আইপিও আবেদন করতে বাড়াতে হবে বিনিয়োগ

আগের সংবাদ

‘ইভিএম’ রেখেই ভোটের ছক!

পরের সংবাদ

ওমানকে হারিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হকিতে বাংলাদেশ-ওমান অনেকটা সাপে নেউলে সম্পর্ক। দুই প্রতিপক্ষের যে কোনো সময় যে কোনো মাঠে কখনো বাংলাদেশ জিতে আবার কখনো ওমান জিতে। ইন্দোনেশিয়া অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ হকির গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে চিরচেনা ওমানের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিয়ে সেমিফাইনালের আশা এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে গোপীনাথানের শিষ্যরা। জাকার্তায় আসার আগে গত ২০ মে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এশিয়ান গেমস হকির বাছাইপর্বের ফাইনালে বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এএইচএফ কাপের প্রতিশোধ নিয়েছিল ওমান। মাত্র ৮ দিন পর সেই জাকার্তায় সর্বশেষ ফাইনালের প্রতিশোধের সুযোগ পেতেই ওমানকে হারিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গত তিন মাসে তিনবার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। এর মধ্যে জাকার্তায় দুইবার জিতেছে বাংলাদেশ ও ব্যাংককে একবার জিতেছে ওমান।
জাকার্তায় গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল মঙ্গলবার ম্যাচের ৬ মিনিটেই লিড পেয়ে যায় বাংলাদেশ। পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করে দলকে লিড উপহার দেন আশরাফুল ইসলাম। এরপর প্রথম কোয়ার্টারে বাংলাদেশও তাদের লিডকে দ্বিগুণ করতে পারেনি। অন্যদিকে ওমান সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে ১-০ গোলের লিড নিয়েই প্রথম কোয়ার্টার শেষ করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম কোয়ার্টারে সমতায় ফিরতে না পারলেও দ্বিতীয় কোয়ার্টারে প্রতিদ্ব›িদ্বতার বার্তা দেয় ওমান। কোয়ার্টর শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই ফিল্ড গোলে ওমানকে ম্যাচে ফেরান আল ফাজালে রাশেদ। ওমান সমতায় ফেরার পর একাধিবার চেষ্টার পরও বিরতির আগে আর কোনো গোল করতে পারেনি আশরাফুলরা। ১-১ স্কোরলাইন নিয়ে দুই দল বিরতিতে যায়।
তৃতীয় কোয়ার্টারে বাংলাদেশ আবারো লিড অর্জন করে। ম্যাচের ৪০ মিনিটে পেনাল্টি কর্ণার থেকে স্কোরবোর্ডকে ২-১ করেন রাকিবুল। তিন কোয়ার্টারে তিন গোল হওয়ার পর চতুর্থ কোয়ার্টার শেষ হয়েছে গোলশূন্য অবস্থায়। ম্যাচ শেষে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয়ী হয় বাংলাদেশ। ওমানের বিপক্ষে গোল স্কোরার আশরাফুল ইসলাম ও রাকিবুল হলেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক খোরশেদুর রহমান। এই জয়ের মাধ্যমে ৩ গোল নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচে আগামীকাল দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে মালয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে গোপীনাথানের শিষ্যরা। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে লড়াই করার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ১ ম্যাচে ১ জয়ের সুবাদে ৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। তাদের পিছনে সমান ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে দক্ষিণ কোরিয়া। আর ২ ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে এশিয়ান গেমস বাছাইপর্ব চ্যাম্পিয়ন ওমান।
এশিয়া কাপ হকির শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। রাসেল মাহমুদ জিমিরা হার দিয়ে শুরু করেছে আসরটি। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় গতকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে শুরুতে এগিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ৬-১ গোলে হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারে প্রথম গোলটা দেয় বাংলাদেশ। ৬ মিনিটে অধিনায়ক খোরশেদুর রহমান পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় জিমিরা। কিন্তু সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি বাংলাদেশের থেকে শক্তিকে এগিয়ে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া।
১৩ মিনিটে তায়িল হাওয়াং পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করে সমতায় ফেরান কোরিয়াকে। প্রথম কোয়ার্টার ১-১ সমতায় নিয়েই শেষ হয়। এরপর আর বাংলাদেশ পেরে ওঠেনি তাদের সঙ্গে। সময় পেরিয়েছে আর একের পর এক গোল হজম করেছে। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় কোরিয়া। জাং জংহুয়ান পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করে কোরিয়ার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। চার মিনিট পর হোয়াং নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন। ৩-১ গোলের স্কোরলাইন নিয়ে দুই দল বিরতিতে যায়। এরপর তৃতীয় কোয়ার্টারে দ্বিতীয় মিনিটে আবারো গোল করে কোরিয়া। লী নামংয়ের ফিল্ড গোলে বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। তৃতীয় কোয়ার্টারের শেষ মিনিটে ইয়ং জোন পেনাল্টি কর্ণার থেকে গোল করলে স্কোরলাইন ৫-১ দাঁড়ায়। চতুর্থ কোয়ার্টারে জাং জংহুয়ান পেনাল্টি কর্ণার থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে ষষ্ঠ গোল করেন। এতেই বড় ব্যবধানে হার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। পুরো ম্যাচে পাওয়া ১০টি পেনাল্টি কর্ণারের ৪টি থেকেই গোল আদায় করে দক্ষিণ কোরিয়া। বিপরীতে বাংলাদেশ মাত্র ২টি পেনাল্টি কর্ণার পেয়েছে।
শক্তির বিচারে কোরিয়া বাংলাদেশের থেকে বেশ এগিয়ে। বিশ্ব র?্যাঙ্কিংয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান যেখানে ১৬তম, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০তম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে এর আগে সবশেষ চার ম্যাচেই হারের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই গতকাল জয়ের আশা না থাকলেও হারের ব্যবধানটা শেষ পর্যন্ত বেশ বড়ই হয়েছে। এশিয়া কাপের সবশেষ আসর ২০১৭ সালে বসেছিল ঢাকায়। সেবার সেমিফাইনালে চীনের কাছে ৩-৩ ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে উঠেছিল বাংলাদেশ। জাপানের কাছে ৪-০ গোলে হেরে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত আসরটি শেষ করে ষষ্ঠস্থানে থেকেই। প্রতিপক্ষ শক্ত হলেও বড় ব্যবধানের হারে হতাশ হয়েছেন বাংলাদেশের কোচ ইমান গোপীনাথান কৃষ্ণমূর্তি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়