কুসিক নির্বাচন : ইভিএমে ভোটের প্রক্রিয়া দেখলেন ২১ প্রার্থী

আগের সংবাদ

গোপনে তৎপর জামায়াত : কৌশলে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম > ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের ছক

পরের সংবাদ

আইপিএলে অভিজ্ঞদের ব্যর্থতায় তারুণ্যের জয়জয়কার

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৫তম আসর ইতোমধ্যে ইতি টেনেছে। দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এই টুর্নামেন্টে বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অভিষেক আসরেই শিরোপ জয় করেছে গুজরাট টাইটান্স। বিগত বছরগুলোতে ৮ দল নিয়ে আইপিএল অনুষ্ঠিত হলেও এবারের আসর হয়েছে ১০ দলের সমন্বয়ে। নতুন দুই দলের একটি গুজরাট টাইটান্স, অপরটি লক্ষেèৗ সুপার জায়ান্টস। সম্প্রতি শেষ হওয়া আইপিএলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সাফল্য ভারতের আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্কোয়াডে বেশ প্রভাব ফেলেছে। যেখানে নেই রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিসহ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। মূলত তরুণ ক্রিকেটারদের ওপর নির্ভর করেই দল ঘোষণা করেছে বিসিসিআই।
আইপিএলের এবারের আসরকে দ্রুত ভুলতে চেষ্টা করবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস। ৫ বারের শিরোপা জয়ী রোহিত শর্মাদের এবার টুর্নামেন্ট শেষ করতে হয়েছে টেবিলের তলানিতে থেকে। অন্যদিকে ৪ বারের শিরোপাজয়ী চেন্নাই সুপার কিংসও মুম্বাইয়ের পথে হেঁটেছে। নবম স্থানে থেকে শেষ করেছে তারা। এই আসরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের প্রাপ্তির-অপ্রাপ্তির খাতায় বেশ কিছু দিক লক্ষ্যণীয়। যেখানে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে তরুণ ক্রিকেটারদের সাফল্যের জয়জয়কার ছিল।
গুজরাট টাইটান্সের অভিষেক আসরেই অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপা জয় করার সুবাদে বিশ্লেষকদের আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে হার্দিক পান্ডিয়া। এর আগে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে রোহিত শর্মার নেতৃত্বে খেলতেন তিনি। এবার নতুন দলের প্রথমবার অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়েই করেছেন বাজিমাত। নেতৃত্বের সঙ্গে ব্যাট ও বল দুই দিকেই বেশ সাফল্যের সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। নেতৃত্বের চাপে নিজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতেও দেননি তিনি। হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সম্ভাবনাময় ভারতীয় ক্রিকেটার উঠে এসেছে আইপিএলের মাধ্যমে। এবারের উদীয়মান তারকা সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের উমরান মালিক একের পর এক গতির ঝড় তুলে প্রশংসিত হয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকদের কাছে। ১৪ ম্যাচে নিয়েছেন ২২ উইকেট। যা সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রেখেছে তাকে। এছাড়া পাঞ্জাব কিংসের আর্শদীপ সিংও এসেছেন বিসিসিআইয়ের নজরে। দুজনই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দলে ডাক পেয়েছেন। লক্ষেèৗর বাঁ-হাতি পেসার মোহসিন খান ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে নজর কেড়েছেন। সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিমার ইয়ান বিশপ উমরানের সঙ্গে তাকেও ‘ভয়ংকর’ বলেছেন। এই দুই জনের সঙ্গে বল হাতে এই দুই উদীয়মানের সঙ্গে ঘূর্ণিতে কম যায়নি কুলদীপ যাদবও। কুলদীপ এখনো তার আঙুলের ধার বজায় রেখেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদে মধ্যে যুবেন্দ্র চাহালের ২৭ ও উমরান মালিকের ২২ উইকেটের পর কুলদীপ যাদব ২১, মোহাম্মদ সামি ২০, হার্শা প্যাটেল ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা ১৯ ও আবেশ খান ১৮টি উইকেট পেয়েছেন। এদের মধ্যে নাম নেই ভারতের পেস আক্রমণের তুরুপের তাস বুমরাহর। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মতো বুমরাহও যেন এই আসরে চুপসে গিয়েছেন। আর প্রতিনিয়ত নিজের ফর্ম হারাচ্ছেন ভুবেনশ্বর কুমার ও রবীচন্দ্র আশ্বিন। এই চার বোলারের মধ্যে আইপিএলের এই আসরে বুমরাহ ও শার্দুল ঠাকুর পেয়েছেন ১৫টি, ভুবেনশ্বর কুমার ও রবীচন্দ্র আশ্বিন ১২টি করে উইকেট পেয়েছেন। যেখানে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি যুবেন্দ্র চাহাল পেয়েছেন ২৭টি।
ভারতের সুপরিচিত বোলাররাই ব্যর্থ ছিলেন না। এই আসরে নিজের মূল্যের প্রয়োজনীয় প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে টপ অর্ডারের ব্যাটাররাও। ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে মাত্র ২৬৮ রান এসেছে এই আসরে। যেখানে তরুণ ক্রিকেটাররা প্রত্যেকেই ৪০০ রানেরও বেশি করেছে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের মধ্যে শিখর ধাওয়ান, সাঞ্জু স্যামস যথাক্রমে ৫৬০ ও ৪৫৮ রান করেছেন। এছাড়া লোকেশ রাহুল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাক ছিলেন। বিরাট কোহলি, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, রবিন উত্থাপা, মহেন্দ্রোসিং ধোনি, আম্বাতি রাইডু, ঋদ্ধিমান সাহা প্রত্যেকেই নিজের নামের যথার্থ বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে সর্বনি¤œ রান করেছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। ১৪ ম্যাচে মাত্র ১৯৬ করতে পেরেছেন এই ওপেনার। আর বিরাট কোহলি ও ঋদ্ধিমান সাহা ৩০০ রান পার করতে পারলেও ৩৫০ ছুঁতে পারেনি কেউ।
অন্যদিকে তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে সবাই ছিল ৪০০-৫০০ রানের মধ্যে। লোকেশ রাহুলের ৬১৪ রানের পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ৪৮৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক হার্দিক পন্ডিয়া। এরপর শুভমন গিল ৪৮৩, সাঞ্জু স্যামসন ৪৫৮, অভিষেক শর্মা ৪২৬, ইশান কিষান ৪১৮, রাহুল ত্রিপাটি ৪১৩ ও শ্রেয়াস আইয়ার ৪০১ রান করেছেন।
দেশীয়দের সাফল্য ছাপিয়ে আইপিএলে এবার আলোচনার শীর্ষে ছিল বিদেশি ক্রিকেটাররা। যেখানে ৮৬৩ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছেন রাজস্থান রয়্যালসের জস বাটলার। ৫০৮ রান নিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন প্রোটিয়া ব্যাটার কুইন্ট ডি কক। ডেভিড মিলারের ক্যারিবীয় ইনিংস সব আলোচনার ঊর্ধ্বে। ব্যাট হাতে ফাফ ডু প্লেসিস, ডেভিড ওয়ার্নার, লিয়াম লিভিংস্টোন ও বল হাতে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, রশিদ খান, কাগিসো রাবাদা, ফার্গুসন ও হ্যাজেলউড প্রত্যেকেই বেশ ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে এই আসরে জ¦লে উঠতে পারেননি মঈন আলী, শিমরন হেটামায়ার, টিম সাউথি, ট্রেন্ট বোল্ট, সুনীল নারিন, কাইরন পোলার্ডরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়