অনেকেই মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়ান ও সেলফি তোলেন : ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় উপচে পড়া ভিড়

আগের সংবাদ

ঘরে ঘরে সর্দি কাশি জ্বর : নমুনা পরীক্ষায় ৮০ শতাংশেরই করোনা > ‘পজেটিভ’ হওয়ার ভয়ে নমুনা পরীক্ষায় অনাগ্রহ

পরের সংবাদ

৩১৩ কোটি টাকা খেলাপি : দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরএসআরএম এমডির

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আরএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে ৩১২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ খেলাপির দায়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাকসুদুর রহমানের পাসপোর্ট আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদেশের কপি পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ আদেশ জারি করেছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।
জানা যায়, খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ মাকসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে জনতা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা। এ শাখায় ৩১২ কোটি ৮২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ঋণ খেলাপি আরএসআরএম গ্রুপ। তবে ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় জামানত অত্যন্ত নগণ্য। মামলা দায়েরের সাড়ে তিন বছর পর বিষয়টি আদালতের নজরে এলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে সমন জারি করা হয়। সূত্র আরো জানায়, আদালত জানায় স্বীকৃত মতে বিবাদী (মাকসুদুর রহমান) একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি। কারণ ২০১৯ সালে মাত্র দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুযোগে ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন অনেক খেলাপি। কিন্তু সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও তা নেননি বিবাদীরা। মাকসুদুর রহমান মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি রয়েছে। এর আগে এ আদালতে বিচারাধীন অনেক মামলার আসামি অর্থ পাচার করে দেশত্যাগ করেছেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে মাকসুদুর রহমানকে দেশত্যাগের অনুমতি দিলে ব্যাংকের অর্থ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে মনে করছে আদালত।
অর্থঋণ আদালত জানায়, খেলাপি ঋণের ভারে দেশের ব্যাংকিং খাত ধুঁকছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ছাড় দিয়েও খেলাপি ঋণ আদায় পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। অত্যধিক মামলা জটের কারণে বিচারিক প্রক্রিয়ায় খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ হতাশাব্যঞ্জক। এ আদালতের বহু আসামি দেশত্যাগ করায় তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় শীর্ষস্থানীয় ঋণ খেলাপিদের বিদেশ গমনের অধিকার, বিচারিক সিদ্ধান্তের অধীনে থাকা ন্যায় সঙ্গত। তাই গত বছরের ১৭ নভেম্বর আসামির করা দরখাস্ত এবং আপত্তি নাকচ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ স্থিতি ছিল ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয় এক লাখ এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর মানে চলতি বছরের ৯ মাসের হিসাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা।
গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে জনতা ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুছ ছালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, জনতা ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি মাত্র কয়েকটি শিল্প গ্রুপের কাছে। এর মধ্যে ক্রিসেন্ট, এননটেক্স ও আরএসআরএম গ্রুপের খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতা দরকার। মাত্র ৪টি গ্রুপের ঋণ নিয়মিত হলে জনতা ব্যাংকের কোনো পিছুটান থাকবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়