নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস আজ

আগের সংবাদ

কালো টাকার অবাধ সুযোগ! : বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিরল উদ্যোগ, কর দেয়ায় নিরুৎসাহিত হবে সৎ করদাতারা

পরের সংবাদ

রাজস্থানের দ্বিতীয় নাকি গুজরাটের প্রথম

প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পর্দা নামতে যাচ্ছে। ভারতের আহমেদাবাদের নরন্দ্রে মোদি স্টেডিয়ামে আজ রাত ৮টায় ফাইনালের মুখোমুখি হবে গুজরাট টাইটান্স ও রাজস্থান রয়্যালস। প্রথম সেমিফাইনালে ডেভিড মিলারের তিন বলের ঝড়ে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে আইপিএলের অভিষেক আসরেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে গুজরাট টাইটান্স। প্রথম সেমিফাইনালে হারার পরও ছিটকে যায়নি রাজস্থান রয়্যালস। লক্ষেèৗকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় সেমিতে পদার্পণ করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। তবে আসরের শুরু থেকে দাপটের সঙ্গে খেলে আসার ইংলিশ ব্যাটার জস বাটলারের ঝড়ের সামনেই ফাইনালের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছেন কোহলিদের। এই জয়ের মাধ্যমে ১৪ বছর পর ফাইনালে উঠেছে রাজস্থান রয়্যালস। সর্বশেষ ২০০৮ সালে প্রয়াত অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নে কল্যাণে ফাইনালে উঠে শিরোপা নিশ্চিত করেছিল রাজস্থান। এরপর দীর্ঘদিন আইপিএলের শিরোপা থেকে দূরে থেকেছে তারা। এই আসরে আবারো সেই বিদেশি ক্রিকেটারের দাপুটে লড়াইয়ে ফাইনালে রাজস্থান। গত মার্চের শুরুতেই পরলোকগমন করেছেন ১৪ বছর আগে রাজস্থানকে শিরোপা জিতিয়ে দেয়া শেন ওয়ার্ন। এবার শিরোপা জয়ের মাধ্যমে শেন ওয়ার্নকে উৎসর্গ করতে পারে ভারতীয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
ব্যাঙ্গালুরুকে সেমিফাইনালে খেলার জন্য বেশ জটিল সমীকরণের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে। শেষ চারে কোয়ালিফাই নিশ্চিত করার জন্য এর আগে তাদের তাকিয়ে থাকতে হয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালসের দিকে। মোস্তাফিজদের শেষ ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষ না হারলে ব্যাঙ্গালুরুর পরিবর্তে দিল্লি ক্যাপিটালসকেই দেখা যেত শেষ চারে। তবে ঋষভ পন্থিদের ভাগ্য সহায় হয়নি সেদিন। টেবিলের তলানিতে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে হেরে সেখান থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
আইপিএলের পনেরোতম আসারে প্রথমবার খেলতে এসেছে গুজরাট টাইটান্স। মেগা অকশনে হার্দিক পান্ডিয়া (অধিনায়ক), রশীদ খান, ডেভিড মিলার, শুভমন গিল, মোহাম্মদ সামিদের দলে নিয়ে বেশ শক্তিশালী দল গঠন করেছে গুজরাট ফ্র্যাঞ্চাইজি। লিগের এ আসরে কোনো ক্রিকেটারের নজরকাড়া ব্যক্তিগত সাফল্য না থাকলেও দলীয় সাফল্যে ভিত্তিতে অভিষেক আসরেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা। ব্যক্তিগত সাফল্যের দিক থেকে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাক পনেরো ব্যাটারের মধ্যে তিনজন আছেন সেরা দশের মধ্যে। ৪৫৩ রান নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছেন ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া, ৪৪৯ রান নিয়ে অষ্টম স্থানে আছেন ডেভিড মিলার এবং ৪৩৮ রান নিয়ে দশম স্থানে আছেন শুভমন গিল। শুধু ব্যাট হাতেই নয়। বল হাতেও সেরা দশজনের মধ্যে আছেন দুইজন। ১৯ উইকেট নিয়ে অষ্টম স্থানে আছেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সামি ও ১৮ রান নিয়ে নবম স্থানে আছেন রশীদ খান।
আইপিএলের এই আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় পাহাড় সমান রান নিয়ে শীর্ষে আছেন রাজস্থানের ইংলিশ ব্যাটার জস বাটলার। ১৬ ম্যাচে ৫৮.৮৬ গড়ে করেছেন ৮২৪ রান। যেখানে চার ম্যাচে করেছে শতাধিক রান। চার সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফসেঞ্চুরিও আছে ৪টি। আইপিএলের এই আসরে ৪৫টি ছয় হাঁকিয়েছেন বাটলার। বাটলারের পরে ২০৮ রানে পিছিয়ে ৬১৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন লক্ষেèৗ সুপার জায়ান্টের লোকেশ রাহুল। এরপর আরো ১০৮ রানে পিছিয়ে ৫০৮ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন লক্ষেèৗর আরেক ওপেনার প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক ব্যাটার কুইন্টন ডি কক। রাজস্থান রয়্যালস থেকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাকের তালিকায় ৪৪৪ রান নিয়ে নবম স্থানে আছেন অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। বল হাতে যুজবেন্দ্র চাহালের পাশাপাশি বল হাতে দাপট দেখাচ্ছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাও। এই আসরে নিয়েছেন ১৮ উইকেট।
উইকেটের দিক থেকে ২৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর লঙ্কান বোলার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এই আসরে একবার করে চার উইকেট ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন তিনি। সমান ম্যাচে সমানসংখ্যক উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন রাজস্থান রয়্যালসের যুজবেন্দ্র চাহাল। তিনিও একবার করে চার উইকেট ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। তবে গড় সমীকরণে চাহালের থেকেও কম গড়ে বল করার সুবাদে শীর্ষে আছেন হাসারাঙ্গা। তবে চাহালের শীর্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা এখনো আছে।
আজ ফাইনালে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে এক উইকেট লাভ করলেই বল হাতে আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হবেন তিনি।
আইপিএলের এই আসারে শিরোপার হাত থেকে যোজন যোজন দূরে থেকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ৫ বারের শিরোপাজয়ী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ১৪ ম্যাচের মধ্যে জিতেছেন মাত্র ৪টিতে। মুম্বাইয়ের পথ অনুসরণ করেছে ৪ বারের শিরোপাজয়ী চেন্নাই সুপার কিংসও। তারাও ১৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪টিতে জয় পেয়েছে।
২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে আইপিএল ১৫তম আসর। মুম্বাইয়ের ওয়াংখোড় স্টেডিয়ামে চেন্নাই সুপার কিংস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আইপিএলের এই আসর। করোনা মহামারির জন্য আগের মতো সব ভেন্যুতে আইপিএলের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়নি। মুম্বাই ও পুনেরো চারটি ভেন্যুতে হয়েছে লিগ পর্বের ৭০টি ম্যাচ। মুম্বাইয়ের অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০টি ও পুনেতে হয়েছে ১৫টি। প্লে অফের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে আহমেদাবদে। আগের আসরের তুলনায় এবারের আসরটি ছিল ব্যতিক্রম।
২০১১ সালের পর এ আসরে আবার ১০ দলের টুর্নামেন্ট হয়েছে। আগের আটটি দলের সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছিল গুজরাট টাইটান্স ও লক্ষেèৗ সুপার জায়ান্টস। আইপিএলের শিরোপাসংখ্যা ও ফাইনাল ম্যাচ খেলার সংখ্যার ভিত্তিতে দলগুলোকে ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছিল। এরপর দুটি গ্রুপে ভাগ করেছে। ‘এ’ গ্রুপে জায়গা ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, দিল্লি ক্যাপিটালস, লক্ষেèৗ সুপার জায়ান্টস। ‘বি’ গ্রুপের দলগুলো হল চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটান্স। নতুন ফরম্যাটে একই গ্রুপে থাকা দলগুলো একে অপরের সঙ্গে খেলেছে দুটি করে ম্যাচ ও অপর গ্রুপের দলগুলোর সঙ্গে খেলেছে একটি করে ম্যাচ। সব মিলিয়ে গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল ১৪টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়