লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

স্কোয়াশ চাষে সাড়া ফেলেছেন জবি ছাত্র কাউছার পাটোয়ারী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ মনির আহমদ, ফেনী : স্কোয়াশ দেখতে শসার মতো। কুমড়া জাতীয় শীতকালীন এই সবজি অতি পুষ্টিকর, সুস্বাদু, স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল ও লাভজনক সবজি। মধ্যপ্রাচ্যে এটি বেশ জনপ্রিয় সবজি। স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এটি ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
২০২০ সালে মার্চ থেকে করোনার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাড়িতে অবস্থান করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এমবিএর শিক্ষার্থী মো. শহিদুল্লাহ কাউছার পাটোয়ারি। অবসর সময়ে খেলাধুলার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় সবজি স্কোয়াশ চাষে আগ্রহ হয় তার। ২০২১ সালের শীতে বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে প্রথম করিগন স্কোয়াশ করে লাভবান হন এই শিক্ষার্থী। তাকে অনুসরণ করে অনেকে ঝুঁকছেন স্কোয়াশ চাষে। এবারো ওই শিক্ষার্থীর ক্ষেতে বিষমুক্ত স্কোয়াশের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে স্কোয়াশ সবজির দাম ভালো থাকায় তিনি দ্বিতীয় বছরে লাভবান হয়েছেন।
জানা যায়, সোনাগাজী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের উত্তর চর ছান্দিয়া গ্রামে নিজেদের ফসলি প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে গত বছর ৫০ হাজার টাকা আয় করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী মো. শহিদুল্লাহ কাউসার। ব্যবসায় লাভ দেখে এই বছরও তিনি তার একই জমিতে কোরিয়ান হাইব্রিড করিগন (সবুজ) ও চায়না গোল্ডেন (হলুদ) জাতের স্কোয়াশ সবজি চাষ করেছেন।
এ ব্যাপারে শহিদুল্লাহ কাউছার পাটোয়ারী বলেন, স্কোয়াশ আবাদের সুবিধা হচ্ছে অল্প সময়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে ফসল উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ স্কোয়াশ লাগানো সম্ভব। পূর্ণবয়স্ক একটি স্কোয়াশ গাছ অল্প জায়গা দখল করে। স্কোয়াশের একেকটি গাছের গোড়ায় ৮ থেকে ১২টি পর্যন্ত ফল বের হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয় এটি।
তিনি বলেন, বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। তিনি গত বছর ২০ হাজার টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এই বছর মাত্র ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। এখন স্কোয়াশ বিক্রি শুরু হয়েছে। এই বছর আরো বেশি লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেদায়েত উল্যাহ পাটোয়ারী বলেন, আমাদের এ অঞ্চল অত্যন্ত উর্বর। সব ফসলই এখানে ভালো ফলন হয়। স্কোয়াশ লাভজনক হওয়ায় আমরা কাউছারের পাশাপাশি অন্য কৃষকদেরও স্কোয়াশ চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, কাউছারের স্কোয়াশ চাষের ফলে ফেনী জেলার কৃষিতে যোগ হলো আরেকটি নতুন সবজি। শীতকালীন এই সবজি আবাদ করে মাত্র দুই মাসেই প্রচুর আয় করা যায়। স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। উচ্চ ফলনশীল জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের তরকারিতে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা কৃষি অফিসার আরো জানান, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। এবার সোনাগাজীতে উন্নত চায়না জাতের হলুদ স্কোয়াশও চাষ হচ্ছে। আগামীতে এই উপজেলায় আমরা ব্যাপকভাবে স্কোয়াশ চাষ বৃদ্ধিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করব।
ফেনী জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ তারিক মাহমুদুল ইসলাম জানান, সব প্রকার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি দপ্তর থেকে ওষুধ, সার সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। স্কোয়াশ অপ্রচলিত হলেও খুবই লাভজনক। প্রতি গাছ থেকে গড়ে ১০টি ফলন হতে পারে। উৎপাদন ও বাজারে চাহিদা বাড়ানোর জন্য কাজ করবে বলে জানান কৃষি বিভাগের এই উপপরিচালক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়