কিশোরের মৃত্যু : আজমেরী গেøারির দুই চালক কারাগারে

আগের সংবাদ

সিনহা হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত : আদালতে রায় ঘোষণা

পরের সংবাদ

পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস : তিস্তাপাড়ে হাড় কাঁপানো শীত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : ঘন কুয়াশা, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা হিমেল হাওয়া ও কনকনে বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ। জেলায় আবারো জেঁকে বসেছে শীত। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন।
গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ও মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত শনিবার রেকর্ড করা হয় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় চারদিক। রাতভর ঝরে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। তীব্র শীতের কারণে সন্ধ্যার পর জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।
গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। তবে ১১টার পর সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল বাতাসের কারণে সূর্য প্রখরতা ছড়াতে পারেনি। এতে করে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে জীবিকার তাগিদে অনেকেই শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাটবাজারগুলো। এদিন সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ না থাকায় কনকনে শীতের তীব্রতা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোরে ঘন কুয়াশা থাকার কারণে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন সড়কে হেডলাইট জ¦ালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিকে শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার অভিরাম এলাকার রিকশাচালক রবিউল ইসলাম বলেন, তীব্র শীতের কারণে মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। এ কারণে আমরাও ইনকাম করতে পারছি না। কিন্তু কী করব শীতকে উপেক্ষা করে পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। খাবার নিয়ে না যেতে পারলে বাড়িতে চুলা জ¦লবে না।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, তেঁতুলিয়ায় গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছিল। গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরো কয়েক দিন এ ধরনের তাপমাত্রা বয়ে যেতে পারে।
তিস্তাপাড়ে হাড় কাঁপানো শীত : শীতের তীব্রতা হুহু করে বাড়ছে। সারা দিন বইছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস, সেই সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীত। টানা তিন দিনের মাঝারি

শৈত্যপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের জেলা লালমনিহাটের মানুষের জীবন।
প্রচণ্ড শীতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চলাফেরা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আবার শীতের প্রকোপে বেড়েছে হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া, শ্রাসকষ্টজনিত রোগ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এসব সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
গতকাল রবিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জেলার অধিকাংশ এলাকা। মাঝেমধ্যে সূর্য উঁকি দিলেও ঝলমলে রোদের দেখা মিলছে না। ফলে কনকনে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা, ধরলা তীরবর্তী এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ কয়েক দিন ধরে কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষের শীতের কাপড় না থাকায় খড়কুটো জ¦ালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। মহাসড়কগুলোতে হেডলাইট জ¦ালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান, তিস্তা নদীবেষ্টিত এ ইউনিয়নে শীতের তীব্রতা বেশি। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে এলাকায় প্রায় ৫০০ শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ উপজেলায় ৯০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন ৩০ জন। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়