জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডি : কৃষি ও এসএমই খাতকে প্রাধান্য দেয়া হবে

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা পালন করে আসছে বলে জানিয়েছেন তৃতীয় প্রজন্মের মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী। গত বছরের সাফল্য ও সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, চলতি বছর শ্রেণি বিন্যাসিত ঋণ আদায়ে জোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। একই সঙ্গে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কৃষি ও এসএমই খাতকে প্রাধান্য দেয়ার পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে নতুন নতুন শাখা-উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট স্থাপন অব্যাহত থাকবে। গ্রাহকদের চাহিদার বাস্তবায়নে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত করার প্রতিশ্রæতিও দেন তিনি।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন ৭টি কার্ড সেবা উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া ইসলামী ব্যাংকিং সেবায় তাকওয়া মুদারাবা হজ সঞ্চয় প্রকল্প নামে একটি নতুন আমানত প্রকল্প সংযোজন হয়েছে। গতকাল বুধবার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ সেবার উদ্বোধনকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেবাগুলোর শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম ফিরোজ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক আলহাজ আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), এম এ খান বেলাল ও মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহম্মদ, হাসনে আলম এবং মু. মাহমুদ আলম চৌধুরী, সিএফও তাপস চন্দ্র পাল, পিএইচডিসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, কর্মকর্তারা।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংক হওয়া সত্ত্বেও ধারাবাহিক সাফল্যের মাধ্যমে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ইতোমধ্যেই নিজেকে দেশের একটি প্রথম সারির ব্যাংক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছে। ২০২১ সালে ব্যাংক প্রায় ৬১১ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। একই সময়ে ব্যাংকের মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। মোট আমানত ও ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২৭ দশমিক ৫৫ ও ২৬ দশমিক ৬৭৬ কোটি টাকা। মূলধন পর্যাপ্ততা হার ছিল ১৪:০৯ শতাংশ।

ব্যাংকের সফলতা নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছতে চাই। জনগণকে সাহায্য করতে চাই। প্রান্তিক মানুষের কাছে যেতে চাই। আমাদের সফটওয়ার আপডেট করেছি। ঘরে বসেই এখন মানুষ সেবা পেতে পারছে, ব্যাংক একাউন্ট ওপেন করতে পারছে। নতুন করে ৪৫টি শাখায় ‘ইসলামী উইন্ডো’ চালু করেছি। চলতি বছরে মতিঝিল এলাকায় একটি ইসলামী ব্রাঞ্চ চালু করব। আমাদের ১৫১টি শাখাকে শতভাগ অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এ ব্যাংক আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি দ্বারা রেটিং করা। এডিবি আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। ১২ লাখ গ্রাহক, ২৬ হাজার কোটি টাকার ডিপোজিট আছে আমাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ব্যাংকিং খাতে উন্নত সেবার বিকল্প কিছু নেই। দেশের আনাচে কানাচে আমাদের ব্রাঞ্চ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংক যেখানে ব্রাঞ্চ করে, সেখানে আবাদ করে। আমরা প্রত্যেকটা জেলায় আগে যাই। গ্রাহকের চাহিদাকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব নিয়ে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা শহর ও প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সব জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১৫১টি শাখা ২১টি উপশাখার মাধ্যমে আমরা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি। তাছাড়া, বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় দেশজুড়ে আমাদের রয়েছে ১৭৩টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট। গ্রাহক সন্তুষ্টির কথা বিবেচনা করে আমরা প্রতিনিয়ত গ্রাহকবান্ধব ব্যাংকিং পণ্য ও সেবাসহ সর্বোত্তম প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপ করে চলছি।
আমাদের রয়েছে অনেকগুলো গণমুখী আমানত এবং ঋণ প্রকল্প যা জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। ব্যাংকিং সেবা জনগণের কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য আমরা ‘এমবিএল সুরক্ষা সঞ্চয় হিসাব, এমবিএল বেনিফিট স্কিম, নন রেসিডেন্ট ইনভেস্টর টাকা একাউন্ট (নিটা) নামে নতুন তিনটি ডিপোজিট পণ্য চালু করতে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি পরবর্তী আর্থিক দুর্যোগের মধ্যেও পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে মার্কেন্টাইল ব্যাংক তার মজবুত অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয়েছে। বাজারে ডলারের অস্থিরতা নিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, যে সমস্ত ব্যাংক পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অর্থলগ্নি করা হয়েছে, তারা ডলার ক্রাইসিসে পড়েনি। আমি মনে করি, ডলার ক্রাইসিস কৃত্রিম ঘটনা। কারণ বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা ডলার ঘাটতি হয়েছে। তবে তত বেশি না। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক রিজার্ভ আছে। মার্কেটের যা ঘাটতি ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক তা পূরণ করে দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে সময় বাড়াতে আবেদন করেছেন। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পজিটিভ ভাবে দেখছি। কারণ আমিও একজন ব্যবসায়ী। করোনাকালীন সময়ে যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে, ব্যবসা ভালো ছিল না বলে ব্যাংকগুলোর পাওনা টাকা একসঙ্গে দেয়া ব্যবসায়ীদের পক্ষে সম্ভব না। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছে যতদিন টাকা থাকছে, ততদিন তো ব্যাংক লাভ পাচ্ছে। তাই সময় বাড়ানো হলে ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হবে। ব্যাংকগুলোর জন্যও ভালো হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়