প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : বাজারে বিভিন্ন ভোজ্য তেলের মূল্য বাড়ায় সরিষা ফুলে হলুদ বরণে সেজেছে কালাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ। যতদুর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙে মাখামাখি। শীতের সকালে শিশির ভেজা সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলে সোনাঝরা রোদে ঝিকমিক করছে। যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যে প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে প্রাণ। সরিষা ফুলের হলুদ রঙে চোখ ধাঁধালো বর্ণিল সমারোহ আর মৌমাছির গুনগুন শব্দে সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির দল। আবার কোনো কোনো সরিষা ক্ষেতে মৌচাষিরা বক্স স্থাপন পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। তারা সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করছেন। এতে তাদের দুধরনের আয় হচ্ছে। সরিষা ফুল পরিপূর্ণভাবে ফোটার পূর্বেই যদি দেখা যায় ক্ষেতে সরিষা গাছ খুব ঘন হয়েছে। তখন ঘন ক্ষেত থেকে সরিষা গাছ তুলে শাক হিসেবে বাজারে বিক্রি করে আয় করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরিষার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৫২০ হেক্টরের মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৪৭৫ হেক্টর জমিতে। স্থানীয় জাতের সরিষা টরি-৭ এর ফলন কম হওয়ায় বেশির ভাগ জমিতেই বারি-১৪, বারি-১৫ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা লাগানো হয়েছে। এ বছর অত্র উপজেলাতে মৌসুম শুরুর আগেই কৃষকদের তৈল বীজ চাষের আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা হিসেবে ৮০০ জন কৃষকের মধ্যে প্রত্যেককে ১ কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।
আহম্মেদাবাদ ইউপির ঝামুটপুর গ্রামের কৃষক এনামুল হক জানান, ১৯ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় খরচ হবে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ফলন হবে ৯-১০ মণ সরিষা। এবার দাম মনে হচ্ছে বেশি হবে গতবারের চেয়ে। আশা করছি, প্রতি মণ সরিষার ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা যাবে। প্রণোদনা হিসেবে ৯ বিঘার জন্য ৯ কেজি সরিষা বীজ, এওপি, ডিএপি ও ইউরিয়া মোট ৯ বস্তা সার পেয়েছি।
জিন্দারপুর ইউপির নানাহার গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বাবু, উদয়পুর ইউপির টাকাহুত গ্রামের লেইনুর ইসলাম, পৌরসভার সড়াইল মহল্লার কৃষক আলহাজ নাসির উদ্দিন জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় সবারই ফলন ভালো হয়েছে এবং সবাই উপজেলা কৃষি অফিসের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলীমা জাহান বলেন, তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৯০ টন অর্জিত হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন সময় পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।