ঢাকায় সিপিবির সমাবেশ কাল

আগের সংবাদ

টার্গেট এবার রাজপথ দখল : পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি

পরের সংবাদ

অন্ধকার

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রথম প্রথম বিরক্ত হয়েছিল জামিল। এখন মৌটুসী কাছে এলেই যেন ভালো লাগে। ধূ ধূ বালিয়াড়িতে বাতাস হলো- কখন বৃষ্টি এলো, বালি সরে গিয়ে হলুদ মাটিতে নরম নরম সবুজ ঘাসে কখন ভরে গেল- তার কোনো হদিস খুঁজে পায় না জামিল।
মাথার কাছের জানালাটা দিয়ে রাস্তার ওপাশে খ্রিস্টানদের কবরখানাটা দেখা যাচ্ছে। ভোরের ছোপ ছোপ কুয়াশা লেগে ক্রসচিহ্নিগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। পাঁচিলের লতা-গুল্মের ওপর শিশির চিক চিক করে। জামিল বিছানা ছেড়ে চেয়ারে গা এলিয়ে দেয়। বুড়ো ডিকেন্স হ্যারি লাঠিতে ঠক ঠক শব্দ তুলে প্রাতঃভ্রমণ শেষে ঘরে ফিরে যাচ্ছেন।
ওর একটা মেয়ে আছে। জেনি। মৌটুসীর বয়সি, এয়ার হোস্টেস। বাবা-মেয়ের সংসার- আর কেউ নেই। খুবই নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ হ্যারি। তার একমাত্র বন্ধু ওই মেয়েটা। মেয়ে যখন থাকে না তখন বই। বই চোখে এঁটে সারাদিন কেটে যায় তার। কখনো কখনো টিকেট করে মাছ ধরেন লেকে। সময় করে জেনিও পাশে যেয়ে বসে। বাবার সাথে সারাক্ষণ বক বক করে মাছকে ছিপের ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না। বুড়ো তখন খুব খোশ মেজাজে থাকেন। আর অন্য সময় কেমন মনমরা- একাকিত্বে তার দিন কেটে যায়- অনেকটা জামিলের মতো।
জামিল ঘরের চারিপাশে চোখ বুলায়। এই ঘরটাতে এই সব দরজা-জানালায় ঝোলানো চরকা-ছাপা পর্দাগুলো, সেলফের বই আর এই ইজি চেয়ারটা ছাড়া প্রকাণ্ড এই বাড়িটাতে তার আর কোনো বন্ধু নেই। অবশ্য টুম্পা আছে। কিন্তু রজনী তাকে বাঘিনীর মতো আগলে রাখে। জামিলের ত্রিসীমানায় তার প্রবেশ নিষিদ্ধ।
সামনের আয়নাতে প্রতিবিম্ব একটু নড়ে উঠতেই চমকালো জামিল। কপালে সূ² দু’তিনটে ভাঁজ- যেন কোন ভারিক্কী চেহারার এক ভদ্রলোক বসে আছেন। বেশ পদস্থ ব্যক্তি নিঃসন্দেহে। অথচ বসে থাকা এই লোকটার বুকের চামড়া উল্টে এক পলকে দেখা যায় ধূসর স্যাঁতসেঁতে আকাশ। সেখানে কেবলই নিভৃত নিঃসঙ্গতা। ফ্যাকাশে নীল দুঃখের নামাবলী শুধু। কেউ জানে না। অথচ মৌটুসী জেনে গেল। কত সহজেই সে এগিয়ে এসে জানিয়ে দিলো ….
‘স্যার, বাসায় যাবেন না?’
জামিল তখন চুপচাপ বসেছিল। বিকেলের পরিশ্রান্ত মতিঝিলের চওড়া রাস্তাটা থেকে চোখ ফিরিয়ে আনলো। দেখলো ভেজানো দরজা ঠেলে কৌতূহলী মেয়েটা চলে এসেছে তার রুমে। তারই অফিসের জুনিয়র এক্সিকিউটিভ কাঁধে ব্যাগ ফেলে সপ্রশ্ন বড় বড় চোখ নিয়ে চেয়ে আছে মেয়েটা। এমন প্রশ্ন কেউ তাকে করে না। করতে সাহস পায় না। অন্তত অফিসের যারা তার কড়া মেজাজের কথা জানে। তাই এই সাহসী মেয়েটাকে ভালো লেগেছিল।
পাল্টা প্রশ্ন করেছিল, ‘তুমি যাবে না?’
তার সাহসী চোখের তারায় লুকানো ভয়ের আভাসটা এই প্রশ্নে উজ্জ্বলতার ছটা হয়ে ছড়িয়ে পড়লো। হাত উল্টে বললো, ‘যাবো। পাঁচটার আগে কী বেরুবার জো আছে? খুব যে ঝামেলার কাজ করি।’
মেয়েটির ষোড়শী ঠোঁটে পাকামী দেখে হাসি পেলো জামিলের।
‘খুব ঝামেলার কাজ বুঝি?’
‘তা আর বলতে!’
এভাবেই শুরু এবং এভাবেই জামিলের কড়া শাসনের দুর্ভেদ্য দেয়াল পেরিয়ে নির্ভয়ে নিঃসংকোচে তার উইক কর্নারগুলো আবিষ্কার করে ফেললো মৌটুসী। সামনের ওই আয়নাটা প্রায় তার জন্মের পর থেকে এ ঘরে তাকে দেখলো। তবু সে শুধু পোশাকি চেহারাটার কথাই বললো। আয়নাটায় আবছা ধুলোর আস্তরণ পড়েছে। রজনী হয়তো ক’দিন এ ঘরে আসেনি। রজনীই মাঝে মাঝে ঘরটি গুছিয়ে রেখে যায়। আয়নাটাও তখন মোছা পড়ে।
রজনী সামনে আসে না অনেকদিন। কাজের ছেলেটা খাবার দিয়ে যায়। সে অফিসে বেরিয়ে গেলেই রজনী আসে। তখন ময়লা কাপড়গুলো কাঁচতে পাঠায়। চাদরটাও বদলে দেয়। আর যা কিছু সব করে রাখে। সারা ঘরে রজনীর স্পর্শ তার অঙ্গার বুকে স্বর্গীয় আনন্দ এনে দেয়। ঘরটাতে পা রাখলেই বাইরের সব ক্লান্তি অবসাদ নেমে যায়। সে জন্য রজনীর কাছে সে কৃতজ্ঞ।
ওঘরে রজনী কথা বলে। হাসে। টুম্পাকে আদর করে। স্কুলে দিয়ে আসে। স্বামীর সঙ্গে গল্পে বিভোর হয়। টুকরো টুকরো কথা-হাসি এই সব জোড়াতালি দিয়ে রজনী সুখী। রজনীর সব সুখে সেও খুশি। গাড়ি-বারান্দার ছাদে জামিল অনেক রাত অবধি বসে থাকে। আকাশে চাঁদ উঠলে রজনীরাও বড় ছাদে আসে। অনেক উঁচু থেকে তাদের কথার আওয়াজ ভেসে আসে। ওর স্বামী খুবই রোমান্টিক। কিন্তু ভদ্রলোকের সময় কম। তবুও যেটুকু সময়- সবটুকুই রজনীর। রজনীকে গান গাইতে বললে সে গায়- ‘আজি জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে….’ দরদ ঢেলে গায় সে।
অনুও গাইতো এই গান। রজনী জানে। অনুর বন্ধু রজনী। জামিলের সিগারেটের আলোটা দেখে রজনী এই গানই গায় অনেকটা ওকে শুনিয়ে। রজনীর স্বামী গল্প করে। মা-বাবার মধ্যিখানে বসে টুম্পাও শোনে গল্প। গল্পের ভেতর রজনী হেসে উঠে। আলো অন্ধকারে তার হাসি খান খান হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারধারে।
এক সময় রজনীরা চলে যায়। সব শব্দ থেমে গেলে জামিল বুঝতে পারে- ওরা চলে গেছে। জামিলও নিজের ঘরে চলে আসে। সাদা আলোটা নিভিয়ে গিয়ে সবুজ আলো জ্বালে। এক সময় শুয়ে পড়ে। ঘুম আসে না, ভাবনা আসে। চোখ বুজে ঘুম আনতে চেষ্টা করে। সবুজ আলোয় ভেড়া গোনে… এক-দুই-দিন-চার-পাঁচ…
এক-দুই-তিন-চার…. ঘুম আসে না তবুও। কেবলই ভাবনা আসে। হাজারো রকমের। রজনীর কথাও থাকে। বাবা মারা যাবার পর রজনীর বিয়ে হলো। মা তখন কেমন উদাস হয়ে বসে থাকতেন এই গাড়ি-বারান্দার ছাদে। জামিল টবে ফুল ফুটিয়েছিল অনেক। সেগুলো তিনি দেখাশোনা করতেন। রজনী তখন কাছে থাকতো না। নতুন বিয়ের পর কোনো মেয়েই কাছে থাকে না। শুধু বেড়াতো রজনী।
তারপর টুম্পা এলো। মা যেনো এ দিনের আগমনের অপেক্ষাতেই ছিলেন। এ বাড়িতেই তিনি টুম্পার দোলনা রাখার ব্যবস্থা করলেন। রজনীর স্বামী মায়ের অবাধ্য হতে পারলো না। এ বাড়িতেই রজনী তার সন্তান আর স্বামী নিয়ে ভাই জামিলের সাথে ঘর ভাগাভাগি করে নিলো। মা নিজেই এ ব্যবস্থা করেছিলেন। তুলতুলে টুম্পাকে নিয়ে তখন তরতরিয়ে সময় কেটে যেতো।
একদিন বাবার মতো মাও চলে গেলেন। রজনী খুব কেঁদেছিল। তারপর ধীরে ধীরে জামিলের ওপর মায়ের যে অভিমান ছিল তা রজনীতে বর্তাল। ক্রমশ রাগ এবং রাগ থেকে ঘৃণা। রজনী জামিলকে ঘৃণা করতে শুরু করলো। অপরাধ অনুকে বিয়ে না করা। অনুতো অন্যপূর্বা- তাকে বিয়ে করা যায় না। রজনী জানে অথচ মানে না। তার মতে অন্য সবাই অনুর বন্ধু ছিল, কিন্তু জামিল ছিল সাচ্চা প্রেমিক।
তখন অনুর গৃহে শনির দশা চলছিল। এই দশার জন্য একবাক্যে সবাই জামিলকে সাব্যস্ত করলো। ওর বন্ধুগুলো এই ফাঁকে কেটে পড়লো। অনু চমৎকার অভিনয় করে মাকে, রজনীকে বুঝিয়ে দিলো, জামিলকে একদিন গ্রহণ করতেই হবে। সে অপেক্ষায় থাকবে…।
কী বোকা মেয়ে রজনীটা! শুধু মিথ্যেই ঘৃণা করলো জামিলকে। অনুর ডিপ্লোম্যাসি একটুও ধরতে পারলো না বরং সবকিছু বেমালুম হজম করে গেল।
দ্রুত কাপড় পরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো জামিল। টুম্পা দাঁড়িয়ে ছিল গেটে। বোধহয় স্কুলে যাবে। রজনীর দেখা পেলো না ধারে কাছে। গাল টিপে আদর করতই মিষ্টি করে হেসে টুম্পা বললো, ‘যাঃ এত বড় মেয়েকে কেউ গাল টেপে?’
সুন্দর হচ্ছে মেয়েটা। বাবার মতো ভদ্র স্বভাবের হয়েছে। রজনীর মতো হিংসুটে হয়নি এই রক্ষে! টুম্পার সুরে সেও বললো, ‘বাঃ তুমি যে আমার মা-মণি হও!’
অনেকদিন পরে কথা বলতে পেরে খুশি উপচালো টুম্পার কাজল কালো চোখে। মুখ উঁচু করে কী যেন বলতে চেয়েও থেমে গেল রজনীকে দেখে। রজনীকে দেখে জামিলও সরে এলো। ভয় পেয়ে। যদি রজনী সব বুঝে ফেলে। সব যদি সে জেনে যায় তবে তার ঘৃণা আরো তীব্রতর হবে। হয়তো সে চলেই যাবে এখান থেকে টুম্পাকে নিয়ে।
টুম্পা চলে গেলে খুব কষ্ট হবে জামিলের। আশ্চর্য! আটত্রিশের রজনী এখনো অনুর দেয়া বিষ বুকের ভেতরে পুষে রেখেছে। আর এই বিষই ভাই-বোনের নিটোল সম্পর্কটিকে অনেক দিন থেকে ছিন্ন করে রেখেছে।
জামিল ভাবে- যদি মৌটুসীর কথা রজনী জেনে যায়। মৌকে আদর করতে গেলেই টুম্পার কথা মনে পড়ে যায় জামিলের। হাত থেমে যায়। মৌটুসী আহত হয়। অভিমানে ঠোঁট ফুলায়। সেও টুম্পার মতো। জামিলের বুকের ভেতর হু হু করে। মানুষের বয়স হলেই বোধহয় ভীমরতিতে ধরে। সে রজনীর চেয়ে পাঁচ বছরের বড়। এটাই কি ভীমরতি ধরার বয়স? ভাবতে থাকে জামিল।
অথচ দুর্নিবার একটা আকর্ষণে সরেও আসতে পারে না। তখন ভীমরতির কথা মনে পড়ে না। এগুতেও পারে না। ঘৃণা ভরা চোখ শাসায়, কান্না ভরা চোখ কাছে ডাকে। কপালের চুল সরিয়ে দেয়। গভীর মমতা চোখে রেখে মৌটুসী বলে, ‘তোমাকে এমনি একা ফেলে যে পালিয়েছে, তাকে আমি খু-উ-ব শাস্তি দিতাম, যদি….’
মৌটুসী জামিলের রোমশ বুকে চোর-কাটা দিয়ে হিজিবিজি দাগ কাটে। জামিল হাসে। আবার গম্ভীর হয়। থেমে থেমে বলে, ‘তোমার বাবার বয়সি একটা লোককে-’
‘যাঃ বয়সটা আসলে-’
অনেক দর্শনের ফুলঝুরি ছড়িয়ে উত্তর দেয় মৌটুসী।
জামিল বলে, ‘সেক্রেটারিয়েল সায়েন্সে কিন্তু ফিলসফি নেই মৌ।’
মৌটুসী একথার গুরুত্ব দেয় না। ওর কথা কেমন যেন গাঢ় হয়ে যায়। বলে, ‘জানো, একা একা ডুবে থাকা কাউকে দেখলে আমরা ভীষণ কষ্ট হয়। সন্ধ্যেয় যখন মা জানালা ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন- আমি দূর রাস্তা থেকে দেখি, তখন আমার মনে হয় মা বুঝি কোথাও হারিয়ে যাবেন। আর কোথায় তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাসায় ছাত্রছাত্রী পড়িয়ে, কলেজের ক্লাস নিয়েও মায়ের সময় কাটে না, কী যেন ভাবেন সারাদিন- অনেকটা তোমার মতোন।’
‘তোমার মা বোধহয় আমার বয়সি?’
‘তুমি বয়সটাকে ভুলে যেতে পারো না?’
‘ইদানীং কখনো কখনো ভুলে যাই, আবার কখনো কখনো-’
‘থাক। চলো ওঠা যাক। আজ তুমি আমার সাথে যাবে।’
‘কোথায়?’
‘যেথায় নিয়ে যাবো আমি।’
‘তুমি বড় রহস্যময়ী।’
কোনো কথা বলে না মৌটুসী। শুধু হাসে। এগিয়ে যায়। একান্ত অনুগতের মতো ওর পাশে হাঁটতে থাকে পদস্থ অফিসার তেতাল্লিশের জামিল আহমেদ। এই মুহূর্তের জন্য বয়স এবং পদবী ভুলে সে শুধু জামিল হতে চায়।
মৌটুসী বলতে থাকে, ‘জানো, মা বড় দুঃখিনী। আমাকে পেটে রেখে মায়ের প্রেমিক পালিয়ে যায়। মাকে বিট্রে করে। অথচ মা আজো তাকে ভোলেননি। পুরুষ জাতটা আসলে….’
জামিলের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফ্যালে মৌটুসী। বলে, ‘এসো। এই আমাদের বাড়ি। মায়ের এখনো ফিরতে ঘণ্টাখানেক দেরি। আজ মায়ের সাথে তোমার আলাপ করিয়ে দেবো।’
জামিল কোনা কথা বলে না। মৌটুসীর সাথে বারান্দা পেরিয়ে ঘরে ঢোকে। মৌটুসী ওকে বসতে দেয়। তারপর সুইচ টিপে সন্ধ্যার প্রথম অন্ধকারটা তাড়িয়ে দেয়। আর ঘর ভর্তি আলোয় জামিল মৌকে দেখলো।
‘তুমি আজ আমাকে খুব চমকে দিলে মৌ।’
‘কেন?’
‘বলা নেই, কওয়া নেই- সরাসরি তোমাদের বাড়িতে-’
‘আমার অনেক দিনের ইচ্ছে। মাকে বলেছি। আজ মা-ই সব বলবেন।’
‘মৌ।’
মৌটুসীর ঠোঁটে হাসির নাচন।
‘তুমি ঘাবড়ে যাচ্ছো? অথচ…’
কথাটা অসম্পূর্ণ রেখেই জামিলের পেছনের দিকের দেয়ালে ঝুলানো একটি ছবির দিকে এগিয়ে গেল মৌটুসী। ‘অথচ আমার মা কোনোদিন ঘাবড়াননি। তাঁর বুকের মাঝে যে কত বড় আগুন তা বোঝাবার নয়। সে আগুনের আঁচ আমি কিছুটা উপলব্ধি করতে পারি…।’
পিছন ফিরে ছবি দেখে ভীষণভাবে চমকে উঠলো জামিল। কে! এ কার ছবি? চনচনে এক উত্তেজনায় উঠে দাঁড়ায়। তী² দৃষ্টিতে ছবিটি দেখতে থাকে। সেই মুখ, সেই চোখ, খোঁপা করা চুল, টিকালো নাক- নাহ! এতটুকুন পরিবর্তন নেই। জামিলের বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে। গলাটা শুকিয়ে আসছে- বুকটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা- মৌটুসী তা হলে- অনুতো অন্যপূর্বা ছিল। এ কার দেয়া ফসল অনু এখনো সযতেœ লালন করে যাচ্ছে? অনুর সাথে জামিল, আবার অনুরই মেয়ে মৌটুসীর সাথে জামিল- ছিঃ ছিঃ। সারা শরীরে প্রচণ্ডভাবে ঝাঁকুনি অনুভব করলো জামিল। অন্ধকার- হ্যাঁ অন্ধকার চায়। আলোতে দাঁড়াবার অধিকার তার আর নেই।
মৌটুসী তখনো বলে চলেছে… মাঝে মাঝে আমার খুব ইচ্ছে হয়, সেই শয়তানটাকে খুঁজে বের করি। তাকে জিজ্ঞেস করি….’
মৌটুসী জানে না জামিল এতক্ষণে বাইরের অন্ধকারে মিশে গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়