নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের গণবিজ্ঞপ্তি

আগের সংবাদ

অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার : অভিযানে বন্ধ অনেক প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

‘মুজিব’ ট্রেলার নিয়ে বিতর্কের ঝড় : যা বললেন শোবিজের বিদগ্ধজন

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী একটি চলচ্চিত্র উৎসব। এ উৎসবে উন্মোচিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ এর ট্রেলার। ট্রেলার লঞ্চের পর থেকেই বাংলাদেশে বইছে সমালোচনার ঝড়। মাত্র ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ট্রেলারে নানা অসঙ্গতি চিহ্নিত করে সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। বাঙালির ভীষণ আবেগ-ভালোবাসার মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পর্দায় চরিত্রের মাধ্যমে দেখে হতাশ হয়েছেন সিনেমাসংশ্লিষ্ট থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকরা। কেউ কথা বলছেন ছবির কাস্টিং নিয়ে, কেই আবার আঙুল তুলেছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ চরিত্রের অভিনেতা আরিফিন শুভর গেটআপ-মেকআপ ও কণ্ঠস্বরের ওপর। কেউ সমালোচনা করছেন ভিএফএক্স প্রযুক্তির দুর্বল ব্যবহার ও সিনেমায় ব্যবহৃত সংলাপের। ইতিহাসের সঙ্গে ট্রেলারের দৃশ্য না মেলার মতো অনেক অসামঞ্জস্যতাও আছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ। ট্রেলারেই এ রকম ত্রæটি-বিচ্যুতি থাকলে মূল ছবিটিতে না জানি কী হবে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ! এই তীব্র সমালোচনার মুখে ‘মুজিব’র পরিচালক বলিউডের বর্ষীয়ান চিত্রনির্মাতা শ্যাম বেনেগাল গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘যারা সমালোচনা করছেন, তাদের উদ্দেশে আমার একটাই কথা বলার, আপনারা তো এখনো আসল ছবিটাই দেখেননি। তার আগে শুধু একটা ট্রেলার দেখে এত গালমন্দ করার কী যুক্তি থাকতে পারে আমার মাথায় ঢুকছে না। ছবিটা মুক্তি পাক, সবাই দেখুন- তারপর দর্শকদের রায় আমি নিশ্চয় মাথা পেতে নেব।’ তিনি আরো জানান, আসলে কানে পাঠানোর জন্য আমাদের একটা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে এটা তৈরি করতেই হয়েছিল। অথচ ওদিকে আমাদের মূল ছবির কাজই এখনো শেষ হয়নি, সম্পাদনার টেবিলে কাটাছেঁড়া চলছে। কিন্তু এর মধ্যেই কানের ডেডলাইন চলে এলো, ফলে ওই অসমাপ্ত কাজ থেকেই চটজলদি একটা ‘টিজার’ তৈরি করে আমাদের সেখানে পাঠাতে হলো। তাই যেটা কানে পাঠানো হয়েছে সেটাকে আমি ঠিক ‘মুজিব’র ‘ট্রেলার’ বলতেও রাজি নই- বরং সেটাকে ‘টিজার’ বলাই ভালো। যারা এখন ইউটিউবে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ওটা দেখছেন তাদের ‘টিজার’ হিসেবেই দেখতে অনুরোধ করব। কারণ এটা তো খুব পরিষ্কার যে আমাদের ছবিটার এখনো কাজ চলছে, আর কোনো অসম্পূর্ণ ছবির ট্রেলার বানানো সম্ভবই নয়। শ্যাম বেনেগাল আরো বলেন, ‘অবশ্যই কিছু দিনের মধ্যে আপনারা ছবির নতুন একটি ট্রেলার দেখতে পাবেন। আর শুধু ট্রেলারই উন্মুক্ত করা নয়, তারপর দেখবেন গোটা ছবিটাই মুক্তি পাবে।’
‘মুজিব’ সিনেমার ট্রেলার কেমন লেগেছে জানতে চাইলে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘বাঙালির কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটা আবেগের নাম। আর বিশ্বের কাছে বঞ্চিত, অসহায়, নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের এক মহান নেতা। এ রকম একটি ঐতিহাসিক চরিত্রকে সিনেমার ফ্রেমে আনা খুবই কঠিন কাজ। ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল যে সিনেমাটি তৈরি করছেন, তার ট্রেলার আমি দেখেছি। শুধু ট্রেলার দেখে তো সিনেমা নিয়ে মন্তব্য করা যায় না। ট্রেলারে হয়তো কিছুটা ধারণা পাওয়া গেছে। বরং আমি বলব সিনেমাটি দেখার পরই মন্তব্য করা সমীচীন হবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সিনেমা তৈরি হচ্ছে, এজন্য হয়তো সবার আগ্রহ কিংবা কৌতূহল এবং প্রত্যাশা একটু বেশিই কাজ করছে। ফলে এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। আমি ট্রেলার নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে সিনেমাটি দেখার জন্য ভীষণ রকমভাবে অপেক্ষা করে আছি।’
তবে হতাশার ছায়া পাওয়া গেল নির্মাতা মালেক আফসারী ও চিত্রনায়ক ওমর সানীর কণ্ঠে। নির্মাতা মালেক আফসারী তার মন্তব্যে বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত ‘মুজিব’ সিনেমার ট্রেলারটি দেখার পর আমার বারবার এই সিনেমার বাজেটের কথা মনে পড়ছে। আজকাল হুবহু চেহারা ধারণ করা যায় মেকআপ এবং গেটআপ দিয়ে। সে ব্যবস্থাও আছে। এখন তো পৃথিবী অনেক এগিয়েছে। আরিফিন শুভর মেকআপ আরো ভালো হতে পারত। ভিএফএক্সের ব্যবহারও নিম্নমানের লেগেছে। বায়োপিক বানানো কঠিন একটা কাজ। আমার মতে, এই কাজটি আরো সময় নিয়ে, গবেষণা করে বানানো উচিত ছিল।”
ওমর সানী বলেন, ‘শ্যাম বেনেগাল চলচ্চিত্রের একটা বিস্ময়। অনেক বড় একজন পরিচালক তিনি। তিনি এর আগে মাহাত্মা গান্ধী ও সত্যজিৎ রায়ের বায়োপিক বানিয়েছেন। খুব ভালো কাজ হয়েছে সেগুলো। এখনকার চলচ্চিত্রে অনেককিছুই সম্ভব। এখন চাইলে হুবহু কণ্ঠ মেলানো যায়, চেহারার গেটআপ দেয়া যায়। বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠটাও হলিউডের সহায়তা নিয়ে হুবহু করা যেত। তাদের সহায়তা নিলেই কিন্তু এই কাজগুলো সুন্দর করে করা যেত। তবে তাজউদ্দীন আহমেদের চরিত্রে রিয়াজ ভালো করেছে। শুনেছি ট্রেলারটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য তড়িঘড়ি করে বানানো হয়েছে। তাহলে এই তড়িঘড়ি করে বানানো ট্রেলারটি কানে দেখিয়ে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হলো না?’
অন্যদিকে নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার বললেন, ‘আমি নিজেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটা সিনেমা নির্মাণ করছি। যার জন্য আমার পক্ষে মন্তব্য করা কঠিন। এছাড়া দেড় মিনিটের ট্রেইলার দেখে মন্তব্য করতেও চাই না। পুরো সিনেমাটা দেখার পর কথা বললে মনে হয় যথার্থ হবে। তাই এজন্য আমি এখন কোনো মন্তব্য করব না।’
– মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়