প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ট্রাক-লেগুনার সংঘর্ষে নিহত নাটোরের ৫ জনের বাড়িতে চলছে আহাজারি। গত বুধবার রাতে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সলঙ্গা থানার রামারচর এলাকায় এ দুর্ঘটনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নিহতদের স্বজনরা মরদেহগুলো নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে এলে এক হৃদয়-বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহতদের স্বজনদের শোকের মাতমে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। নিহতরা হলেন- নাটোরের বাগাতিপাড়ার ছোটপাকা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মুকুল হোসেন, আবুল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে মকবুল হোসেন ও ইজাল হকের ছেলে আব্দুল হালিম এবং গুরুদাসপুর উপজেলার জুমাইগর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে হায়দার আলী।
গত বুধবার রাত ২টার দিকে মহাসড়কের গোজা ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান,
বুধবার রাত ২টার দিকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে যাত্রী নিয়ে নাটোরের দিকে যাচ্ছিল লেগুনাটি। হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক দিয়ে গোজা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পাথর বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে এর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ জন নিহত ও ৬ জন আহত হন। আহতদের সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে আহতদের মধ্যে আরো একজন মারা যান। দুর্ঘটনা-কবলিত লেগুনা ও ট্রাক থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলায় নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এক হৃদয়-বিদারক দৃশ্য। শোকে মুহ্যমান পুরো গ্রাম। নিহত হালিমের মেয়ে চৈতী ও বৈশাখীসহ স্বজনরা জানান, অভাবী সংসারের লোক হওয়ায় তারা ধান কাটতে কালিয়াকৈর গিয়েছিল। সেখানে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এই দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। এতে তাদের পুরো পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। নিহত হালিমের মা শুধুই কাঁদছেন, কিছু বলতে পারছেন না। স্থানীয়রা জানান, সংসারের অভাবের কারণে তারা ঢাকায় কাজের জন্য গিয়েছিল। সেখানে কাজ শেষে বাড়িতে ফিরতে গাড়ি-ভাড়া বাঁচাতে গিয়ে লেগুনায় করে ফিরছিল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সবাই দিশাহারা। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিহতদের পরিবারের জন্য সাহায্য-সহযোগিতার দাবি জানান।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, সিরাজগঞ্জ পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মরদেহগুলো নিয়ে এসে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, তিনি নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। প্রত্যেক পরিবারের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা এবং তাদের ছেলেমেয়ে যারা পড়ালেখা করে তাদের বিনা খরচে লেখাপড়া করার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।