নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস আজ

আগের সংবাদ

কালো টাকার অবাধ সুযোগ! : বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিরল উদ্যোগ, কর দেয়ায় নিরুৎসাহিত হবে সৎ করদাতারা

পরের সংবাদ

ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা : নওগাঁয় স্বেচ্ছাশ্রমে ছয় কিমি দীর্ঘ খাল খনন

প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি : পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় একটু ভারি বৃষ্টি হলেই ফসলি জমিতে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতার কারণে বছরের পর বছর ধরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খাল খননের জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে কৃষকরা বারবার ধরনা দিলেও কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে ফসল রক্ষার লক্ষ্যে কৃষকরা প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খননের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর এলাকা থেকে শুরু করে পাঁচবাড়িয়া বিলের বার্ষির পুল পর্যন্ত প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল ছিল। সেই খাল দিয়ে পাহাড়পুর, নলগড়া, কালুপাড়া, চকতারতা, মুক্তারপাড়া, কুমড়ারবিল, পাঁচবাড়িয়া বিলের পানি নিষ্কাশন হতো। শুষ্ক মৌসুমে সেই খালে জমে থাকা পানি দিয়ে স্থানীয় লোকজন চাষাবাদ করত; কিন্তু এই খালের গতিপথে বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন করা খালটির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এছাড়া খালের পাশের জমির মালিকরা ধীরে ধীরে খালের পাড় কেটে দখল করতে করতে খালটি বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে বক্তারপুর ইউনিয়নের ওই সব মাঠে গত ৭-৮ বছর ধরে একটু ভারি বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ওই চার মাসে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কোনো ধরনের চাষাবাদ হয় না। চলতি বোরো মৌসুমে কয়েক দফা ভারি বৃষ্টিপাত থাকায় মাঠগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার কারণে মাঠগুলোতে থাকা অধিকাংশ খেতের ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয় কৃষকরা জানান, বক্তারপুর ইউনিয়নের ছয়-সাতটি ফসলি মাঠের জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনের দাবিতে গত এপ্রিল মাসে ওই সব মাঠে চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা একজোট হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সারওয়ার কামালকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান। পরে তারা ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে ফসলি জমির মাঠে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না মেলায় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কৃষকরা নিজেরাই ফসল রক্ষার লক্ষ্যে খাল খনন করতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার বক্তারপুর ইউনিয়নের কুমড়ার বিলে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন মানুষ ফসলি জমির মাটি কেটে খাল খনন করছেন।
বক্তারপুর ইউপির চেয়ারম্যান সারওয়ার কামাল বলেন, আমাদের এলাকায় ছয়-সাতটি ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। এলাকার লোকজন যখন এই সমস্যার সমাধানের জন্য আমার কাছে আসলেন তখন আমি নিরূপায় ছিলাম। কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে আমি নিজে ইউএনও ও ডিসি মহোদয়কে এই জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছি। উপজেলা উন্নয়ন সভাতেও একাধিকবার কথাটি তুলেছি কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস মেলেনি। পরে জমিগুলোতে চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের সঙ্গে একাধিকবার সভা করে স্বেচ্ছায় খাল খননের কাজ শুরু করা হয়। এলাকার কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়া খালটি পুনর্জীবন পেতে যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়