জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

বেসরকারি চিকিৎসাসেবা : নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ইতিবাচক; তবে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বেড়াজাল ছিন্ন করে খাতটির সার্বিক সুশাসন নিশ্চিতে এটি যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বরং দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর সেবার মান পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও সর্বোপরি সুশাসন নিশ্চিতে একটি নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ সুপারিশ জানায় টিআইবি। বিবৃতিতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে টিআইবির সা¤প্রতিক গবেষণার উল্লেখ করে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অভিযান শুরুর মাত্র একদিনের মাথায় বিপুল সংখ্যক নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে যথাযথ তদারকির প্রকটতর অভাব ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে। এমন অবস্থায় চলমান অভিযান বেহাল ও অরাজকতাপূর্ণ খাতটিতে সুশাসন নিশ্চিতে কতটা কার্যকর হবে, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করে দ্রুততার সঙ্গে আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে হবে এবং এর কার্যকর বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান পরিবীক্ষণ এবং সুশাসন নিশ্চিতে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন জরুরি।
নিয়মিতভাবে এ ধরনের অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জমাকৃত আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই ও আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দেয়া ও নবায়ন করা, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে টিআইবি। এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব, ভয়ভীতি ও করুণার ঊর্ধ্বে থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যাতে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
কোভিডকালীন রিজেন্ট হাসপাতাল-কাণ্ডের উদাহরণ দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিনা লাইসেন্স ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্যসেবার নিয়মনীতি ভঙ্গ করে যেসব প্রতিষ্ঠান এত দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। একই সঙ্গে নিয়মবিরুদ্ধ এসব কর্মকাণ্ডকে এত দিন যারা বিভিন্নভাবে সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, তাদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় সর্ষের মধ্যে থাকা ভূত তাড়ানো সম্ভব হবে না।
টিআইবি ‘বেসরকারি চিকিৎসাসেবা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শিরোনামে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে একদিকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা, মুনাফাকেন্দ্রিক সেবা ব্যবস্থা, অন্যদিকে সরকারের মনোযোগ, পরিদর্শন ও তদারকির ঘাটতির কারণে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন, তা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবার মতো একটি মৌলিক বিষয়, যেখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত, সেখানে মুনাফাবিভোর ও অমানবিকভাবে দুর্নীতিপরায়ণদের হাতে জিম্মিদশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার অপরিহার্য দায়িত্ব বলে মনে করছে টিআইবি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়