কিশোরের মৃত্যু : আজমেরী গেøারির দুই চালক কারাগারে

আগের সংবাদ

সিনহা হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত : আদালতে রায় ঘোষণা

পরের সংবাদ

ভাসমানদের জনসন : ৪০ হলেই বুস্টার ১২ বছরেও টিকা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রাপ্তির বয়সসীমা আরো কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বুস্টার ডোজ (তৃতীয় টিকা) দেয়ার ন্যূনতম বয়সও কমানো হয়েছে। সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে ১২ বছরের বেশি বয়সিরা টিকা নিতে পারবেন। আর ৪০ বছর বয়স হলেই নিতে পারবেন বুস্টার ডোজ। পাশাপাশি দেশের ভাসমান নাগরিকদের এক ডোজের জনসন এন্ড জনসনের টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
গতকাল রবিবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন ১২ বছর বয়স থেকে শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছি। এখন এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। ১২ বছরের বেশি বয়সিরা অন্যদের মতো নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধন না করলেও জন্মনিবন্ধন কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলে টিকা নিতে পারবে। স্কুলে যারা আসতে পারছে না, মাদ্রাসাসহ যেখানেই যে আছে, ১২ বছরের বেশি সবাইকে টিকা দেয়া হবে।
বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন থেকে ৪০ বছরের বেশি বয়সি সবাইকে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে। রবিবার থেকেই তা শুরু হচ্ছে। ৫০ বছরে কমিয়ে আনার পরও দেখা গেছে, খুব বেশি মানুষকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা যাচ্ছে না। এ কারণে বয়সসীমা আরো কমিয়ে এনেছি। এর মাধ্যমে আরো বেশি মানুষকে টিকা দিতে পারব।
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দেশে টিকাদান শুরুর পর ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। জানুয়ারিতে সারাদেশে শুরু হয় সেই কার্যক্রম। আর গত ২৮ ডিসেম্বর সারাদেশে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই সময় ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি, যারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন এবং যারা বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন তাদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়। পরে ১৭ জানুয়ারি সেই বয়সসীমা কমিয়ে ৫০ বছর করা হয়। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ৬ মাস পরে বুস্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে গতকাল করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে যুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, যারা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর বুস্টার ডোজের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, যাদের কাছে এসএমএস এসেছে, তারা যদি করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে টিকা নিতে না পারেন তাহলে করোনা শনাক্ত হওয়ার ৬ সপ্তাহ পরে বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কোভ্যাক্সের আওতায় গত ২০ জানুয়ারি দেশে প্রথমবারের মতো জনসন এন্ড জনসনের ৩ লাখ ৩৬ হাজার ডোজ টিকা এসেছে। এক ডোজের এসব টিকা ভাসমান মানুষকে দেয়া হবে। তিনি বলেন, যারা ভাসমান লোক আছে, ঠিকানা সব সময় পাওয়া যায় না। তাদের আমরা এই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ এটা সিঙ্গেল ডোজ টিকা। একবার দিলে আর দ্বিতীয়বার তাকে আসতে হবে না।
জাহিদ মালেক জানান, এখন টিকাদান কর্মসূচিতে লোকজন কম আসছে। সে কারণে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন এসোসিয়েশনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের সদস্যদের মধ্যে যারা টিকা নেয়া বাকি আছে তাদের টিকা দেয়া হবে।
দেশবাসীকে সতর্ক করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব প্রতিরোধে সরকার দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই সুযোগে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক অভিভাবক ঘুরতে বের হচ্ছেন। এটা দুঃখজনক। আমাদের সব কর্মসূচি সফল হবে, যদি জনগণ সাহায্য করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। সরকার সচেতন করতে পারে, হাজার হাজার কোটি টাকার টিকা আমরা দিচ্ছি বিনা পয়সায়। কিন্তু জনগণ যদি বিধিনিষেধগুলো না মানে, তাহলে আমরা সংক্রমণের হার, মৃত্যুর হার কমাতে পারব না। ওমিক্রন ভাইরাসকে মৃদু বলে অবহেলা করলে চলবে না।
টিকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংগ্রহে এখন ৯ কোটি টিকা আছে। প্রায় ১৬ কোটি টিকা দিয়ে ফেলেছি। প্রায় ২৬ কোটি টিকা পেয়েছি। আরো ৫ কোটি টিকা আসবে। এই মুহূর্তে বাড়তি টিকার প্রয়োজন নেই। সিনোফার্মের সঙ্গে বেসরকারি একটি কোম্পানির চুক্তি আছে। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুত আছি। যখনই বলবো টিকা লাগবে, তখনই তারা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। তবে এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই বলে সেদিকে জোর দিচ্ছি না। আমরা সরকারিভাবে টিকা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়