছরে ভাঙনে ৩০ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার আমিন বাজার থেকে জনতা ঘাট পর্যন্ত মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙনে গত ১২ বছরে ৩০ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি, ভিটেমাটি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাটবাজারসহ কৃষিজমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অসহায় পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার সোলেমান বাজারের সৈয়দপুর এলাকায় ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। এ সময় নদীভাঙনের শিকার অসহায় মানুষ আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আঙ্গোরে নদীভাঙনের হাত থেকে বাঁচান, নদী দুই-তিনবার করি আঙ্গো ঘরবাড়ি ভাঙি লই গেছে। এখন আবার ভাঙলে আমরা কোনাই যামু, কার কাছে যামু? আঙ্গো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারে কয়ে (বলে) পাথরের ব্লক ও জিও ব্যাগ দেই নদীর ভাঙন বন্ধ করেন।’
এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. বাহার চৌধুরী, চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন, ইউপি সদস্য মাহে আলম, সামছুল আলম বাহারসহ ভাঙনকবলিত এলাকার শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর নবী, মো. কবির, সামছুন নাহার, মো. রফিক অভিযোগ করে বলেন, ভাঙন রোধে বিগত কয়েক বছর পর্যন্ত নানা প্রতিশ্রæতি পেলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ তারা পাননি।
এমপি-মন্ত্রীর নিয়মিত প্রতিশ্রæতি দিন দিন হতাশ করে দিচ্ছে তাদের। তারা জানান, নদীভাঙনের কারণে আশ্রয়ের তেমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। দ্রুত এ ভাঙন বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে সুবর্ণচরের বিস্তীর্ণ এলাকা ও স্বর্ণদ্বীপ নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ২০১০ সাল থেকে মেঘনা নদীর এই ভাঙন শুরু হয়। গত ১২ বছরে প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো হাজার হাজার পরিবার ভাঙন আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। অনতিবিলম্বে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে সুবর্ণচর এবং স্বর্ণদ্বীপ নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, এখানে বিস্তীর্ণ এলাকা নদীভাঙনের কারণে হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বোচ্চ হারা হয়ে গেছে। নদী ভাঙা রোধে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সহানুভূতিশীল। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছে এখানে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় এখানে নদী যদি শাসন করা না হয়, তাহলে সহায়-সম্বলহীন মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে।
বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। সরকারপ্রধান সুদৃষ্টি দিয়ে পাথর ব্লক ও জিও ব্যাগ পেলে নদী শাসনের ব্যবস্থা করলে হাজার হাজার অসহায় মানুষ উপকৃত হবেন। তাই অবিলম্বে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়