কিশোরের মৃত্যু : আজমেরী গেøারির দুই চালক কারাগারে

আগের সংবাদ

সিনহা হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত : আদালতে রায় ঘোষণা

পরের সংবাদ

মাছ চাষে টাকার খনি! সাবেক জেলার সোহেল রানার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : টাকার খনি যেন মাছ চাষেই! তবে তা বাস্তবে নয়, কাগজপত্রে। পলিশের বিতর্কিত ওসি প্রদীপ দাশের স্ত্রী চুমকি কারনও যেমন মাছের চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করার কথা জানিয়েছিলেন তেমনি চট্টগ্রাম কারাগারের সাবেক জেলার (বর্তমানে নিজেই কারান্তরীণ) মো. সোহেল রানা বিশ্বাসের স্ত্রী হোসনে আরা পপিও জানিয়েছেন তিনি মাছ চাষ করে কোটি টাকার ওপরে আয় করেছেন। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা তদন্তকালে এসব মাছ চাষের আয়কে নির্লজ্জ মিথ্যাচার বলেই জানিয়েছেন। চুমকি কারনের বিরুদ্ধেও যেমন জ্ঞাত আয় বহির্ভূত মামলা হয়েছে তেমনি সোহেল রানা বিশ্বাসের স্ত্রী হোসনে আরা পপির বিরুদ্ধেও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
গতকাল রবিবার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনামুল হক। মামলায় এক কোটি এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে এ অভিযোগ করা হয়। দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংযুক্ত উপপরিচালক আবু সাঈদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, হোসনে আরা পপি তার আয়কর নথিতে ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এক কোটি ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ টাকা মৎস্য খাত থেকে আয় করেছেন মর্মে উল্লেখ করেন। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে এসব মৎস্য খাতের কোনো হদিস পাননি। হোসনে আরা পপিও মৎস্য ব্যবসা সম্পর্কে কোনো রেকর্ডপত্র দুদককে দিতে পারেননি। এরপর হোসনে আরা বিশ্বাসকে আসামি করে মামলা করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, সোহেল রানা বিশ্বাসের স্ত্রীর নিজের নামে কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। সবই অস্থাবর সম্পদ। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে প্রায় কোটি টাকার এফডিআর করেন তিনি। এর আগে গত বছরের ২৯ নভেম্বর দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও আরেকটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪০ লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ অভিযোগ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেসের একটি বগি থেকে সাবেক জেলার সোহেল রানাকে একটি ব্যাগসহ আটক করে রেল পুলিশ। তার ওই ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার ৩টি এফডিআরের কাগজ, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার ৩টি ব্যাংক চেক, ৫টি চেক বই ও ১২ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। সে সময় তার বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন রেল পুলিশ।
ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা : এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) দুই কর্মকর্তা ও এক ব্যবসায়ীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আলাদা একটি মামলা করে দুদক। এ মামলার বাদী দুদক-সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনামুল হক। মামলায় আসামি করা হয়- ব্যবসায়ী হোসাইন হায়দার আলি, তার স্ত্রী মনিরা হোসাইন হায়দার, ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক আহম্মেদ সাইফুল হুদা, ব্যাংকের সাবেক রিলেশনশিপ অফিসার আনিসুর রহমান ও মনোয়ারা বেগম নামে অন্য একজনকে।
বাদী দুদক কর্মকর্তা এনামুল জানান, আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে ভুয়া তথ্যে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ৭ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৯ টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। যার কারণে ব্যাংকের সুদ বাবদ ১৫ কোটি এক লাখ ২৬ হাজার ৪৮৫ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়