জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

গণহত্যায় নিহতদের পরিবারের মূল্যায়ন হোক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

২৩ বছরের শাসন-শোষণের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত বাঙালিরা ’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার নৌকাকে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী করে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যখন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, পর্দার অন্তরালে তখন ষড়যন্ত্রে মাতোয়ারা ছিল ইয়াহিয়া-ভুট্টো ও পাঞ্জাবি শাসক গোষ্ঠী। ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে জাতিকে নির্দেশনা দিলেন বঙ্গবন্ধু, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা দিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’- এই ভাষণের পরই গোটা পূর্ব বাংলায় বীর বাঙালি ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা,’ ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন করা,’ ‘পিন্ডি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা,’ ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ সেøাগানে সেøাগানে উত্তাল হয়ে ওঠে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠী ভাষাভিত্তিক জাতীয়তার পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র ভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
বাঙালির উত্তাল রূপকে, গণতন্ত্রের দাবিকে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা অস্ত্রের মোকাবিলায় স্তব্ধ করতে উদ্যত হয়। এই ষড়যন্ত্রকারীরা বাঙালিকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ২৫ মার্চ সংঘটিত করে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যা! পরিচালনা করে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের নিষ্ঠুর গণহত্যা! ওই গণহত্যায় এক রাতেই ঢাকাসহ সারাদেশে শহীদ হন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। পুরো বাংলাদেশ পরিণত হয় আতঙ্কের এক জনপদে। দেশজুড়ে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, লুণ্ঠনের খেলায় মেতে ওঠে পৃথিবীর জঘন্যতম হত্যালীলায়। এভাবে ৯ মাসব্যাপী চলে মানব ইতিহাসের ভয়াবহতম নিষ্ঠুর গণহত্যার নির্মমতা। সেই নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বীর বাঙালি ১৬ ডিসেম্বর অর্জন করে বিজয়। প্রতিষ্ঠা করে লাল-সবুজের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। নিজ স্বাক্ষরে পত্র প্রেরণ করেছেন। পুনর্বাসনের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। কিন্তু ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের নির্মমতার পর এসব উদ্যোগ বলতে গেলে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা স্বাধীনতার ‘৫০ বছরে সুবর্ণজয়ন্তী’ উদযাপন করেছি। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে আয়োজন করেছি নানা কর্মসূচি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও আমরা কি একবারও ওই গণহত্যায় নিহতদের কিংবা তাদের পরিবারের খোঁজ নিয়েছি? স্বাধীনতার ৫১ বছরে এখনো গণহত্যায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা চোখের পানি ফেলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক শহীদ পরিবার ভূমিহীন, গৃহহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আজ তাদের একই অবস্থা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রান্তের বছরে আমাদের দায় ও দায়িত্ব ১৯৭১ সালের গণহত্যায় যারা নিহত হয়েছে তাদের শহীদের মর্যাদা দেয়া। যারা ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবার, তাদের পুনর্বাসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশ পরিচালনা করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করছেন। উদ্যোগ নিচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে একজন নাগরিক হিসেবে দাবি, ’৭১ সালের গণহত্যায় নিহত পরিবারগুলোকে যথাযোগ্য মূল্যায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
ইমরান হোসাইন
গণমাধ্যমকর্মী, সিরাজগঞ্জ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়