নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের গণবিজ্ঞপ্তি

আগের সংবাদ

অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার : অভিযানে বন্ধ অনেক প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

মিডল অর্ডারে অনবদ্য লিটন

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সাদা পোশাকে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের আস্থার নাম লিটন দাস। নিয়মিত ব্যাট হাতে অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়েছেন তিনি। মুহূর্তের জন্যও নিজের ছন্দ থেকে ছিটকে যাননি। ফলাফলস্বরূপ ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে একাদশের ৬ ক্রিকেটার গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরে গেলেও নিজের ব্যাটে পেয়েছেন ১৪১ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের স্বপ্ন কিছুটা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনি। চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৩ রানেই টপঅর্ডারের চার ব্যাটার হারায় বাংলাদেশ। এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েও নামের পাশে আরেকটি অর্ধশতক লিখিয়েছেন। ইনিংসের ৩৮তম ওভারে প্রবীন জয়াবিক্রমার বলকে কাভারে ঠেলে দিয়ে এক রান নিয়েই ২ হাজার রানের ঘরে পদার্পণ করেছেন। অষ্টম বাংলাদেশি হিসেবে নিজের ৩৩তম ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। চট্টগ্রামে টেস্টে অসাধারণ পারফরম্যান্সের সুবাদে সাদা পোশাকের আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিংয়েও বেশ উন্নতি হয়েছে লিটনের। ৮৮ রানের এই ইনিংসের সুবাদে এগিয়েছেন তিন ধাপ। বর্তমানে ১৭তম স্থানে আছে টাইগারদের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ঢাকা টেস্টে এক সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরির সুবাদের আরো কয়েকধাপ এগিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
সর্বশেষ ১৫ ইনিংসে পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি ও তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। টাইগারদের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন। টানা চার ইনিংসের পর চট্টগ্রামে টেস্টে হাফসেঞ্চুরি দিয়ে ছন্দে ফিরেছিলেন। ধীর পায়ে শতকের পথে হাঁটলেও শেষ পর্যন্ত ৮৮ রানেই থেমেছে তার দূরন্ত ইনিংস। চট্টগ্রাম টেস্ট ড্রয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করতে নামতে পারেনি বাংলাদেশ। এরপর ঢাকা টেস্টেও নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। চট্টগ্রামে জ¦লে ওঠা তামিম, জয়রা যেখানে লঙ্কান বোলারদের নিকট সহজেই নতি স্বীকার করে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন সেখানে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গ দিয়ে লিটন হাঁকিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও বরাবরের ন্যায় ব্যর্থ ছিলেন তামিম-মুমিনুলরা। দ্বিতীয় ইনিংসেও মুশফিক-সাকিবকে সঙ্গ দিয়ে গড়েছেন শক্ত প্রতিরোধ। বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে হাঁকিয়েছেন নিজের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি। সেই সঙ্গে পার করেছেন ২ হাজার রানের মাইলফলক। বাংলাদেশ অনলাইন ক্রিকেট পোর্টাল ক্রিকেট-৯৭ এর পরিসংখ্যান অনুসারে গত ১২ মাসে যে কোনো দেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করেছেন লিটন দাস। তাদের পরিসংখ্যান অনুসারে গত এক বছরে লিটনের মোট সংগ্রহকৃত রান ছিল ৭১৫। যেখানে ঋষভ পন্ত ৫৬২ রান নিয়ে আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
গতকালের ইনিংসের আগের ১৪টি ইনিংসে ৫৮.৯২ গড়ে করেছেন ৮২৫ রান। তার সর্বশেষ ১৪ ইনিংসে করা রান যথাক্রমে ১৪১, ৮৮, ৪১, ২, ১১, ২৭, ৮৬, ৮, ১০২, ১১৪, ৫৯, ৬, ৪৫ ও ৯৫। গত কয়েক বছর ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে টাইগারদের হয়ে বেশ ধারাবাহিক লিটন দাস। মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে অধিকাংশ ইনিংসেই বেশ ছন্দে ছিলেন তিনি। এই সুবাদে টেস্ট ক্যারিয়ারেরও সেরা র‌্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছে গেছেন দিনাজপুরের এ কৃতী সন্তান। শেষ কয়েক ম্যাচের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের সুবাদে ৬৮৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে উঠে গেছেন লিটন।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে তার আগে মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল আছেন। টাইগারদের টেস্ট দলে লিটন দাসের অভিষেক হয়েছে ২০১৫ সালে। এ পর্যন্ত ৪৯ ম্যাচে ৩৪.৪ গড়ে ১৬৪৯ রানের মালিক তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার ১১টি অর্ধশতকের সঙ্গে ২টি শতক হাঁকানোর রেকর্ড আছে। ওয়ানডে ফরম্যাটেও এই ব্যাটারের অভিষেক হয়েছে ২০১৫ সালে। তবে টেস্টের মতো ওয়ানডেতে তিনি ধারাবাহিক নন। এ পর্যন্ত ৫০ ম্যাচে মাত্র ৩৩.১ গড়ে রান করেছেন ১৫৫৮। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মাত্র ৪টি অর্ধশতকের পাশাপাশি ৫টি শতকের রেকর্ড গড়েছেন এ উদ্বোধনী ব্যাটার। ওয়ানডে ও টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে লিটন দাসের উন্নতি হলেও দলের বাকি টাইগারদের অবনতি হয়েছে। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ ছিলেন তামিম-মাহমুদউল্লাহরা। মুশফিকুর রহিম দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো খেললেও প্রথম ও তৃতীয় ম্যাচেই পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন। বর্তমানে দুই ধাপ পিছিয়ে ১৩ নম্বরে নেমেছেন মুশফিকুর রহিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবারো জ¦লে উঠলেন লিটন দাস। চট্টগ্রামে ওয়ানডে সিরিজে শেষ দুই ম্যাচে ১৩৬ ও ৮৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার পর মিরপুরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৬০ করেছেন লিটন। সফরকারীদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেও বেশ ধারাবাহিক ছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে খেলেছেন অনবদ্য ৬০ রানের ইনিংস এবং দ্বিতীয় ম্যাচে আনলাকি থার্টিনে ধরা পড়েছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এরকম অসাধারণ ইনিংস খেলার সুবাদে সিরিজ শেষে কোনো একটি কৃতিত্ব লাভের অধিকারী ছিলেন তিনি। কিন্তু ঢাকা টেস্টে গতকাল পঞ্চমদিনে ১০ উইকেটে হারার ফলে সবই এখন আশায় গুড়েবালি। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় আবারো পয়েন্ট হারাল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠেও নিজেদের শক্তির যথাযথ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে তামিমরা। ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পা রাখার জন্য চট্টগ্রাম টেস্টেই উপকূলে চলে গিয়েছিলেন তামিম। এরপর মুশফিক তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারলেও ১৯ রানের আক্ষেপ নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে ঢাকায় এসেছেন তামিম। তবে ঢাকায় দুই ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও সেই ১৯ রানের আক্ষেপ নিয়েই শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষ করতে হয়েছে তামিমের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়