কুসিক নির্বাচন : ইভিএমে ভোটের প্রক্রিয়া দেখলেন ২১ প্রার্থী

আগের সংবাদ

গোপনে তৎপর জামায়াত : কৌশলে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম > ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের ছক

পরের সংবাদ

মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থী নেই : ১৯ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন ১৩ শিক্ষক-কর্মচারী!

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অতুল পাল, বাউফল (পটুয়াখালী) থেকে : এ যেন ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, বাস্তবে নেই’। তেমনি মাদ্রাসা আছে, আছে মাদ্রাসায় শিক্ষক-কর্মচারীও। কিন্তু একটি মাদ্রাসা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূলপ্রাণ যে শিক্ষার্থী, তা-ই নেই! অথচ শিক্ষক-কর্মচারীরা ঠিকই তুলে নিচ্ছেন বেতন-ভাতা। এভাবে এক মাস-দুমাস নয়, ১৯ বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ১৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী।
ওই মাদ্রাসাটির অবস্থান পটুয়াখালীর বাউফলের সূর্যমণি ইউনিয়নের পূর্ব ইন্দ্রকুল গ্রামে, নাম ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রাসা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে একজন শিক্ষার্থীও নেই। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কয়েকবার ওই মাদ্রাসায় গিয়ে কোনো শিক্ষার্থীই পাওয়া যায়নি। এমনকি শিক্ষকরা দেখাতে পারেননি চক, ডাস্টার, ব্লাকবোর্ড ও শিক্ষার্থী হাজিরার খাতাসহ কোনো ধরনের শিক্ষা উপকরণও। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ও রয়েছে অন্ধকারে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবদুল মোতালেব নামের স্থানীয় এক ব্যাক্তি ১৯৯৪ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে ২০০৪ সালে ইবতেদায়ি ও দাখিল মাদ্রাসা হিসেবে এমপিওভুক্ত হয় এবং প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পায়। সরজমিন দেখা গেছে, কাগজ-কলমে ওই মাদ্রাসায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে একজন শিক্ষার্থীও নেই।
হাজিরা খাতায় প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখানো হয়। মাদ্রাসাটিতে ইবতেদায়ি বিভাগে ৪ জন এবং দাখিলে ৫ জন শিক্ষক, একজন অফিস সহকারী, একজন আয়া, একজন নাইট গার্ড ও একজন দপ্তরিসহ মোট ১৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। তারা প্রতি মাসে সরকারি ২ লাখ ৮ হাজার টাকা বেতন হিসেবে উত্তোলন করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আইরিন বেগম নামের একজন শিক্ষক ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর সর্বশেষ মাদ্রাসায় উপস্থিতির স্বাক্ষর করেছেন। এরপর থেকে গত ৭ মাসে শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার কোনো স্বাক্ষর নেই। অথচ প্রতি মাসেই তিনি বেতন উত্তোলন করে নিচ্ছেন। মোবাইল ফোনে আইরিন বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি দম্ভোক্তি করে বলেন, মাদ্রাসায় একটি খুঁটি থাকলেও আমি বেতন পাব।
মাদ্রাসার সুপার মাহফুজা বেগম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। ২০০৯ সালে শিক্ষকদের মধ্যে ‘ঝামেলা’ হওয়ায় এখন শিক্ষার্থী একবারেই নেই। দূরের কিছু শিক্ষার্থী এ মাদ্রাসায় ভর্তি করে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে মাদ্রাসাটি টিকিয়ে রেখেছি।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত থাকতে পারে না। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়