ঢাকায় সিপিবির সমাবেশ কাল

আগের সংবাদ

টার্গেট এবার রাজপথ দখল : পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি

পরের সংবাদ

ভেজাল প্যারাসিটামলে ১০৪ শিশুর মৃত্যু : প্রতি পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ১৯৯১ সালে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের ও ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে মারা যাওয়া ১০৪ শিশুর প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায় করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে একটি গাইডলাইন তৈরি ও এন্টিবায়োটিকের মান যাচাইয়ে ল্যাবরেটরি টেস্ট করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে বিবাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন এডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান। আদালতের রায়ের পর রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার হলো বেঁচে থাকা। কিন্তু ভেজাল ওষুধের কারণে অনেককে মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারায় ভেজাল ওষুধের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান থাকলেও তা প্রায় কার্যকর হয়নি।
জানা যায়, ১৯৯১ সালে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের ভেজাল প্যারাসিটাল সিরাপ সেবন করে ৭৬ শিশু মারা যায়। এরপর ২০০৯ সালে রিড ফার্মার প্যারাসিটামল খেয়ে মারা যায় ২৮ শিশু। এ ঘটনায় ২০১০ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছিলেন। ওই রুলের বিষয়ে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত এ রায় দিলেন। রায়ে আদালত বলেন, ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ। ভেজাল ওষুধের অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(১) ধারা অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে। মৃত ১০৪ জন শিশুর প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ভেজাল ওষুধের কারণে শিশু মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না অধিদপ্তর।
এর আগে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনে ৭৬ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করেন ওষুধ প্রশাসনের পরিদর্শক আবুল খায়ের চৌধুরী। ড্রাগ আদালতের বিচারক ২০১৪ সালের ২২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম মালিক, ব্যবস্থাপকসহ তিনজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। অন্যদিকে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে ২৮ শিশু মারা যাওয়ার ঘটনায় ওষুধ কোম্পানিটির মালিকসহ

পাঁচজনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকার ড্রাগ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকেই খালাস দেন বিচারিক আদালত।
ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেননি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সাবেক ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়