জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

দায় কার! গোপালগঞ্জে ৫৮ ছাত্রীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ শহরের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৮ ছাত্রীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না শ্রেণিকক্ষে। গ্রহণ করা হয়নি অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার ফি। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির ১৩ জন, সপ্তম শ্রেণির ১৮ জন, অষ্টম শ্রেণির ১৬ জন এবং নবম শ্রেণির ১১ জন ছাত্রী রয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ সময় পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ শিক্ষাজীবন নিশ্চিতের দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অভিভাবক মো. শহীদুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ৫৮ শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের ভর্তি অবৈধ উল্লেখ করে স্কুলে আসতে ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা দেয় কর্তৃৃপক্ষ। এর ফলে ওই সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বছরের অর্ধেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থী যাতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েরা হাসিনা ও জাফরিন সুলতানা জানায়, বছরের মাঝখানে এসে আমাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। এত দিন আমরা এই স্কুলে লেখাপড়া করেছি। এখন আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। এখন তো আমরা অন্য স্কুলেও ভর্তি হতে পারব না। আমাদের অপরাধ কী? আমাদের লেখাপড়া কি বন্ধ হয়ে যাবে?
অভিভাবক হাবিবুর রহমান ও আরিফা পারভীন বলেন, ৫ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার আকস্মিকভাবে বদলি হয়ে যান। তিনি ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি অনুমোদন করেন। তিনি চলে যাওয়ার পর শাহানাজ রেজা এ্যানি নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর ওই ৫৮ শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারা আরো বলেন, আগামী ২ জুন থেকে বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার রুটিন দেয়া হয়েছে। সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তি ফি গ্রহণ করা হলেও ওই ৫৮ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করা হয়নি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে আমাদের জানানো হয় সাবেক অধ্যক্ষ ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি রেজিস্ট্রারে নাম তুলে না যাওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা তাদের পরীক্ষার ফি গ্রহণ করছি না। এ ব্যাপারে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জানতে বর্তমান অধ্যক্ষ শাহানাজ রেজা এ্যানির মোবাইলে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাবেক অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার বলেন, ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে, এটা দুঃখজনক। আমি ব্যাংকে চিঠি দিয়ে টাকা নিতে নিষেধ করলেও কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর যোগসাজশে এ কাজটি হয়েছে। আমি এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করেছিলাম। কিন্তু বদলিজনিত কারণে এটি আর হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে, তা সঠিক নয়। আমি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, যে ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে, তারা এ স্কুলের শিক্ষার্থীই না। স্কুলে তাদের কোনো কাগজপত্র জমা নেই। হাজিরা খাতায় তাদের নাম নেই। তারা অবৈধভাবে স্কুলটিতে ক্লাস করছিল। এ ব্যাপারটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়