কাগজ ডেস্ক : রাশিয়া এবং তার জনগণ ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এ অভিযোগ করেছেন। মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ল্যাভরভ বলেন, পশ্চিমারা আমাদের বিরুদ্ধে, পুরো রাশিয়ান বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। রাশিয়াকে বাতিল করার সংস্কৃতি এবং আমাদের দেশের সঙ্গে সংযুক্ত সব কিছু এরই মধ্যেই অর্থহীনতার পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ সময় তিনি রাশিয়ান লেখক, সুরকার ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে নিষিদ্ধ করার জন্য পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করেন।
ল্যাভরভ আরো বলেন, এটা বলা নিশ্চিত যে এই পরিস্থিতি আমাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকবে। রুশ এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, ওয়াশিংটন এবং এর উপগ্রহগুলো আমাদের দেশকে ‘ধারণ’ করার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ, তিন গুণ, চার গুণ করছে। তিনি বলেন, তারা বিস্তৃত পরিসরের উপকরণ ব্যবহার করছে, একতরফা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী মিডিয়া স্পেসে পুরোপুরি মিথ্যা প্রচার করছে। ল্যাভরভ বলেন, অনেক পশ্চিমা দেশে দৈনিক রুশফোবিয়া একটি নজিরবিহীন প্রকৃতি হয়ে উঠেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এরপর আজ পর্যন্ত টানা ৯৩ দিনের মতো চলছে দেশ দুটির সংঘাত। এতে দুই পক্ষের বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে যুদ্ধ বন্ধে এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো পূর্ব ইউক্রেনে দেশ দুটির মধ্যে মধ্যে সংঘাত আরো বেড়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলরের নতুন আহ্বান : জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ডাভোসে তার ভাষণে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বায়নের নতুন রূপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তার সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে সমালোচনা বেড়ে চলেছে। শামুকের পিঠে লাগানো একটি বুলেট- বেশ কয়েক দিন ধরে এমন একটি ছবি টুইটারে দেখা যাচ্ছে। জার্মানি ইউক্রেনকে যে গতিতে অস্ত্র ও সামরিক সাহায্য দিচ্ছে, তার প্রতি ব্যঙ্গ হিসেবে ছবিটি শেয়ার করেছেন বার্লিনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি মেলনিক।
অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রæতি সত্ত্বেও বাস্তবে জার্মানির সামরিক সহায়তা যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যত পৌঁছাচ্ছেই না বলে ইউক্রেন বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ফলে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
বৃহস্পতিবার ডাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে শলৎস বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে কখনই জয়ী হবেন না। শলৎসের মতে, পুতিন এরই মধ্যেই তার সব কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ করতে বিফল হয়েছেন। যুদ্ধের সূচনার সময়ে রাশিয়া পুরো ইউক্রেন জবরদখল করার যে লক্ষ্য স্থির করেছিল, আজ তা দূর অস্ত। বরং ইউক্রেন ভবিষ্যতে ইউরোপের মধ্যে নিজস্ব স্থান আরো পাকাপোক্ত করেছে। রাশিয়ার যুদ্ধের নৃশংসতা ইউক্রেনকে আরো ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে বলে জার্মান চ্যান্সেলর মনে করেন। সেসঙ্গে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শুধু ন্যাটো নয়, পুতিন জি-সেভেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য ও শক্তিও আন্দাজ করতে পারেননি বলে শলৎস মনে করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।