জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

বেড়েছে সূচক ও লেনদেন

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টানা দরপতনের পর শেয়ারবাজারে এবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বাড়ার মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল শেয়ারবাজার। এদিন উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বড় উত্থান হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে আট কার্যদিবসের টানা দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫৫৫ পয়েন্ট কমে গেলে গত ২২ মে মার্জিন ঋণের হার বাড়িয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি থেকে মার্জিন ঋণের হার বাড়ানোর পাশাপাশি ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, জ্যেষ্ঠ অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাসকে নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকে শেয়ারবাজার ভালো করতে দিকনির্দেশনা দেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী ও বিএসইসি থেকে এমন পদক্ষেপ নেয়ায় ২৩ মে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক একদিনেই ১১৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সূচকের এমন উত্থানের পর পরই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদনের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিএসইসি। বিএসইসির এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে এখন থেকে পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড বাদে অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাট অফ ডেটে পুঁজিবাজারে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে। আগে যেটা ছিল ১ কোটি টাকা। একইভাবে পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের ক্ষেত্রে আগে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। সেটাকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে তারল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে কমিশন সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানায় বিএসইসি।
তারল্য বাড়াতে বিএসইসি এমন পদক্ষেপ নিলেও ২৪ ও ২৫ মে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এমনকি ডিএসইতে লেনদেন কমে ২৫ মে ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনি¤œ লেনদেনের ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন এনে একদিনে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ দাম কমার নিয়ম বেঁধে দেয় বিএসইসি। এরপর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে শেয়ারবাজার। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে ডিএসইতে একাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম দিনের সর্বোচ্চ সীমায় চলে যায়। লেনদেনের শেষদিকে এ সংখ্যা আরো বাড়ে। এতে ৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
অবশ্য বিপরীত চিত্রও ছিল কিছু প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। ক্রেতা সংকট দেখা দেয়ায় ১১ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এরপরও দিনের লেনদেনের বেশির ভাগ সময় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়েছিল। এ পরিস্থিতিতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৩৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১০৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জিএসপি ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেক্সিমকো ফার্মা, জিনেক্স ইনফোসিস, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, শাইনপুকুর সিরামিক এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৫৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৫৯ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৩টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়